ফের ময়লা ফেলা নিয়ে সঙ্কটে জলপাইগুড়ি পুরসভা। চলতি বছরের শুরু থেকেই স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় শহরের অদুরে পাঙ্গা এলাকার পুরসভার স্থায়ী ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ময়লা ফেলতে সমস্যায় পড়ে পুরসভা। ডাম্পিং গ্রাউন্ড নিয়ে উদ্ভূত সমস্যা কাটাতে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন, পুরসভা, সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠক হয়। জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্রের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পাঙ্গার ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আর ময়লা ফেলা হবে না। আগামী ৬ মাসের মধ্যে নতুন ডাম্পিং গ্রাউন্ড খুঁজে বের করা হবে। এই মধ্যবর্তী সময়ে পুরসভা কয়েকটি বিকল্প এলাকায় শহরের বর্জ্য ফেলবে। এমনই একটি বিকল্প এলাকা নিয়েই এবার সমস্যায় পড়েছে পুরসভা। শহর লাগোয়া ৩১ ডি জাতীয় সড়কের ধারে গোশালা এলাকায় ময়লা ফেলতে শুরু করেছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। গোশালা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার থেকে সেখানেও ময়লা ফেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গোশালা এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রুকরুকা নদীর ধারে গত দু’মাস ধরে পুরসভা প্রতিদিন ময়লা ফেলছে। স্তূপীকৃত বর্জ্য নদীতে মিশে নদীর একপাশে জলপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বর্জ্য থেকে বের হওয়া দুর্গন্ধে এলাকার বাসিন্দাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়েছে বলে অভিযোগ। জাতীয় সড়কের একপাশেই ঐতিহ্যবাহী দেবী চৌধুরানীর কালী মন্দির। বর্জ্যের দুর্গন্ধে মন্দির প্রাঙ্গনেও দর্শনার্থী এবং ভক্তেরা থাকতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। মশা, মাছি-সহ অনান্য বিষাক্ত পোকা মন্দিরের সর্বত্র উড়ে বেড়াচ্ছে বলে মন্দির কমিটি সুত্রেও অভিযোগ করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “ডাম্পিং গ্রাউন্ড নিয়ে সমস্যা ক্রমেই জটিল হচ্ছে। গোশালা এলাকার একটি সংস্থা থেকেই তাদের নিচু জমিতে ময়লা ফেলে জমিটি উঁচু করার আর্জি জানিয়েছিল। সেই মতো পুরসভা ময়লা ফেলতে শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দিলে তা আর সম্ভব নয়। পুরসভা তো ময়লা ফেলার জন্য আর মারামরি করবে না। শহরে প্রতিদিন যে বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলি কোথায় ফেলা হবে এবার প্রশাসনই তা বলে দিক।” জলপাইগুড়ি সদর মহকুমা শাসক সাগর চক্রবর্ত্তী বলেন, “ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে পুরসভার পক্ষ থেকে আমায় সরাসরি কিছু জানানো হয়নি। খোঁজ নিচ্ছি।”
|
জঞ্জাল ঢেকে দিয়েছে নদীর চর
নারায়ণ দে • কলকাতা |
এ অবস্থায় নদী রক্ষার দাবিতে আন্দোলনে নামে পরিবেশপ্রেমীরা। দেরিতে হলেও সেই দাবি মেনে কালজানির গতিপথ ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী হল সেচ দফতর ও আলিপুরদুয়ার পুরসভা। শুক্রবার থেকে নদীর সেতুর তলায় জমে থাকা জঞ্জাল সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দু’মিটার উঁচু স্তূপ সরাতে সময় লাগবে এক সপ্তাহ। সেচ দফতরের আলিপুরদুয়ারের বাস্তুকার সুনীলকুমার বর্মন বলেন, “শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কালজানির সেতুটি ১৩০ মিটার লম্বা। সেতুর তলায় নদীর বেশ খানিকটা অংশ জঞ্জালে ভরে গিয়েছে। বর্ষাকালে নদীর জল স্বাভাবিক ভাবে বার হতে পারে না। তাই পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করে জঞ্জাল সরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।” আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নদীর জল যেন স্বাভাবিকভাবে বয়ে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশা করছি এ বার বর্ষায় সমস্যা হবে না।” আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত বলেন, “কালজানি নদী চরে শহরের জঞ্জাল জমা করায় দূষণের সমস্যা বাড়ছিল। দেরিতে পুরসভা ও সেচ দফতর নদী রক্ষায় এগিয়ে আসায় ভাল হল।” |