দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
মিটবে জলসঙ্কট
চাতকের আকাশে মেঘ
মস্যা ছিল পুনর্বাসনের। সেই কারণে বেহালার সেনপল্লিতে বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের জন্য জায়গা চিহ্নিত হলেও কাজ শুরু করা যায়নি। অবশেষে, এই জমিতে বসবাসকারী বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার পরেই বুস্টার পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ শুরু হয়েছে। আগামী বছর দেড়েকের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। হলে, বেহালা অঞ্চলের পানীয় জলের সঙ্কট অনেকটাই মিটে যাবে বলে দাবি পুর কর্র্তৃপক্ষের।
কলকাতার মেয়র তথা জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বেহালা অঞ্চলে পানীয় জলের সমস্যা দূর করতে রবীন্দ্রনগরের কাছেই সেনপল্লিতে বুস্টার পাম্পিং স্টেশন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দিতে সময় লাগায় কাজ শুরু করতে সামান্য দেরি হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, বছর দেড়েকের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে।”
গত বছরই কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ দফতর বেহালায় একটি সমীক্ষা করে দেখেছিল, সেনপল্লি এলাকায় একটি পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করলে ১২৭ থেকে ১৩১ মোট পাঁচটি ওয়ার্ডে পানীয় জলের সঙ্কট অনেকটাই মিটবে। তার পরেই, ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সেনপল্লিতে জায়গা চিহ্নিত করা হয়।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, এখানে বহু দিন ধরেই বেশ কিছু পরিবার বসবাস করছিলেন। তাঁরা সরতে চাইছিলেন না। তাই পুর কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করে এই প্রকল্পের ঠিক পাশে বিএসইউপি (বেসিক সার্ভিসেস ফর আর্বান পুওর) প্রকল্পে প্রায় ৪০টি পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য আবাসন নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। তার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।
পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন, “এই পাম্পিং স্টেশন থেকে প্রতি দিন ৩০ লক্ষ গ্যালন জল উৎপন্ন হবে। ফলে, এলাকার পাঁচটি ওয়ার্ডে জল সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এর মধ্যে, সেনপল্লি-সংলগ্ন রবীন্দ্রনগর এলাকার অন্তর্ভুক্ত ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুরোটা এবং আশপাশের বাকি চারটি ওয়ার্ডের বেশির ভাগ জায়গাতেই পানীয় জল পাওয়া সম্ভব হবে।”
বিভাসবাবু এই প্রসঙ্গে জানান, এই জলপ্রকল্পে মোট খরচ হবে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের জন্য ২২ কোটি টাকা পুরসভা বরাদ্দও করেছে। গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্প থেকে পাইপের মাধ্যমে পানীয় জল এনে এই পাম্পিং স্টেশনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে।
এই মুহূর্তে বেহালায় তিনটি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন রয়েছে। এগুলি হল বেহালা চৌরাস্তা, সিরিটি এবং দাশপাড়া বুস্টার পাম্পিং স্টেশন। এই তিনটি পাম্পিং স্টেশন থেকে যথাক্রমে দৈনিক ৪৫ লক্ষ, ২০ লক্ষ এবং ৩০ লক্ষ গ্যালন জল সরবরাহ করা হয়।
১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সংহিতা দাস বলেন, “এই বুস্টার পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ শেষ হলেই এই এলাকা-সহ আশপাশের অনেক অঞ্চলেই জলসঙ্কট মিটবে।
প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করতে মেয়রের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। ক’দিন আগে মেয়র নিজে এসে প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছেন।”


ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.