পর্দার বাইরে শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়-এর মুখোমুখি হলেন পথিক পণ্ডিত
অভিনয়ে আসার আগে পাড়ায় চায়ের দোকান চালাতেন?
হ্যা। ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর আমাদের কোনও ইনকাম ছিল না। পাড়ার দাদারাই বললেন, ‘শান্তি, চা-পান-বিড়ির গুমটিটা চালা।’ তার পর একটা কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে ব্যবসাটা ছাড়ি।

তা হলে খুব স্ট্রাগল করতে হয়েছে?
শান্তিলাল: হ্যা।ঁ তা একটু করতে হয়েছে বটে! নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য তো সবাইকেই কম বেশি স্ট্রাগল করতেই হয়।

এখান থেকে অভিনয়ে এলেন কী ভাবে?
শান্তিলাল: এককথায় বললে হঠাৎ করেই। আমাদের পাড়ায় নাটকের একটা কালচার ছিল। পাড়ার ছেলেরা থিয়েটার করত। সেটা আমিও করেছি। এই করতে করতেই আমার এক বন্ধু নাট্য অ্যাকাডেমির প্রথম ওয়ার্কশপে নিয়ে গেল ইন্টারভিউয়ের জন্য গিরিশ মঞ্চে। থিয়েটার সম্পর্কে কিছুই জানতাম না, তবে থিয়েটারটা নিয়মিত দেখার চেষ্টা করতাম। সেখানকার ইন্টারভিউতে কোনওক্রমে উতরেও গেলাম। ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন বিভাস চক্রবর্তী, অরুণ মুখোপাধ্যায়, কুমার রায় প্রমুখ বাঘা বাঘা নাট্যব্যক্তিত্ব। তখনও ভাবিনি অভিনয়টা করব। ওই ওয়ার্কশপে চন্দন সেনের সঙ্গে আলাপ হল, তার পর চন্দন আমাকে রমাপ্রসাদ বণিকের কাছে নিয়ে যায়।

পুরোদমে অভিনয়ে এলেন কবে?
শান্তিলাল: ১৯৯৬ সালে। ভাবলাম এটাকে যদি আমি প্রফেশন করি, তা হলে কেমন হয়!
ছোটবেলাটা কোথায়, কেমন কেটেছে? বাড়িতে কে কে আছেন? পড়াশোনা?
শান্তিলাল: সরশুনায়। খুবই ভাল কেটেছে। প্রচুর গাছপালা, প্রচুর বাগান, পুকুর, ধান খেত অনেকটা গ্রামে বড় হওয়ার মতোই পরিবেশ পেয়েছি। তখন রাস্তাঘাটে এত গাড়িঘোড়া ছিল না, ফলে এখনকার বাচ্চাদের রাস্তায় বেরোতে দিলে অভিভাবকদের যে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়, আমাদের সময় ছিল না। এই মুহূর্তে বাড়িতে আছেন, মা, আমার বউ, আর বাচ্চা। সরশুনা হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক। উচ্চ মাধ্যমিক করি নিউ আলিপুর মাল্টিপারপাস থেকে। আশুতোষ থেকে গ্র্যাজুয়েশন।

‘কহানি’তে আপনি একটা ছোট্ট রোলে অভিনয় করেছেন। তা ওই ছবির পরিচালক সুজয় ঘোষের সঙ্গে আলাপ কী ভাবে?
শান্তিলাল: ‘কহানি’র কাস্টিং ডিরেক্টর রশ্মি বন্দোপাধ্যায় হলেন আমার মামাতো বোন। ও এক দিন আমাকে ফোন করে বলল, ‘কলকাতায় একটা হিন্দি ছবি শুটিং করা হবে, তোকে কাস্টিং-এ হেল্প করতে হবে।’ কাজ শুরু হল। ওদেরকে একটুআধটু সাহায্য করি। আমি যে পার্টটা করেছি, সেটা ওরা এখানে অনেককেই বলেছিল, কিন্তু ওদের পছন্দ হয়নি। আমায় লাস্ট মোমেন্টে বলা হল। প্রথমে আমি রাজি হইনি। বললাম, না, এত ছোট রোল করব না। তত দিনে সুজয় ঘোষের ‘শান্তিদা’ হয়ে গিয়েছি। ফলে ওঁর কথাটা আর ফেলতে পারিনি।

