হেলিকপ্টার জোগাড় না করেই, বিভিন্ন জায়গায় হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করার ‘প্রতিশ্রুতি’ দেওয়ায় মনসিজ রায় নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে উত্তর-পূর্বে মাল পরিবহনের জন্য বেসরকারি বিমান পরিষেবা চালু করেছিল রুদ্র জিটিএল। রুদ্র গ্রুপ ও জিটিএল গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে ডেকান কার্গো লিমিটেডের কাছ থেকে দু’টি এটিআর-৭২ বিমান ভাড়া নিয়ে এই পরিষেবা শুরু হয়েছিল। এর পর গত ১০ মার্চ সংস্থার অধিকর্তা মনসিজ রায় সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘোষণা করেন, গুয়াহাটিকে কেন্দ্র করে ১০টি গন্তব্যে উড়বে রুদ্র জিটিএল-এর কপ্টার। বলা হয়েছিল: আপাতত দু’টি সাত আসন বিশিষ্ট বি-৩ ইউরোকপ্টার ও বেল-৪০৭ হেলিকপ্টার চালানো হবে। ভাড়া পড়বে ৪ হাজার টাকা। উত্তরবঙ্গের বাগডোগরা ও মণিপুরের ইম্ফল অবধিও হেলিকপ্টার চলবে। ভাড়া ধার্য্য হয়েছিল ৬ হাজার। প্রকল্প ঘোষণায় ব্যাপক সাড়া মেলে। এমনকী পরিবহণ মন্ত্রী চন্দন ব্রহ্মর সঙ্গে বৈঠক করে চপার নামানোর জন্য উপযুক্ত হেলিপ্যাডের ব্যবস্থাও করা হচ্ছিল। রাজ্যের ভিতরে যে গন্তব্যগুলিতে কপ্টার উড়বে বলে ঘোষণা হয় সেগুলি হল: ধেমাজি, কাজিরাঙা, তেজপুর, ধুবুরি, হাফলং, মানস, মাজুলি, কার্বি আংলং, লীলাবাড়ি ও কোকরাঝাড়।
প্রথমে ১৫ মার্চ, পরে ২২ মার্চ ও ২৪ মার্চ কপ্টার ওড়ার দিন ধার্য হলেও কপ্টার ওড়েনি। বহু লোক আগাম বুকিংও করেছিলেন। শেষ অবধি ডিমা হাসাও-সহ বাকি জেলাগুলি থেকে মনসিজ রায়ের নামে অভিযোগ আসতে থাকে। মঙ্গলবার আজারা থানায় ৪২০ ধারায় তাঁর নামে লিখিত অভিযোগ রুজু হওয়ার পরে পুলিশ মনসিজবাবুর সন্ধানে নামে। কিন্তু তাঁর খোঁজ মেলেনি। গত কাল রাতে ওদালবাক্রা থানার পুলিশ তাঁর সিমের টাওয়ার অনুসরণ করে মনসিজবাবুকে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে আগাম টাকা নিয়ে তাঁদের ঠকিয়েছেন। মনসিজবাবু দাবি করেছিলেন, কাজিরাঙা ও মানসকে আকাশপথে যুক্ত করার মূল কারণ হল দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের টানা। এই বিষয়ে অসম পর্যটন বিকাশ নিগমও উৎসাহ দেখায়। বিজ্ঞাপনে মানস-কাজিরাঙার নামও ব্যবহার করা হয়। অসম পর্যটন বিকাশ নিগমের অধিকর্তা অনুরাগ সিংহ বলেন, “যে কেউ আমাদের কাছে নতুন প্রস্তাব নিয়ে আসতে পারেন। তবে মানস বা কাজিরাঙায় কপ্টারে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার কোনও পরিকাঠামো আমাদের ছিল না। মনসিজবাবুর সঙ্গে এরপর কথাও এগোয়নি। তিনি আমাদের নাম ব্যবহার করে ঠিক করেননি।” |