তুলো নেই সুতোকলে
তুলো সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত ৯ মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ হয়ে রয়েছে রায়গঞ্জের ওয়েস্ট দিনাজপুর স্পিনিং মিলে। ওই ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন সংস্থার কর্মী আধিকারিকেরা। উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না কর্মী এবং আধিকারিকেরা। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বকেয়া না-মেটানোয় স্পিনিং মিলে দুটি সংস্থা তুলো সরবরাহ বন্ধ করে। কর্মচারীদের অভিযোগ, সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁরা রাজ্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরকে অবহিত করলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে মিলের উৎপাদন ব্যবস্থা স্বাভাবিক করা এবং বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন ডান-বাম ৬টি শ্রমিক সংগঠন ও একটি অফিসার্স সংগঠনের সদস্যরা। ইউনাইটেড ফোরাম গঠন করে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দফতরের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া এবং উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়াকে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে। চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক বলেন, “স্পিনিং মিলের কর্মী আধিকারিকদের বেতন দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বকেয়া টাকা মিটিয়ে মিলের উৎপাদন ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার বিষয়টি রাজ্য সরকার খতিয়ে দেখছে।” ফোরামের মুখপাত্র নারায়ণচন্দ্র দেব বলেন, “কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও রাজ্য সরকারের বঞ্চনার জেরেই মিল প্রায় বন্ধের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। তুলোর দাম না মেটানোর দায় মিলের কর্মী আধিকারিকেরা কেনও নেবেন? মিলের একাধিক যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়লেও রাজ্য সরকারের নজর নেই। আসলে রাজ্য সরকার মিল কর্মীদের একাংশকে ছাঁটাই করে বেসরকারিকরণের চক্রান্ত করেছে।” মিল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থায়ী কর্মী ও আধিকারিক মিলিয়ে মোট ৫২৪ জন রয়েছেন। পাশাপাশি, ১৮০ জন অস্থায়ী কর্মী সেখানে কর্মরত। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য সরকার ভর্তুকি দেওয়া সত্বেও মিলটি লোকসানে চলায় অর্থ দফতর গত বছরের ডিসেম্বরে বেতনের বিল আটকে দেয়। কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত দিল্লির কটন কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া এবং রাজ্য সরকারের তাম্রলিপ্ত কো-অপারেটিভ স্পিনিং মিল নামে দুটি সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে ওয়েস্ট দিনাজপুর স্পিনিং মিলে তুলো সরবরাহ করে। ওই দুই সংস্থার তুলোর দাম বাবদ বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বকেয়া না-মেটায় গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে ওই দুই সংস্থা মিলে তুলো পাঠানো বন্ধ করে দেয়। বন্ধ হয়ে যায় সুতো উৎপাদন। চালু থাকার সময়ে প্রতি মাসে মিলে প্রায় দেড় থেকে দুই লক্ষ কেজি তুলো উৎপাদন হত। সুতো বিক্রি বাবদ প্রতি মাসে মিল কর্তৃপক্ষের প্রায় দেড় কোটি টাকা আয় হত। কর্মী আধিকারিকদের বেতন-সহ বিদ্যুতের বিল মেটাতে মিল কর্তৃপক্ষের প্রতি মাসে প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকার দরকার হয়। আয়ের টাকা কর্মী আধিকারিকদের বেতনের পাশাপাশি বিদ্যুতের বিল মেটানো হত। ৬৫ লক্ষ টাকা তুলোর দাম মেটানোর জন্য তা পর্যাপ্ত না-হওয়ায় রাজ্য সরকার মিল কর্তৃপক্ষকে প্রতি মাসে ৫০ লক্ষ টাকা করে ভরতুকি দিত। তাতেও তুলোর দাম পুরোপুরি মেটানো সম্ভব না-হওয়ায় বকেয়া ৮ কোটি টাকায় পৌঁছয়। মিল কর্মী গৌতম দেব, দুলাল পাল, অনিল ঘোষ, প্রদীপ দাস, ও পার্থ চক্রবর্তীরা বলেন, “তিন মাস বেতন না পেয়ে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা ও চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছি। এক অস্থায়ী কর্মী বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন। উৎপাদন শুরু হবে আশায় প্রতিদিন মিল চত্বরে অপেক্ষা করি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.