শ্রাদ্ধ-ফেরত দুর্ঘটনায় মৃত ৬
শ্রাদ্ধানুষ্ঠান থেকে বাড়িতে ফেরার পথে ট্রাকের সঙ্গে ছোট গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি থানার রানিরহাট এলাকায়। ওই ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও ৪ জন। জখমদের শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ছোট গাড়ির চালক এবং ২ মহিলা রয়েছেন। দুর্ঘটনার সময়ে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুটি গাড়িতেই আগুন লেগে যায়। এলাকার বাসিন্দা এবং দমকল কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভায়। তার আগেই মৃত ও জখম যাত্রীদের অধিকাংশই আগুনে ঝলসে যান। ট্রাকের খালাসি ছাড়া বাকিরা সকলেই ছোট গাড়ির সওয়ারি ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম বাসু বর্মন (১৫), মমতা রায় (১৬), নয়নচাঁদ বর্মন (১৯), গণেশ রায় (২৬), উমা রায় (৩৪) এবং বাবলু রায় (৩৫)।
নয়নচাঁদ, বাসু, উমা দেবী এবং মমতার বানি কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের শৌলমারি এলাকায়। বাকি দু’জন ময়নাগুড়ির জাবরামালি গ্রামের বাসিন্দা। গণেশ ছোট গাড়ির চালক। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত রায় বলেন, “ঘটনাস্থলেই ৪ জনের মৃত্যু হয়। আরও দু’জনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। জখমদের মধ্যে ট্রাকের চালক রয়েছেন।” এলাকার বাসিন্দারা জানান, দুর্ঘটনার দিন জাবরামালির জলট্যাঙ্কি এলাকার বাসিন্দা দীনেশ রায়ের মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছিল। মৃত এবং জখমদের কয়েকজন ওই অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশনের কাজও করেছিলেন। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে রাতে সকলে মিলে ওই ছোট গাড়িতে চড়ে বাড়িতে ফিরছিলেন। ওই সময়ে ভুটান থেকে মেখলিগঞ্জের দিকে যাওয়া ডলোমাইট বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে ছোট গাড়ির সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই ছোট গাড়ির চালক গণেশ-সহ ৪ জনের মৃত্যু হয়। দুটি গাড়িতে আগুন লেগে যাওয়ায় দেহগুলি বার করার আগে ঝলসে যায়। এলাকার বাসিন্দারা জখমদের বার করে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে ৪ জনকে শিলিগুড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ২ জনের হাসপাতালে মৃত্যু হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তথা জাবরামালি এলাকার বাসিন্দা এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জলপাইগুড়ি জেলার সম্পাদক রামমোহন রায় বলেন, “রাত ১১টা নাগাদ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি দুটি গাড়িই দাউদাউ করে জ্বলছে। দমকলে খবর দিয়ে স্থানীয় বসিন্দাদের সাহায্যে আগুন নেভানো হয়। গাড়ি থেকে ঝলসে যাওয়া ৪টি দেহ বার করা হয়। রাতে কেউই দেহগুলি শনাক্ত করতে পারেনি। সকালে মৃতদের পরিচয় জানা যায়।”
স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ রায় অভিযোগ করেন, দুটি গাড়ির প্রচণ্ড গতিতে চলছিল। মুখোমুখি সংঘর্ষে ছোট গাড়িটি দুড়ে মুচড়ে যায়। ছোট গাড়ির ছাদ কেটে দমকল কর্মীরা মৃতদেহ বার করেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই খোঁজখবর নেন রানিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রণীতা বর্মন। তিনি বলেন, “রাতে কিছুই বুঝিনি। পরে জানতে পারি শ্রাদ্ধানুষ্ঠান থেকে ফেরার সময়ে মৃত এবং জখমেরা এতবড় দুর্ঘটনায় পড়েছে।” রবিবার সকালে মৃতদের পরিচয় জানার পরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত বাসু বর্মন শৌলমারি হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। নয়নচাঁদ একাদশ শ্রেণির ছাত্র। নয়নচাঁদের জেঠা ধীরেনবাবু বলেন, “রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ফোনে দুর্ঘটনার খবর পাই। সঠিক ভাবে কিছু জানতে পারেনি। সকালে ময়নাগুড়ি থানায় গিয়ে ভাইপোর দেহ দেখতে পাই।” মমতা রায়ের বোন আলো দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন। তাঁদের দাদা শ্যামলবাবু বলেন, “মমতা ও আলো শ্রদ্ধানুষ্ঠান থেকে ফিরছিল। ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। সকালে খবর পাই, ওরা দুর্ঘটনায় পড়েছে।”

ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.