|
শিয়রে জয়েন্ট |
শুরু হল রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার কাউন্টডাউন। এ বার শুধু বইপত্রগুলিতে ঝটপট চোখ বুলিয়ে
নেওয়ার পালা। আর মাথায় রাখা কিছু জরুরি বিষয়।
লিখছেন কৌলিক ঘোষ। |
হাতে আর মাত্র পাঁচ দিন। সামনের রবিবারই পরীক্ষা। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এই মুহূর্তে ব্যস্ততা তুঙ্গে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষাটিকে ঘিরে।
এ বার জয়েন্টে বসার জন্য আবেদন করেছে প্রায় ১ লক্ষ ৩৭ হাজার পরীক্ষার্থী। সফলদের নিয়ে সেন্ট্রাল সিলেকশন কমিটির কাউন্সেলিং এই বছর অনলাইনে হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে, জয়েন্ট এন্ট্রান্সের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে কিছু পরিবর্তন আসছেই।
|
যেখানে পাঁচ দিনই মাত্র সময় বাকি, সেখানে দাঁড়িয়ে নতুন কোনও পদ্ধতি আয়ত্ত করার মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষার অবকাশ এখন আর নেই। তবে রবিবার পরীক্ষার হলে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হয়ে পা রাখতে, এত দিন ধরে পড়াশোনার ছড়িয়ে ফেলা জালটা এই শেষ মুহূর্তে এসে ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনতে হবে। দীর্ঘ দিন ধরে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত, অভিজ্ঞ শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, সামনের এই পাঁচ দিনে কী ভাবে প্রস্তুতির শেষ ধাপটা পেরোতে হবে, কী কী গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখতে হবে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে, কোন টেকনিক্যাল বিষয়গুলিতেই বা জোর দিতে হবে ওই পর্বে।
যেমন, জয়েন্টের সঙ্গে দীর্ঘ দিন যুক্ত থাকা বেসু-র (পূর্বতন বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ) প্রাক্তন শিক্ষক শ্যামাপদ দাস জানালেন
১) এই পাঁচ দিনে নতুন করে কোনও বিষয় বা অধ্যায় পড়া উচিত নয়। যদিও প্রশ্ন সব ক’টি অধ্যায় থেকেই আসে, কিন্তু অধিকাংশ পড়ুয়াই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না। তাই যে অধ্যায়গুলি পড়েছ, সেগুলিকেই ঝালাই করে নাও
২) অঙ্ক, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নের ফর্মুলাগুলি ভাল মুখস্থ কি না দেখো। ফর্মুলা যে কোনও গাণিতিক সমাধানের ভিত্তি। সেগুলির উপর দখল থাকলে পরীক্ষা ততটা কঠিন লাগবে না
৩) অঙ্ক বা পদার্থবিজ্ঞানের বহু প্রশ্নের হিসেবই বড় হয়। কিন্তু দু’তিন লাইন অঙ্ক কষলেই বোঝা যায় কোন উত্তরটি ঠিক। সেই ‘চোখ’টা তৈরি রাখা জরুরি
৪) পরীক্ষার আগের দিন রাত জেগো না। বরং যেটা পড়েছ, সেটা যাতে ভুল না হয় মাথা ঠান্ডা রেখো।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাথ ফাইন্ডার-এর অন্যতম অধিকর্তা তপন ঘাঁটির পরামর্শ--
১) এই পাঁচ দিন মোট সময়কে বিষয় অনুযায়ী ভাগ করে প্রতিটি অধ্যায় অনুশীলন করে নাও
