|
|
|
|
অল্প বৃষ্টিতেই জল থই থই শহর, কাঠগড়ায় পলিব্যাগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর |
অল্প বৃষ্টিতেই ডুবছে শহর। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে এক পশলা বৃষ্টিতেই হাঁটু জল। কৃষ্ণনগর জুড়ে থই থই জলে নাকাল হতে হচ্ছে শহরবাসীকে। পুরসভার সাফাই, বৃষ্টি হলেই নর্দমা বুজে যাচ্ছে প্লাস্টিকে।
অথচ বছর খানেক আগেই শহরে ঢাল-ঢোল পিটিয়ে প্লাস্টিক ব্যবহারের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল পুরসভা। বিভিন্ন বাজারে অভিযানও চালানো হয়েছিল। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল ক্যারিব্যাগ, প্লাস্টিকের জিনিসপত্রও। অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা টাকা জরিমানাও আদায় করা হয়েছিল। কিন্তু এখানেই থেমে গিয়েছে প্লাস্টিক বিরোধী অভিযান। শহরকে প্লাস্টিক মুক্ত করা তো দূরের কথা, বর্ষার আগে সেই প্লাস্টিকের দাপটেই বেহাল শহরের নিকাশি ব্যবস্থা। বর্ষার নামার আগেই শহরের এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ থেকে পুরকর্তারাও। |
|
বন্ধ নজরদারি, প্লাস্টিকের রমরমা |
পুরসভার প্লাস্টিক বিরোধী অভিযানে প্রাথমিক ভাবে প্লাস্টিকের ব্যবহার কিছুটা কমলেও নজরদারির অভাবে ফের শুরু হয়েছে প্লাস্টিকের রমরমা। মাছের বাজার থেকে বড় বড় কাপড়ের দোকানে অবাধে মিলছে প্লাস্টিক। কৃষ্ণনগর হাইস্কুলের শিক্ষক পার্থ স্বর্ণকার বলেন, “শহর জুড়ে প্লাস্টিকের রমরমা। নর্দমা বুজে যাচ্ছে প্লাস্টিকে। পুরসভা, প্রশাসন এ ব্যাপারে উদাসীন। পুরসভার তরফে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে দিন কয়েকের মধ্যেই উৎসাহে ভাঁটা পড়েছে। কড়া নজরদারি থাকলেই শহরে প্লাস্টিক বন্ধ করা সম্ভব হতো।”
সমস্যার কথা স্বীকার করে কৃষ্ণনগর পুরসভার পুরপ্রধান কংগ্রেসের অসীম সাহা বলেন, “প্লাস্টিকের অবাধ ব্যবহারে মুখ থুবরে পড়েছে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা। সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের বেশ কিছু এলাকায় হাঁটু-জল হচ্ছে।” তাহলে প্লাস্টিক বন্ধে পুরসভা উদ্যোগ করছে না কেন? অসীমবাবু বলেন, “আমরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের কাছ থেকে সে ভাবে সাহায্য মেলেনি। শেষ পর্যন্ত প্লাস্টিক বিরোধী অভিযান মাঝ পথেই থেমে যায়। পুরকর্মীরা বিভিন্ন বাজারে প্লাস্টিক বিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে একাধিকবার আক্রান্ত হয়েছেন। তার পর থেকেই পুলিশ সঙ্গে না থাকায় কর্মীরা কোথাও অভিযান চালাতে যেতে রাজি হননি।” আর পাত্র বাজার সমিতির সম্পাদক গোপাল বিশ্বাস বলেন, “আমরাও চাই প্লাস্টিকে ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হোক। কিন্তু যারা এসে প্লস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে বলছেন, জিনিসপত্র কিনতে এসে তারাই আবার দোকানদারের কাছে প্লাস্টিকের খোঁজ করছেন। এ ভাবে তো প্লস্টিকের ব্যবহার ঠেকানো সম্ভব নয়। আমরা চাই, যারা প্লাস্টিক চাইছেন আর যারা প্লাস্টিক দিচ্ছেন উভয় পক্ষকেই জরিমানা করা হোক।
প্লস্টিক সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে কৃষ্ণনগর সদর মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, “আগে কী হয়েছে জানি না। আমরা চাই শহরে প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ হোক। সে জন্য পুরসভাকে সব রকম ভাবে সাহায্য করতে আমরা রাজি আছি। যে দিন পুরসভা প্লাস্টিক বিরোধী অভিযান চালাতে চাইলে আমরা পুলিশের ব্যবস্থাও করে দেব।” পুরপ্রধান অসীমবাবু অবশ্য বলেন, “পুলিশের ব্যবস্থা করা হলে আমরা আবার অভিযান শুরু করতে পারি।” পুরসভা-প্রশাসনের উদ্যোগে অভিযান কবে ফের শুরু হবে জানেন না কেউ। তবে আসন্ন বর্ষায় শহরের নিকাশি সমস্যার কী আদৌ কোনও সুরাহা হবে? |
|
|
|
|
|