আপনার ছেলে ঋতব্রতও তো অভিনয় করেছে?
শান্তিলাল: হ্যা।ঁ রশ্মিরই পছন্দ হয়ে গেল ভাইপোকে আর কী। আমার এ সব আবার একদমই পছন্দ নয়। এত ছোট, এ বছর ক্লাস সিক্স থেকে সেভেন হল। কারণ, আমি তো দেখি, সিরিয়ালে বাচ্চাগুলো কী ভাবে কষ্ট পায়। ওর পুজোর ছুটিটার মধ্যেই আবার শুটিংটা পড়ে গিয়েছিল, ফলে আর না করতে পারিনি।

রবি ওঝার ‘এক আকাশের নীচে’ টিভি সিরিয়ালই তা হলে আপনাকে লাইম লাইটে নিয়ে এসেছে?
শান্তিলাল: হ্যাঁ। অসম্ভব পপুলারিটি পেয়েছিলাম। আমি শৈবালের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। এ ছাড়াও দেবাংশু সেনগুপ্তর ‘বহ্নিশিখা’তে পুলিশ ইন্সপেক্টর মিস্টার দাসের রোলও সাড়া জাগিয়েছিল।
আপনি এত দিন ধরে অভিনয় করে চলেছেন, তার সবটাই তো প্রায় ক্যারেক্টার রোলে? হিরো না হওয়ার জন্য আক্ষেপ হয় না?
শান্তিলাল: সত্যি কথা বলতে কী, না, আক্ষেপ হয় না। তার কারণ, চরিত্রাভিনেতা হিসেবে আমার কাজটা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং বলে মনে হয়, অনেক বেশি ভেরিয়েশন আছে বলে মনে করি। কোথাও ভিলেন, কোথাও সিরিয়াস চরিত্র, কোথাও কমেডি সব মিলিয়ে ক্যারেক্টার আর্টিস্টের অভিনয়ের স্কোপ অনেক বেশি।

আপনার অভিনয়ের নেগেটিভ দিকগুলো কী কী?
শান্তিলাল: আমার গলাটা নীচের দিকে যতটা স্বচ্ছন্দ, উপরের দিকে ততটা নয়। এটা একটা সমস্যা বলতে পারেন। তবে কাটিয়ে ওঠার জন্য চেষ্টা জারি আছে।

সিরিয়াল না ছবি কোনটায় বেশি স্বচ্ছন্দ?
শান্তিলাল: দুটোতেই। সিরিয়ালে মুখস্থ করে পয়সা কামাই, আর ছবিতে বসে থাকার জন্য... (হাসি)

প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন কোনও দিন?
শান্তিলাল: কাউকে প্রোপোজই করিনি তো প্রত্যাখ্যাত হব কী ভাবে?

নতুন কী কী কাজ করছেন?
শান্তিলাল: সুমন মুখোপাধ্যায়ের ‘কাঙাল মালসাট’-এর শুটিং সবে শেষ হল। রাজ চক্রবর্তীর ‘কানামাছি’ করছি। হরনাথ চক্রবর্তীর শীর্ষেন্দুর গল্প অবলম্বনে ‘ছায়াময়’ শুরু হবে। রানা সেনের ‘কফি হাউস’ও শুরু হবে।

প্রিয় অভিনেতা?
শান্তিলাল: মার্লন ব্র্যান্ডো। টম হ্যাঙ্কস। আর বাংলায় তুলসী চক্রবর্তী, জহর রায়, উত্তমকুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

কেমন মহিলাদের পছন্দ করেন?
শান্তিলাল: ভেতরটা যেমন, বাইরেটাও একই রকম যাদের।
মুখ খোলার, গল্প করার, গলা ফাটানোর নতুন ঠিকানা চারিদিক থেকে কানে আসা
নানা কথা নিয়ে আমরা শুরু করে দিলাম। এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভার আপনাদের
• রেলের ভাড়া বাড়ানোর জন্য মন্ত্রিত্ব হারাতে হয়েছে দীনেশ ত্রিবেদীকে। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। তিনি চান না, অটো ভাড়া বাড়িয়ে তাঁর মন্ত্রিত্ব ‘ফটো’ হয়ে যাক!
দেবব্রত ঘোষ।

• পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী নরেন দে লোহাচুরের মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন। আম জনতার প্রশ্ন: মন্ত্রী চানাচুর অথবা মোতিচুর (লাড্ডু) ফেলে লোহাচুরের দিকে ঝুঁকলেন কেন? পূর্বতন খাদ্যমন্ত্রী বড়ই বেরসিক মনে হচ্ছে!
রুমা চক্রবর্তী। টালিগঞ্জ

• নতুন সরকারের আমলে বড্ড ‘ব্যাঙ্ক’-এর উপদ্রব হয়েছে! ল্যান্ড ব্যাঙ্ক, এমনপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক, হেল্থ ব্যাঙ্ক। এরই মধ্যে ‘মনীষী ব্যাঙ্ক’ তো বেশ হিট! এ সব দেখেশুনে দিদির দলটাকে ‘ব্যাঙ্ক পার্টি’ বলে মনে হচ্ছে! কলকাতা শিগ্গির ‘ব্যাঙ্কক’ হল বলে!
বাপী ঘোষাল। ব্যান্ডেল

• বামেদের ডাকা বাংলা বন্ধের দিন সরকারি স্কুলে শিক্ষকদের গরহাজিরার প্রশ্নে মন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, তিনি আর যা-ই করুন, কোনও দিন ‘ব্যোমকেশ বকসী’ হবেন না! তবে কি কোনও দিন নতুন সিনেমার নাম হবে ‘বন্ধে ব্রাত্য ব্যোমকেশ’?
শোভনলাল বকসী। লেক গার্ডেন্স

• এত দিন বাঙালির কাছে ‘মুক্ত চিন্তা’র সাধনপীঠ হিসেবে টয়লেটের যে খ্যাতি ছিল; এ বার সেই স্থান কী ভাবে যে সরকারি গ্রন্থাগার দখল করবে, ভেবে চিন্তা মুক্ত হতে পারছি না!
সুশান্ত ঘোষাল।

• কলকাতা এয়ারপোর্টে কালবৈশাখী ‘বিমান’-এর মুখ ঘুরিয়ে দিলেও পলিটব্যুরোতে ‘বিমান’-এর মুখ কিন্তু সোজাই থাকল, রাজ্যে পরিবর্তনের টর্নেডো বয়ে যাওয়ার পরও!
উজ্জ্বল গুপ্ত। তেঘড়িয়া

• আকাশের যা অবস্থা, পয়লা বৈশাখটা আয়লা বৈশাখ না হয়!
স্যান্ডি। বালুরঘাট

• ব্যাটের লোগো নিয়ে বিতর্কের জেরে সৌরভের গান: কুছ তো লোগো কহেঙ্গে, লোগো কা কাম হ্যায় কহেনা!
বোধিসত্ত্ব। বড়িশা

• ক: হ্যাঁ রে ‘লাভ’ ব্যাপারটা কে আবিষ্কার করেছিল?
খ: নিশ্চয়ই কোনও চিনের কোম্পানি!
ক: কী ভাবে?
খ: দেখছিস না প্রেমের কোনও গ্যারান্টিও নেই, ওয়ারেন্টিও নেই!