২) নিজের তৈরি নোট্স বা শিক্ষকদের শেখানো টিপ্স ও ট্রিক্স আরও এক বার ঝালিয়ে নাও
৩) এমসিকিউ পদ্ধতিতে মক টেস্ট ঘড়ি ধরে যত পারো, করো। এতে নিজের ভুল-ত্রুটি ধরা পড়বে। |
|
শ্যামাপদবাবুর পরামর্শ--
• প্রশ্নপত্র দেওয়ার আগে ‘ওএমআর শিট’ অর্থাৎ উত্তরপত্রে নাম, এনরোলমেন্ট নম্বর ইত্যাদি লিখে কাজ কমিয়ে রাখা উচিত
• রাফ ওয়ার্কের জন্য পরীক্ষায় আলাদা কাগজ দেওয়া হয় না। দু’টি ভাষায় প্রশ্নপত্র হয়। যে ভাষায় উত্তর দিচ্ছে না, সেটাতে রাফ ওয়ার্ক করো
• সবক’টি প্রশ্ন পড়ে ‘যেগুলির উত্তর দিতে পারবে সেগুলিই দেবে’ এমন মানসিকতা রেখো না। পর পর উত্তর দাও। একটি প্রশ্নের জন্য বেশি সময় দিও না। দু’বার চেষ্টা করো। না-পারলে ছেড়ে দাও
• তাড়াহুড়ো করে উত্তর ভুল দিও না। বরং দু’-চারটে কম দিলে ক্ষতি নেই।
• বহু পরীক্ষার্থী সঠিক উত্তরগুলি প্রশ্নপত্রে দাগ দিয়ে রেখে সবশেষে ‘ওএমআর শিট’ বা উত্তরপত্রে চালান করে। কিন্তু পদ্ধতিটি ভুল। সঙ্গে সঙ্গেই সঠিক উত্তর চিহ্নিত করা আবশ্যিক।
তপনবাবু জানিয়েছেন--
• পরীক্ষা কেন্দ্রে এক সঙ্গে সব প্রশ্ন কখনওই পড়া উচিত নয়
• প্রথম থেকে শুরু করে যেটা যেটা পারছ উত্তর দিতে থাকো
• বেশি প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলে মনোবল হারিয়ে ফেলো না
• আন্দাজে উত্তর দিও না। |
মনে রাখার বিষয় |
• সব প্রশ্ন ‘মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন’ ধরনের
• সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন পুরোপুরি উঠে যাচ্ছে
• প্রশ্ন সংখ্যা কমছে
• অঙ্ক বা জীববিজ্ঞানে ১০০ নম্বরের প্রশ্নপত্রে আগে দু’ঘণ্টায় ৯০টির উত্তর দিতে হত। এ বার দিতে হবে ৮০টির
• অঙ্ক এবং জীববিজ্ঞানে ৬০টি প্রশ্নের পূর্ণমান এক নম্বর, ২০টি প্রশ্নের পূর্ণমান থাকবে দু’নম্বর
• পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন মিলিয়ে ৮০টি প্রশ্ন। পূর্ণমান ১০০
• তার মধ্যে ১-৪০ পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞানের প্রশ্ন। ১-৩০ পর্যন্ত পূর্ণমান এক নম্বর। ৩১-৪০ পর্যন্ত প্রশ্নের পূর্ণমান দুই
• ৪১-৮০ পর্যন্ত প্রশ্ন রসায়নের। ৪১-৭০ পর্যন্ত প্রশ্নের পূর্ণমান এক নম্বর। ৭১-৮০ পর্যন্ত প্রশ্নের পূর্ণমান দুই
• প্রত্যেকটি ভুল উত্তর দেওয়ার জন্য ৩৩.৩৩ শতাংশ নম্বর কাটা যাবে
• প্রত্যেকটি প্রশ্নের জন্য চারটি অপশন থাকবে উত্তর দেওয়ার জন্য |
|
অধিকাংশ বিশেষজ্ঞেরই মত, আগের বছরগুলির প্রশ্নপত্র অনুশীলন করার চেয়ে সিলেবাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রশ্নের ধরন অনুযায়ী উত্তর দেওয়ার অভ্যাস করা জরুরি। ১০+২ পাঠ্যক্রমের প্রত্যেকটি অধ্যায় মন দিয়ে পড়লে পরীক্ষায় ভাল ফল করা সম্ভব।
সাধারণত, জয়েন্টে ৫০-৬০% প্রশ্ন হয় সাধারণ মানের। সেগুলি ‘স্কোরিং’। যে-সমস্ত ছাত্রছাত্রী ১০+২-এর সিলেবাস পুরোদস্তুর পড়েছে, তারা উত্তর দিতে পারে। ১৫-২০% প্রশ্ন হয় মেধাবী, পরিশ্রমী পড়ুয়াদের কথা ভেবে। জয়েন্টের জন্য আলাদা ভাবে প্রস্তুতি নিলে, এই অংশের উত্তর দিতে অসুবিধা হয় না। আর বাদবাকি প্রশ্নগুলি বলা যায় অতি মেধাবীদের জন্য। যাঁরা পরীক্ষা কেন্দ্রে বসেই দ্রুত অচেনা সমস্যার সমাধান করতে পারে। |
