কীসে কত গুণ মেয়েরা বুঝুন
কটা নীরোগ, সুন্দর স্বাস্থ্য পেতে কোন মেয়ে চায় না, বলুন তো? হ্যাঁ, এমন স্বাস্থ্যের কথাই বলছি যেখানে প্রতি দিন খাবারের চেয়ে বেশি ওষুধ গিলতে হবে না, মাসে এক বার ডাক্তারবাবুর কাছে হাজিরা দিতে হবে না, বা অসুখের জেরে চোখ-মুখ কালো হয়ে থাকবে না। অথচ এর মোক্ষম দাওয়াই যে সব খাবার, হয় তাদের অর্ধেকের নামই আমরা জানি না, নয়তো পরিমাণ মতো খাই না। কিন্তু মেয়েদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় এই খাবারের গুণাগুণ জানতে তো হবেই। আসুন, দেখে নেওয়া যাক।
এখন একমাত্র প্রবাদবাক্যেই ডুমুরের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। কারণ, বাঙালি পাত থেকে ক্রমশ লোপ পাচ্ছে ডুমুর। অথচ, আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেলের অনেকগুলিই রয়েছে ডুমুরের মধ্যে। ঋতুস্রাব শুরুর পর থেকেই মেয়েদের শরীরে প্রায়ই ঘাটতি ঘটে আয়রনের। আর মেনোপজ-এর পর মহিলাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্যালশিয়াম। কারণ এই সময়ই তাঁদের অস্টিয়োপোরোসিস-এর মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। এই দু’টি উপাদানই রয়েছে ডুমুরের মধ্যে।
অনেকেই তিসি বীজকে ঠিক খাবার হিসেবে ভাবতে পারেন না, তাই না? তিসি বীজ কিন্তু ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের খুব গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এমনকী, এটি ব্রেস্ট ক্যানসার এবং হার্টের অসুখের সম্ভাবনাও কমাতে সাহায্য করে। আর্থ্রাইটিস এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মধ্যে অনেক বেশি দেখা যায়। তিসি বীজের মধ্যে প্রদাহ উপশম করার গুণ (অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি প্রপার্টিজ) থাকায় এটি আর্থ্রাইটিস-এর সম্ভাবনা কমায়, এবং হজমে সাহায্য করে বলে যাঁরা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম-এ ভোগেন, তাঁদের জন্য খুবই কার্যকর।
বাইরেটা শক্তপোক্ত। ভাঙতে গেলেই ঝকমারি। আখরোট কিন্তু মেয়েদের জন্য বিশেষ উপকারী। এটি প্যাক করা হয় ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ফাইটোস্টেরল সমৃদ্ধ উপাদানের সঙ্গে। সাম্প্রতিক এক গবেষণা জানাচ্ছে, এটি সম্ভবত ব্রেস্ট ক্যানসারের প্রবণতা কমায়। আখরোটের ওমেগা থ্রি হাড়ের স্বাস্থ্য, আর্থ্রাইটিস-এর ব্যথা এবং অবসাদের ক্ষেত্রে খুব কার্যকর। এ ছাড়াও এতে আছে মেয়েদের স্বাস্থ্যের উপযোগী ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফলিক অ্যাসিড।
ফলের রস যাঁরা ভালবাসেন, তাঁরা ক্র্যানবেরি জুস-এর নাম শোনেননি হতে পারে না। গবেষণায় দেখা গিয়েছে ক্র্যানবেরি খাওয়ার সঙ্গে ব্রেস্ট ক্যানসার এবং হার্টের রোগের সম্ভাবনা কমার মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে। এর সবচেয়ে বড় গুণ সিসটিটিস-এর মতো ইউরিনারি ট্র্যাক-এর ইনফেকশন কমানো। মেয়েরা প্রতি দিন দুই গ্লাস ক্র্যানবেরি জুস খেলে এই ধরনের ইনফেকশন-এর সম্ভাবনা কমে যায়।
দুধে যে ক্যালশিয়াম আছে, সেটা মোটামুটি সবাই জানি। এও জানি, মেয়েদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্যালশিয়াম দারুণ উপকারী। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানি না, ক্যালশিয়ামের সঙ্গে ভিটামিন ডি (কয়েক ধরনের দুধ আর দুধজাত সামগ্রীতে পাওয়া যায়) যোগ করলে তা অস্টিয়োপোরোসিস আটকাতে পারে। একটি গবেষণা বলছে, ক্যালশিয়াম আর ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার পি এম এস (প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম)-এর লক্ষণ কমায়, বন্ধও করে দিতে পারে।
নানা ভিটামিন এবং মিনারেলে ভরপুর এই শাক। আবার এর মধ্যেই রয়েছে মেয়েদের অতি প্রয়োজনীয় ম্যাগনেশিয়াম, বিশাল পরিমাণে। গবেষণা থেকে জানা যায়, ম্যাগনেশিয়াম প্রি মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম-এর শারীরিক কষ্ট অনেকটা কমিয়ে দেয়।
আরও কিছু ঘ-এর পাতায়
স্বাস্থ্য-সচেতন মহিলারা মোটামুটি সকলেই ওটের সঙ্গে পরিচিত। নানা ধরনের পুষ্টিকর উপাদান মিশিয়ে প্যাকেট-বন্দি করা হয় ওট-কে। এই উপাদানের বেশির ভাগই মেয়েদের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ওট আমাদের হার্ট, পরিপাক ক্রিয়া এবং রক্তচাপ (অনেক পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলাই হাইপারটেনশনে আক্রান্ত হন) নিয়ন্ত্রণ করে। ওটে যে ভিটামিন বি সিক্স থাকে, তা প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম এবং ক্ষণে ক্ষণে মুড পরিবর্তনের মতো সমস্যার হাত থেকে মেয়েদের বাঁচায়। বাচ্চার নানা ধরনের জন্মগত ত্রুটি দূর করতে ওটের ফলিক অ্যাসিড খুব কার্যকর, তাই গর্ভধারণের আগে এবং পরে অবশ্যই ওট খাওয়া উচিত।

স্যামন মাছ
বাঙালি পাতে এটি এখনও ততটা পরিচিত নাম নয়। আমরা জানি, মধ্যবয়সি মহিলাদের (যাঁদের এখনও মেনোপজ হয়নি) সুস্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ জরুরি একটি উপাদান হল আয়রন। স্যামন মাছে আয়রন থাকে প্রচুর পরিমাণে। এ ছাড়াও প্যাক করার সময় এই মাছের সঙ্গে মেশানো হয় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা মন ভাল রাখে। গবেষণা বলছে যে, ওমেগা থ্রি অবসাদ (পুরুষদের তুলনায় দ্বিগুণ সংখ্যক মহিলা এতে আক্রান্ত হন) কাটাতে সাহায্য করে এবং ঘন ঘন মুড পরিবর্তনের সমস্যা দূর করে। গর্ভবতী মহিলারা এই মাছ খেলে নাকি তাঁদের সন্তানদের বুদ্ধি বাড়ে।
 
টমেটো
মেয়েদের স্বাস্থ্যের উপযোগী একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যারটিনয়েড হল লাইকোপিন। এটি টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। লাইকোপিন সম্ভবত ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস-এর মেয়েদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হার্টের রোগ। প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে, এর শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হার্টের অসুখের সম্ভাবনা অনেকটাই কমাতে সাহায্য করে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.