মাত্র মাস দেড়েক ব্যবধানে ফের বিপর্যয়ের কবলে কাশ্মীর। তবে এ বার তুষারধস পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। ক্ষতিগ্রস্ত পাকিস্তানের একটি সেনা শিবির।
নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি ওই সেনা শিবিরটি আজ ভোরে এক প্রবল তুষারধসে চাপা পড়ে। শতাধিক পাক সেনা এই তুষারধসে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সিয়াচেন সেক্টরের গায়ারির ওই শিবিরটি পাক সেনার আঞ্চলিক সদর দফতর বলে এক অফিসার জানিয়েছেন। তাঁদের আশঙ্কা, আটকে পড়া সেনার সংখ্যা দেড়শোও ছুঁতে পারে। উদ্ধারকারী দল ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি দেহ খুঁজে পেয়েছে বলে সেনাবাহিনীকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে পাকিস্তানের সরকারি রেডিও।
তুষারধস নামে ভোর পৌনে ছ ’টা নাগাদ। পাক সেনার একাংশের বক্তব্য, সেই কারণেই ওই শিবিরটির অধিকাংশ সদস্য ঘুমন্ত অবস্থায় বরফচাপা পড়েছেন। পাক সেনার মুখপাত্র মেজর জেনারেল আতহার আব্বাস জানান, “নর্দার্ন লাইট ইনফ্যান্ট্রির এক কর্নেল-সহ একশোরও বেশি সেনা আটকা পড়েন তুষারধসে।” বরফচাপা ওই সেনা শিবিরের কারও সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশ কুকুর, হেলিকপ্টার, বুলডোজার নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে বেশ কয়েকটি উদ্ধারকারী দল। সঙ্গে রয়েছে মেডিক্যাল টিম। খারাপ আবহাওয়ার জন্য উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
বিশ্বের উচ্চতম ও শীতলতম যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত সিয়াচেন হিমবাহ এবং তার সংলগ্ন এলাকার কর্তৃত্ব নিয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ। ইতস্ততও সংঘর্ষও দেখেছে এই এলাকা। স্বভাবতই এখানে প্রচুর সেনা মোতায়েন রাখে দুই দেশই। সাম্প্রতিক সংঘর্ষবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্য দু’পক্ষই সিয়াচেন এলাকা থেকে কিছু সেনা কমিয়েছিল। ঘটনাচক্রে আগামিকালই ঝটিকা সফরে ভারতে আসছেন পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি, যাঁর অন্যতম দাবি, সীমান্তে সেনা উপস্থিতি কিছুটা কমিয়ে দিক ভারত। সে ক্ষেত্রে ইসলামাবাদও একই পদক্ষেপ করতে পারবে।
আজ যে অঞ্চলে তুষারধস হয়েছে, সেই জায়গাটি ধস-প্রবণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সংঘর্ষ হোক বা না হোক, সেখানে প্রতি বছরই কেবল খারাপ আবহাওয়ার কবলে পড়ে প্রাণ হারান কিছু ভারতীয় ও পাক সেনা। মাস দেড়েক আগে কাশ্মীরেরই সোনমার্গ ও গুরেজে দু’টি পৃথক ধসে মারা যান ১৬ ভারতীয় সেনা জওয়ান। তারও আগে, ২০০৫-এর বিধ্বংসী ভূমিকম্প মিলিয়ে দিয়েছিল দুই কাশ্মীরকে। সে বার ক্ষতির পরিমাণ পাক অধিকৃত কাশ্মীরেই ছিল বেশি। এ বার প্রকৃতি ফের দেখাল, তার রোষের মুখে দু’দেশের সেনা একই রকম অসহায়! |
তুষারধসের বিভীষিকা |
কাকে বলে
• পার্বত্য ঢাল বেয়ে হঠাৎই নেমে আসা বরফের ধস। |
কারণ
• কখনও প্রাকৃতিক কখনও মানুষের জন্যই। |
কী ভাবে হয়
• বরফের উপর বরফ জমে ভার বাড়লে এই বিপর্যয়।
• একটানা তুষারপাতে ঝুরো বরফ জমার আগেই ধস। এ ধরনের ধসই বেশি হয়।
• বরফের চাঁই ভেঙে ধস। কম দেখা যায়। |
প্রাকৃতিক কারণ
• টানা তুষারপাত
• প্রচণ্ড বৃষ্টি
• ভূমিকম্প |
অন্যান্য কারণ
• বিস্ফোরণ
• স্কিইং
• অতিরিক্ত গাড়ি যাতায়াত
• বন্দুকের আওয়াজ |
কখন হয়
• সাধারণত শীত ও বসন্তে। তবে হিমবাহ সরে যাওয়ায় কখনও কখনও গ্রীষ্মেও হয়। |
সাম্প্রতিক বড় বিপর্যয় |
• সেপ্টেম্বর ২০০২ রাশিয়ার উত্তর ওসেটিয়ামৃত ১২৫
• ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০ আফগানিস্তানের সালাংমৃত ১৭২
• ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ পাকিস্তানের কোহিস্তানমৃত ১০২
• ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ভারতের কাশ্মীরের সোনমার্গ
ও গুরেজ এলাকায়, মৃত ১৬
• ৭ এপ্রিল ২০১২ পাক-অধিকৃত সিয়াচেনের
গায়ারিতেনিখোঁজ শতাধিক |
|
দিনভর সংঘর্ষে নিহত একশো
সংবাদসংস্থা • বেইরুট |
সিরিয়ায় সরকার ও বিরোধী বাহিনীর সংঘর্ষে আজ নিহত হয়েছেন ১০০ জন। এর মধ্যে ৭৪ জন সাধারণ নাগরিক। শুধু লাতামনা শহরেই ক্ষেপণাস্ত্র হানায় আজ মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। আলেপ্পো শহরে গোয়েন্দা সদর দফতরে আজ হামলা চালায় বিরোধীরাও। আর্ন্তজাতিক প্রতিনিধি দলের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মুখে স্বীকার করলেও বিভিন্ন শহরে আসাদ
বাহিনীর হামলা এখনও বন্ধ হয়নি বলে দাবি বিরোধীদের। কোফি আন্নানের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে সেনাবাহিনী সরিয়ে নেওয়া ও বৃহস্পতিবারের মধ্যে সরকার ও বিরোধী উভয় পক্ষকেই অস্ত্র ছাড়তে বলা হয়েছে। কিন্তু বহু জায়গাতেই এখনও রয়ে গিয়েছে সেনা। মার্কিন উপগ্রহে ধরা পড়েছে তার বেশ কিছু ছবিও। যুদ্ধবিরতির দিন এগিয়ে এলেও সংঘর্ষ যে পুরোমাত্রায় চলছে তা জানিয়েছেন সিরিয়ার মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট ফোর্ড। |