খেলার টুকরো খবর
‘রাম-সীতা’ এবং ‘হাকিম-পুলিশ’
(হারিয়ে যাওয়া খেলা ১৩)
বছর পঁচিশ-তিরিশ আগেও প্রাথমিক স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে খেলা দু’টির ব্যাপক প্রচলন ছিল। ক্লাস শুরু হওয়ার আগে কিংবা টিফিনের সময় ছেলে-মেয়েরা ওই দুই খেলায় মেতে উঠত। মূলত কাগজের টুকরো দিয়ে খেলা হয় বলে কোথাও কোথাও খেলা দু’টি ‘কাগজ কুচির খেলা’ নামেও পরিচিত।
কমপক্ষে ৪ জন ছেলে মেয়ে নিয়ে একক ভাবে খেলা দু’টি চলে। রাম-সীতা খেলায় ৪ জন খেলোয়াড়ের জন্য প্রয়োজন চৌকো আকৃতির ছোট ছোট ১৬টি কাগজের টুকরো। যার প্রতি ৪টি টুকরোয় লেখা হয় ‘রাম’, ‘সীতা’, ‘ভরত’ ও ‘লক্ষ্মণ’ নামগুলি। খেলোয়াড়ের সংখ্যা বৃদ্ধি হলে প্রতিজনের জন্য আরও ৪টি করে কাগজকুচি যোগ করা হয়। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন মত ‘শত্রুঘ্ন’ কিংবা ‘সুগ্রীব’ এমনকী ‘হনুমানে’র নামও সংযোজন করা চলে।
প্রথমে খেলোয়োড়রা বৃত্তাকার ভাবে বসে। একজন কাগজ কুচিগুলি উপরের দিকে ছুঁড়ে দেয়। সেগুলি মাটিতে পড়ার সঙ্গে-সঙ্গে এক একজন ৪টি করে কাগজ সংগ্রহ করে। এরপর প্রত্যেকে গোপনে দেখে নেয় কার ভাগ্যে কী নাম লেখা কাগজ পড়েছে। একই নাম লেখা কাগজ যে যত বেশি সংখ্যক সংগ্রহ করতে পারে তার ভাগ্য খেলার ভাষায় তত সুপ্রসন্ন বলে বিবেচিত হয়।
কারণ খেলার নিয়ম হল, সকলকেই একই নাম লেখা ৪টি কাগজ সংগ্রহ করতে হবে। সেজন্য একজন খেলোয়াড় সর্বাধিক বেশি সংখ্যক নাম লেখা কাগজ টুকরোগুলি হাতে রেখে, একটি অপ্রয়োজনীয় টুকরো বাঁ দিকের খেলোয়াড়কে দেয়। সে প্রয়োজন বোধ করলে সেটি নিজের কাছে রেখে অপ্রয়োজনীয়টিকে অথবা সেটিকেই তুলে দেয় তার পাশের জনকে।
এই ভাবে একই নাম লেখা কাগজ সংগ্রহের জন্য ধারাবাহিক প্রক্রিয়া চলে। এক্ষেত্রে প্রচণ্ড গোপনীয়তা রাখা হয়। কারণ একজন খেলোয়াড় যদি জেনে যায় তার পাশের জন কী নাম লেখা কাগজকুচি সংগ্রহ করছে তা হলে বিপদ। যদি সেই কাগজকুচি তার হাতে থাকে, তাহলে নিজের জন্য একইনাম লেখা ৪টি কাগজকুচি সংগ্রহ না হওয়া পর্যন্ত সেটি হাতছাড়া করতে চায় না। সবার আগে যে ৪টি একই নাম লেখা কাগজ সংগ্রহ করতে পারবে-- সেই হয় প্রথম। এরপর সংগ্রহীত একই নাম লেখা কাগজের সংখ্যা অনুযায়ী অন্যদের স্থান নির্ধারণ করা হয়।
অন্য দিকে কাগজকুচি দিয়ে খেলা হলেও হাকিম-পুলিশ খেলাটিতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিজনের জন্য চারটির বদলে একটি করে কাগজকুচি বরাদ্দ থাকে। কাগজগুলিতে লেখা হয় ‘হাকিম’, ‘পুলিশ’, ‘চোর’ ও ‘ডাকাত’ নামগুলি। তবে খেলোয়াড়ের সংখ্যা বেশি হলে ‘চৌকিদার’ কিংবা ‘সেপাই’য়ের নামও অন্তর্ভুক্ত করা চলে। হাকিমের জন্য বরাদ্দ থাকে ১০ নম্বর। হাকিমের নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশ, চৌকিদার কিংবা সেপাই চোর-ডাকাত ধরতে পারলে ৮ নম্বর পাওয়ার অধিকারী হয়। অন্যথা সমপরিমাণ নম্বর পায় ডাকাত কিংবা চোর। রাম-সীতার মতই নাম লেখা কাগজকুচিগুলি একত্র করে উপরে ছুঁড়ে ফেলা হয়। ক্ষিপ্রতার সঙ্গে এক একজন একটি করে কাগজকুচি কুড়িয়ে নেয়। এরপর হাকিম লেখা কাগজকুচিটি যে পায়, সে পুলিশ চৌকিদার বা সেপাইকে চোর-ডাকাত ধরার নির্দেশ দেওয়ার পাশপাশি ১০ নম্বর পাওয়ারও অধিকারী হয়। চোর কিংবা ডাকাতের পরিচয় গোপন থাকে। হাকিমের নির্দেশ মাফিক সঠিক জনকে ধরতে পারলেই পালনকারী পেয়ে যায় ৮ নম্বর। ভুল হলে, যাকে ধরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সে ওই নম্বর পায়। এই ভাবে ১৫-২০ রাউন্ড খেলা শেষে প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী স্থান নির্ধারিত হয়।
ময়ূরেশ্বরের ডাঙাপাড়া গ্রামের সৌরভ ধীবর, কুণ্ডলার বিশ্বনাথ মণ্ডল-রা জানান, কবে খেলেছি ওই সব খেলা। এখনও আবছা স্মৃতিতে ভেসে ওঠে। এখনকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে ওই খেলা খেলতে দেখা যায় না।

