দগ্ধ বাজার গড়ে দিক পুরসভা, চায় হাতিবাগান
ক দিকে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে। অন্য দিকে, হাতিবাগান বাজারটি পুরসভার না হলেও ব্যবসায়ীরা দাবি তুলেছেন পুরসভাই ওই বাজার নতুন করে গড়ে তুলুক। ঘটনার দিন মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি শুনে ক্ষতিপূরণ মেলার আশায় বুক বেঁধেছিলেন সর্বস্বান্ত হয়ে পড়া ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার পুলিশ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের নামের তালিকা চেয়ে পাঠানোয় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। এরই ফাঁকে অবশ্য পুরসভার অন্দরমহলেই উঠছে অন্য প্রশ্ন যে বাজার পুরসভার নয়, যেখানে অধিকাংশ দোকানির বৈধ লাইসেন্স নেই, তাঁরা কি সরকারি ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন? পুরসভার এক পদস্থ অফিসারের কথায়, “ক্ষতিপূরণ দেওয়া মানে তো ওঁদের বৈধতা দেওয়া।”
মেয়র পারিষদ (বাজার) দেবাশিস কুমার জানান, ২০১০ সালে হাতিবাগান বাজারের ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছিল কাঠামোটি বিপজ্জনক। ভাঙাচোরা কাঠামো ঠিক করতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু তা মানা হয়নি। তিনি বলেন, “সরকারের নির্দেশ পেলে ক্ষতিপূরণ নিয়ে আলোচনা হতেই পারে।” ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অভিজিৎ সাহা বলেন, “আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছি। পুরসভা ও সরকারকে তা জানিয়ে ক্ষতিপূরণের আবেদন করছি।”
ভেঙে ফেলা হচ্ছে বাজার লাগোয়া একটি বাড়ির পুড়ে যাওয়া ছাদ। ছবি: দেবাশিস রায়
বুধবার মাঝরাত থেকে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ওই বাজারের অনেকখানিই ছাই হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শুক্রবার ওই বাজারের ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করেন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পুরসভার মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। সেই সভাতেই ব্যবসায়ীরা বলেন, পিপিপি মডেলে কলেজ স্ট্রিট মার্কেট নিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ। কোনও বেসরকারি সংস্থা ওই বাজার পুনর্গঠনের কাজ করুক, সেটা তাঁদের না-পসন্দ্।
ওই বৈঠকের আগে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন স্থানীয় সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সুদীপবাবু বলেন, “ঐতিহ্যবাহী ওই বাজারকে পুনর্গঠন করা দরকার। ব্যবসায়ীরা যা প্রস্তাব দেবেন, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।” অগ্নিকাণ্ডের পরেই এ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর প্রাথমিক কথা হয়েছে বলে সুদীপবাবু জানান। এ দিন বাজার সাফাইয়ের কাজে তদারকি করেন অতীনবাবুও।
সকাল থেকেই হাতিবাগান বাজার সাফ করার কাজ শুরু হয়ে যায়। বেলা গড়াতেই লরি নিয়ে হাজির হন পুরসভার বিল্ডিং ও জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের কর্মীরা। বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পুরো চাতাল জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পোড়া সব্জি, মাছ আর মুরগি। সব্জি ও মাছ-মাংস বাজার চত্বরে পড়ে থাকা পোড়া সামগ্রী ঠেলা গাড়িতে করে তুলছেন পুরকর্মীরা।
বাজারের দগ্ধ চালপট্টিতে পোড়া চালের স্তূপ। শুক্রবার, হাতিবাগান বাজারে। ছবি: জয়তী রাহা
ব্যবসায়ীরা বলেন, পুরসভার উদ্যোগে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। সমিতির সম্পাদক অভিজিৎবাবু বলেন, “সামনেই পয়লা বৈশাখ। সারা বছর এই সময়টার জন্য আমরা বসে থাকি।
তাই যত তাড়াতাড়ি কাজ হয়, ততই ভাল।” পোড়া জিনিস সরানোর পাশাপাশি এ দিন বাজারের বিপজ্জনক অংশ ভাঙার কাজও শুরু করে বিল্ডিং ডিসপোজাল স্কোয়াড। তবে ফরেন্সিক বিভাগ না আসায় সেই কাজ ব্যাহত হয় বলে জানান পুরসভার এক পদস্থ অফিসার।
এ দিকে, ঘটনাস্থলে মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি শুনে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন হাতিবাগানের ব্যবসায়ীরা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে স্থানীয় কাউন্সিলরকে বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। অতীনবাবু জানান, কলকাতা পুলিশ ওই বাজারের ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা তৈরি করছে। দোকান কার, কীসের দোকান এবং ক্ষতির পরিমাণ কত এ সব নিয়েই ওই তালিকা বানানো হচ্ছে।
বিকেলে বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানদার ক্ষতির পরিমাণের হিসেব কষতে ব্যস্ত। দেখা মিলেছে একটি ব্যানারেরও। তাতে লেখা, ‘ক্ষতিপূরণ-সহ অবিলম্বে ব্যবসা চালু করার অনুমতি দিতে হবে।’
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.