|
|
খেয়াল রাখুন তথ্য সংকলন: কৌলিক ঘোষ |
|
উত্তর-পূর্ব ভারতের ছাত্রছাত্রীদের এমবিএ-র প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ দিতে উত্তর-পূর্ব পরিষদ (নর্থ ইস্ট কাউন্সিল)-এর সঙ্গে জোট বাঁধল সি এল এডুকেট। দু’পক্ষের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, সিকিম ও আগরতলার মোট ২০০ পড়ুয়াকে প্রথম ব্যাচে নেওয়া হবে। বাছাই হবে মেধার ভিত্তিতে। ক্যাট, ম্যাট-এর মতো ম্যানেজমেন্ট পড়ার প্রবেশিকার জন্য তাঁদের প্রস্তুতি প্রশিক্ষণ দেবে সিএল এডুকেট। ৬ মাস ধরে সপ্তাহে ৬ দিন সাত ঘন্টার ক্লাস হবে। প্রতিষ্ঠান সূত্রের দাবি, প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বিনামূল্যে। চলতি মাসেই ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। বিস্তারিত জানতে ফোন করুন: ৯৯৯০২ ০২০২৮/ ৯৬৫০৪ ৮১১১২ নম্বরে।
|
|
ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক বা বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতকোত্তরের পর যাঁরা এম টেক করতে আগ্রহী, তাঁদের বসতে হয় গেট অর্থাৎ গ্র্যাজুয়েট অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট ফর ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষায়। এই পরীক্ষার জন্য সল্টলেকের অ্যাকাডেমিক্যাল-এ নতুন ব্যাচে ভর্তি শুরু হচ্ছে এপ্রিল থেকেই। যোগাযোগ করতে পারেন ২৩২১-৯৩৯৪ নম্বরে।
|
কলকাতার বেঙ্গল ট্যাক্স কাউন্সেলে শুরু হচ্ছে প্রফেশনাল সার্টিফিকেট ইন অ্যকাউন্টিং অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের নতুন ক্লাস। বাণিজ্য বিভাগে বা আইন নিয়ে স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিচ্ছেন বা উত্তীর্ণ হয়েছেন যাঁরা, তাঁরাই ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বর: ৯৮৩৬২-৬২৭৩৩। |
|
আপনার প্রশ্ন
বিশেষজ্ঞের উত্তর |
|
|
প্রশ্ন: বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আগ্রহী। রাজ্যে কোথায়, কবে আবেদন করতে হবে, কোন বিষয়ের উপর পরীক্ষা দিতে হয় জানাবেন। বিষয়টি পড়ানো হয় কোথায়?
জয়িতা মজুমদার, রানাঘাট
উত্তর: বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বসতে হয়। এর জন্য আলাদা কোনও পরীক্ষা নেই। ইঞ্জিনিয়ারিং-এর শাখা হওয়ার দরুন পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং অঙ্কের পরীক্ষা দিতে হয়। আর জয়েন্ট দিয়ে যে সমস্ত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এই বিষয় পড়া যায়, সেগুলি হল জেআইএস ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (২৫৮২-২১৩৮), নেতাজি সুভাষ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (২৪৩৬-১২৮৬)।
|
|
|