জয়ী আলবাঁধা
বোলপুরের ন-ডাঙাল যুব কল্যাণ সমিতি পরিচালিত ৮ দলের ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হল স্থানীয় আলবাঁধা ফিচার লাইব্রেরি। ১৪ মার্চ ন-ডাঙাল মাঠে ওই খেলা হয়। প্রথমে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ন-ডাঙাল আদ্যাশক্তি ক্লাব ১৬ ওভারে ১১২ রান করে অল আউট হয়ে যায়। জবাবে আলবাঁধা ফিচার লাইব্রেরি ১৫.৫ ওভারে ৯ উইকেটে ১১৩ রান করে জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যায়। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন আলবাঁধার সুরেশ বৈরাগ্য। ন-ডাঙালের মনোজ চক্রবর্তী নির্বাচিত হন ম্যান অফ দ্য সিরিজ। আয়োজক সংস্থার সম্পাদক পলাশ মণ্ডল জানান, খেলায় যোগদানকারী প্রতিটি দলের সম্পাদকেরা হাজির ছিলেন।

বোলপুরে ক্রিকেট
বোলপুরের শ্রীনিকেতন পল্লিশিক্ষা ভবন পরিচালিত ৬ দলীয় রাজেশ কাঁড়ার স্মৃতি ক্রিকেট প্রতিযোগিতা জিতে নিল কলকাতা ব্লুজ। মঙ্গলবার সংস্থার মাঠে ওই প্রতিযোগিতা হয়। প্রথমে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে কলকাতা ব্লুজ ১৯.৫ ওভারে ১১৪ রান করে অল আউট হয়ে যায়। জবাবে বোলপুর ইয়ং টাউন ক্লাব ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১০৪ রান সংগ্রহ করে। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন কলকাতার নিষান দাভে। ম্যান অফ দ্য সিরিজ হন বোলপুর সুভাশিস সিংহরায়। মাঠে উপস্থিত ছিলেন পল্লিশিক্ষা ভবনের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র দে, সহকারী অধ্যক্ষ বিধানচন্দ্র রায়, বিশ্বভারতীর শারীরশিক্ষা বিভাগের প্রধান রত্নেশ সিংহ প্রমুখ। আয়োজক সংস্থার সম্পাদক ওয়াসিম ইফতিকার জানান, পল্লিশিক্ষা ভবনের প্রক্তন ছাত্র রাজেশের অকাল মৃত্যুতে তাঁর স্মৃতির উদ্দ্যশে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল।

নক আউট প্রতিযোগিতা
সিআরপির উদ্যোগে নক আউট ফুটবল, ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা হয়ে গেল বারিকলের ঝিলিমিলিতে। গত ১৩-১৬ মার্চ ঝিলিমিলি ফুটবল মাঠে ও ঝিলিমিলি ক্যাম্পের মাঠে খেলাগুলি আয়োজিত হয়। ফুটবলে আটটি দল যোগ দিয়েছিল। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে খাট্টাম একাদশ। ফাইনালে খাট্টাম টাইব্রেকারে ভুরুভাঙা একাদশকে হারিয়ে জয়ী হয়। ভলিবল প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিল ৬টি দল। ফাইনাল খেলায় শুঁড়িতাড়ি একাদশ বাঁশডিহা টিমকে ৩-০ তে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ব্যাডমিন্টনে এলাকার ৬টি দল যোগ দিয়েছিল। ফাইনালে পড়াডি একাদশ ২০-১৩ এবং ২০-১৬ গেমে কাঁঠালিয়াকে হারিয়ে জয়ী হয়েছে। প্রতিযোগিতা শেষে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিটি দল এবং খেলোয়াড়দের পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিআরপি এর ১৬৯ ব্যাটেলিয়নের ডিস্ট্রিক্ট কমান্ডান্ট বীরেন্দ্র কুমার, ওই ব্যাটেলিয়নের কোম্পানি কমান্ডান্ট কৃষ্ণকুমার রায়-সহ আরও অনেকে।

বাঁকুড়ায় ক্রিকেট
ডিওয়াইএফের জগদল্লা ২ নম্বর লোকাল কমিটির উদ্যোগে একটি ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সম্প্রতি বাঁকুড়া সদর থানার পোয়াবাগান মাঠে ওই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের খেলা হয়ে গেল। উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র-সহ আরও অনেকে। উদ্যোক্তা লোকাল কমিটির সম্পাদক মধুসূদন ডাঙর জানান, ১৬টি দল যোগ দিয়েছিল। বাঁকুড়ার নতুনগ্রাম অ্যাপেলো ক্লাব জয়ী হয়েছে।
সংক্ষেপে
ডিওয়াইএফ-এর জগদল্লা ২ নম্বর লোকাল কমিটির উদ্যোগে একটি ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সম্প্রতি বাঁকুড়া সদর থানার পোয়াবাগান মাঠে ওই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের খেলা হয়ে গেল। উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র-সহ আরও অনেকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.