ভদ্রেশ্বরে অনাস্থার পক্ষে কংগ্রেসও
তৃণমূল পরিচালিত পুরসভায় অনাস্থা আনল দলেরই একাংশ
দ্রেশ্বর পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার অনাস্থা জমা পড়ল জেলা প্রশাসনের কাছে। রিষড়া পুরসভার চেয়ারম্যান কে হবেন, সেই জট নিয়ে হুগলি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব রীতিমতো অস্বস্তিতে। রিষড়া-সমস্যার মীমাংসার আগেই এ বার জেলারই আরও এক পুরসভায় এই পরিস্থিতি। যা নিয়ে ফের বিড়ম্বনা আরও বাড়ল জেলা নেতৃত্বের।
ভদ্রেশ্বরে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের একাংশ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরাসরি বিদ্রোহে নেমে পড়েছেন। এর আগে ভদ্রেশ্বর পুরসভায় বামফ্রন্ট পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে জলঘোলা হয়েছিল। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তৃণমূল পুরবোর্ডের বিরুদ্ধেও অনাস্থা প্রস্তাব আসায় ফের একই জটিলতার মুখে পুরবোর্ড। চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে দড়ি টানাটানিতে পুর পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ। প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী শনিবার অনাস্থার উপর ভোটাভুটির দিন ঠিক হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২২ সদস্যের পুরবোর্ডে তৃণমূলের এক কাউন্সিলর মারা যান সম্প্রতি। এই মুহূর্তে ২১টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের সদস্য ১১ জন। কংগ্রেসের ৫ জন এবং সিপিএমের সদস্য সংখ্যা ৩ জন। নির্দল আছেন ২ জন। তৃণমূলের ৩ কাউন্সিলর বেঁকে বসেন পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। দলের এই ‘বিদ্রোহী’দের নেতা মহেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ। তিনি এক সময়ে পুরপ্রধান ছিলেন। দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি বর্তমান পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে আসছিলেন। কিন্তু এ বার দলের তিন কাউন্সিলর, কংগ্রেসের চার কাউন্সিলর এবং দু’জন নির্দল কাউন্সিলরকে তিনি পাশে পেয়েছেন। এঁরা সকলে অনাস্থা প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন। অর্থাৎ, অনাস্থা চান ৯ জন। অন্য দিকে, বামেদের বাদ দিলে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে আছেন ৯ জন কাউন্সিলর। এ ক্ষেত্রে ভোটাভুটি অবশ্যম্ভাবী।
মহেন্দ্রবাবু মূলত পরিষেবা এবং পুরসভার নানা কাজে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “বর্তমান পুরপ্রধান দলে তাঁর পেটোয়া সদস্যদের কাজ দেন। বৈষম্য করেন। তার ফলে কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ হলেও অন্যত্র হচ্ছে না। মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন পরিষেবা থেকে। তার উপর নানা অনিয়ম করছেন উনি।” দীপকবাবু পাল্টা বলেন, “ উনি যত দিন পুরসভার দায়িত্বে ছিলেন, নানা অনিয়মের আখড়া করে তুলেছিলেন। এখন নিজে পুরপ্রধান না থাকায় সে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গঙ্গায় বেআইনি বালি তোলা আর হচ্ছে না। তাই তিনি বিদ্রোহে নেমেছেন।” দীপকবাবুর সংযোজন, “ভদ্রেশ্বরের মানুষ জানেন, আমি কী ভাবে কাজ করছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট কাজের ভাগ করে সব করছি। পক্ষপাতিত্বের প্রশ্ন নেই। কাজ যদি না করতাম, সাধারণ মানুষ বললেই ছেড়ে দিতাম। অনাস্থা আনতে লাগত না।’’
দলীয় সদস্যদের আনা অনাস্থায় দল রীতিমতো বিব্রত। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “দলের সঙ্গে কোনও কথা না বলে কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাত করে অনাস্থা আনা হয়েছে। আমি সব পক্ষকে আলোচনায় ডেকেছি। বিষয়টি রাজ্য কমিটিকে জানিয়েছি। দলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।” দলেরই একটি সূত্রের খবর, মহেন্দ্রপ্রতাপের ‘আচার-আচরণ’ দলেই নানা প্রশ্ন রয়েছে। বছর কয়েক আগে তিনি এক ব্যক্তিকে গুলি করে জখম করার অভিযোগে গ্রেফতার হন।
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দিলীপ নাথ বলেন, স্থানীয় মানুষের পুর পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ আছে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও আছে। পুর বিষয়টি স্থানীয় ভিত্তিতে হচ্ছে। দল নজর রাখছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.