ভারতীয় বায়ুসেনার একটি রানওয়ের নীচে গত ১১ দিন ধরে ৭৫ ফুট লম্বা কেবলবাহী পাইপের মধ্যে বেকায়দায় আটকে ছিল একটি পুরুষ চিতাবাঘ। শেষ পর্যন্ত বায়ুসেনা এবং বন দফতরের অফিসারদের যৌথ অভিযানে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে চিতাবাঘটিকে। আপাতত তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চণ্ডীগড়ের ছতবির চিড়িয়াখানায়।
কিছু দিন আগে বায়ুসেনার ওই ঘাঁটি চত্বরে তাকে দেখা গিয়েছিল। তাকে উদ্ধারের জন্য আসেন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা। পাইপের মুখে মুরগি ও আস্ত ছাগল টোপ হিসাবে রাখা হয়। বিকট শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে সে যাতে নিজেই বেরিয়ে আসে, সে জন্য চলেছে পটকা ফাটানো। তাতেও ফল মেলেনি। চণ্ডীগড়ের বন্যপ্রাণী বিভাগের প্রধান সন্তোষ কুমার জানান, না খেয়ে অবশ্য ১৫ দিন বেঁচে থাকতে পারে চিতাবাঘ।
|
দিন চারেক বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকা চষে বেড়ানোর পর দলছুট দাঁতালটি অজয় নদ পার হয়ে বুধবার গভীর রাতে ঢুকে পড়ল বীরভূমের কাঁকরতালা থানা এলাকায়। বনদফতর সূত্রের খবর, বুধবার রাতে কাঁকরতালা থানার বিনোদপুর, নবসন ঘুরে পলপই গ্রামের একটি কাঁদরে নেমে পড়েছিল দাঁতালটি। তার পর থেকেই হাতিটিকে আর খুঁজে পাচ্ছিলেন না বনকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকালে পলপই গ্রামের ডুকির বাগান নামে একটি ঝোপে ফের হাতিটিকে দেখতে পান স্থানীয় মানুষ এবং দিনভর হাতিটির অবস্থান ছিল সেখানেই। খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভিড় জমাতে থাকেন এলাকার বাসিন্দারা। রঞ্জিত পাল, রাজু ঘোষরা বলেন, “এ তল্লাটে প্রথম বার এতবড় হাতি ঢুকল। হাতিটি শান্ত। কাউকে আঘাত করেনি। তবে বুধবার রাতে এলাকার দু’একটি গম ও সর্ষে খেতের কিছু ক্ষতি করেছে। বন দফতর সূত্রে জানা সূত্রে জানা গিয়েছে, দলছুট দাঁতালটি দামোদর নদ পেরিয়ে রবিবারই বর্ধমানের অন্ডাল থানা এলাকায় ঢুকেছিল। ওই দিন থেকেই অন্ডাল, দুর্গাপুর, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়া থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় দাপিয়ে বেড়িয়েছে। জেলা বনাধিকারিক কিশোর মাঁকড় বলেন, “বাঁকুড়া বা পশ্চিম মেদিনীপুর জঙ্গল থেকে দু’টি নদ পার হয়ে দলছুট দাঁতালটি এখানে এসেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই হাতিটিকে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করা হবে।”
|
চিতাবাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছে মেখলিগঞ্জের রানিরহাট এলাকায়। বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে রানিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের সারোহাটি এলাকায় মাঠের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় বাছুরের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন কয়েকজন গ্রামবাসী। তারপরেই চিতাবাঘের হামলায় ওই বাছুরটির মৃত্যু হয়েছে বলে এলাকায় চাউর হয়ে যায়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মেখলিগঞ্জের জামালদহের উছলপুখুরি এলাকায় চিতাবাঘের হামলায় কয়েকজন গ্রামবাসী জখম হন। পরে উত্তেজিত একদল জনতা চিতাবাঘটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন। তার পরে এ দিন বাছুরের দেহ উদ্ধারের পরে নতুন করে চিতাবাঘের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে কোচবিহার থেকে বন দফতরের কর্মীরা যান। তবে কোথাও চিতাবাঘের হদিস মেলেনি। তবে ওই এলাকায় সন্দেহজনক কয়েকটি পায়ের ছাপ তাঁরা দেখেছেন। কোচবিহারের ডিএফও পিনাকী মিত্র বলেন, “কোনও বাসিন্দা চিতাবাঘ দেখেননি। ফলে ওই সব পায়ের ছাপ পরীক্ষা না করে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।” রানিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রণিতা কার্জি বলেন, “এলাকার কেউ চিতাবাঘ দেখেননি ঠিকই তবে ক্ষতবিক্ষত বাছুরের দেহ উদ্ধার হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের কথা শুনেছি। আতঙ্ক কাটাতে বন দফতরের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
|
চিতাবাঘের আক্রমণ থেকে চা শ্রমিকদের প্রান বাঁচাবার জন্যে কর্মশালার আয়োজন করল ওদলাবাড়ির পরিবেশ প্রেমী সংগঠন নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার সংস্থা। বৃহস্পতিবার মানাবাড়ি চা বাগানের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই শিবির হয়। সংস্থার সম্পাদক সুজিত দাস জানান, মানাবাড়ি চা বাগানে বেশ কিছুদিন ধরে চিতাবাঘের উপদ্রবের খবর মিলছিল। সে কারণেই ওই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। |