দেব বিশ্বাস।

স্বপনকুমার দে
১৯৮৫ সাল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে গবেষণার কাজ করছি। সেই সূত্রে তাঁর সঙ্গে পরিচয়। সে সময়ের অসাধারণ জনপ্রিয় সাহিত্যিক। তাঁর বই-ই বোধ করি সবচেয়ে বেশি অনূদিত। একটি চিঠিতে তিনি আমন্ত্রণ করলেন তাঁর বাড়িতে। মিষ্টি খাওয়ালেন। আর এক দিন তাঁর বাড়িতে গিয়েছি। সাক্ষাৎকার নিচ্ছি। জিজ্ঞেস করলাম, ‘সাহেব বিবি গোলাম’ ফিল্মটা আপনার কেমন লেগেছিল? শুনে তিনি বললেন, ‘তোমাকে কী বলব! চার জন প্রডিউসার আমার পিছনে ঘুরছিল। আর আমি ধরা দিচ্ছিলাম না। আসলে ব্যাপারটা হল কোনও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে প্রযোজক হয়তো দেখেছেন ‘সাহেব বিবি গোলাম’ অনেকেই উপহার দিচ্ছে; তখন ভেবেছেন, এ বইটা দেখছি খুবই জনপ্রিয়, ফিল্ম করলে প্রচুর টাকা হবে। ওরা টাকা দেখে; সাহিত্য তো বোঝে না।’
তা ছাড়া তিনি চেয়েছিলেন, আগে লোকে বইটা পড়ুক। ফিল্ম হলে তো বইটা পড়বে না। এ প্রসঙ্গে প্রযোজক গুরু দত্তের অবশ্য খুব প্রশংসা করলেন। গুরু দত্ত তাঁকে বোম্বাই (অধুনা মুম্বই) নিয়ে গিয়েছিলেন ‘সাহেব বিবি গোলাম’-এর হিন্দিতে চিত্রনাট্য করবার জন্যে।
১৯৮৬ সালে চাকরির সূত্রে কলকাতার বাইরে চলে যাওয়ায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ক্রমে কমে আসতে থাকে। তবু মাঝে মধ্যে চিঠি লিখতাম। উত্তরও পেতাম। ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে তো তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।
এত বছর পরে তাঁর কথা লিখতে বসে সব কেমন স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। কিন্তু স্বপ্ন তো নয়, কত দুপুর, কত সন্ধে তাঁর সান্নিধ্যে কেটেছে আমার। কোনও সমস্যার কথা বললে বিমল মিত্র বলতেন, ‘সমুদ্রের তরঙ্গ থামবে আর তুমি স্নান করবে, তা তো হতে পারে না। ওই তরঙ্গের মাঝেই তোমাকে স্নান করতে হবে।’ তাঁর এ কথা আজও ভুলিনি। এ বছর তাঁর জন্ম শতবর্ষ।
আবার সে এসেছে ফিরিয়া। প্রথম আক্রমণে আই পি
এল-এর ম্যাচ একটি ‘বিলান’ ছাঁট দিয়া। তার
পরে প্রতিদিন ঘড়ি ধরে ঝড়, গাছ মড়মড়,
রানওয়েতে বিমানের মুণ্ডু ঘরিয়ে দেওয়া চড়!
যেন সন্ত্রাসবাদী ষড়! ঘুঁটে মালা গলে
তোর রাখি, কালবৈশাখী
সিপিআইএম পার্টি কংগ্রেস করছে,
এ বার কংগ্রেস কী করবে?

রবীন্দ্রনাথ সরকার, সোনারপুর
ক্ষমা চাইছি
আজ থেকে প্রায় ছ’দশক আগে যে ঘটনা ঘটেছিল চেষ্টা করেও ভুলতে পারিনি। তখন আমরা মালদায় থাকতাম। আমি সম্ভবত ক্লাস থ্রিতে পড়ি। আমাদের পাড়ায় নামকরা মুদিখানা ও স্টেশনারি দোকান ছিল। আমাদের সব কিছু কেনা হত মাসের প্রথমে, বাবা যেতেন। মাসের শেষে কিছু কম পড়লে মা আমাকে পাঠাতেন। দোলযাত্রার কয়েক দিন আগে সামান্য কিছু কিনতে মা আমাকে পাঠিয়ে ছিলেন। দোকানি ভুল করে ২ টাকা বেশি ফেরত দিয়েছিল। ওই দু’টাকায় একটা ছোট পিতলের পিচকারি কিনেছিলাম। মাকে বলেছিলাম টাকাটা পথে কুড়িয়ে পেয়েছি। সেই পিচকিরিটা সম্ভবত মালদার বাড়িতে খুঁজলে আজও পাওয়া যাবে। দীর্ঘ ছ’যুগ পেরিয়ে এসেও সেই অপরাধ বোধ আমাকে দংশায়। সেই দোকান বহু বছর হল বন্ধ হয়ে গিয়েছে, ওদের টাকাটা ফেরত দিতে পারিনি। সেই ঋণের বোঝা নিয়ে আমৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। নিজেকে তাই ক্ষমা করতে পারিনি।
শক্তিনাথ মৈত্র
কলকাতা-৩৯

ই মেল-এ অথবা ডাকে, চিঠি পাঠান।
ই-মেল: chirkut.rabi@abp.in
চিঠি: চিরকুট, রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.