ছুটি কাটিয়ে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফিরছিলেন তিনি। ট্রেনে সহযাত্রী কয়েক জন জওয়ানের সঙ্গে বচসা বাধে। ওই জওয়ানেরা ধারালো অস্ত্র বের করে হুমকি দিতে শুরু করলে ভয় পেয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন। অস্ত্রোপচার করে বাঁ পায়ের পাতা বাদ যাওয়ার পরে এমনই অভিযোগ করলেন অসম রাইফেলসের জওয়ান আনন্দ সিংহ।
অসম রাইফেলের ৩৫ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ান, বছর বত্রিশের আনন্দের বাড়ি উত্তরাখণ্ডের খাতিমা থানার বানবুসি গ্রামে। শুক্রবার কালনা মহকুমা হাসপাতালে শুয়ে তিনি জানালেন, দু’মাসের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। ছুটি শেষ হওয়ায় অসমের ডিমাপুরে কর্মস্থলে ফিরছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার হাওড়া স্টেশন থেকে কামরূপ এক্সপ্রেসে জওয়ানদের জন্য সংরক্ষিত কামরায় চড়েন। ওই কামরায় ছিলেন সাদা পোশাকের অন্য কিছু জওয়ান। তবে তাঁরা কোন বাহিনীর, তা আনন্দ জানাতে পারেননি। তাঁর অভিযোগ, হাওড়া থেকেই ওই কামরায় ওঠেন তিন-চার জন সাধারণ যাত্রী। কেন তাঁরা ওই কামরায় উঠেছেন, এ নিয়ে ট্রেন ছাড়ার ঘণ্টাখানেক পরে ওই জওয়ানদের সঙ্গে যাত্রীদের গণ্ডগোল বাধে। জওয়ানেরা ওই যাত্রীদের মারধর করে। খানিকক্ষণ একটি শৌচাগারে আটকেও রাখে। |
আনন্দের অভিযোগ, তিনি এর প্রতিবাদ করলে ওই জওয়ানদের সঙ্গে বচসা হয়। দু’জন ধারালো অস্ত্র বের করে তাঁরে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। তাই তিনি সঙ্গে থাকা ব্যাগটি নিয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ মারেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ধাত্রীগ্রাম স্টেশনের কাছে স্থানীয় বাসিন্দা উমেশ মাহালি, শান্ত কিস্কুরা ওই জওয়ানকে রক্তাক্ত ও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁরা স্টেশন মাস্টারকে খবর দিলে ওই জওয়ানকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে কালনা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, বাঁ পায়ের পাতা বাদ দেওয়া ছাড়া ওই জওয়ানের ডান পায়েও চোট রয়েছে। এ ছাড়া মাথায় ৩০টি সেলাই দিতে হয়েছে। আনন্দ রেলপুলিশের কাছে আরও অভিযোগ করেছেন, ওই সাধারণ যাত্রীদের ট্রেন থেকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে কামরার জওয়ানেরা। কালনার রেলপুলিশের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “কোনও যাত্রীকে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার প্রমাণ এখনও মেলেনি। কেউ এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগও করেনি। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।” জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “ওই জওয়ানের কর্মস্থল ও বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছে। রেলপুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।” |