মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ
ফের বাজেট পাশ করানোর উদ্যোগ
নানা জটিলতা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত ২০১১-১২ আর্থিক বছরের বাজেট মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ সামনের ২৪ মার্চ পাশ করাতে উদ্যোগ শুরু হয়েছে। বামফ্রন্টের নিয়ন্ত্রণাধীন জেলা পরিষদের সাধারণ সভায় ওই বাজেট পাশ করাতে হবে। সাধারণ সভায় অবশ্য বামেরা সংখ্যালঘু। তবে কংগ্রেস আগের বারের মতোই এই বাজেট সভাতে ‘জেলার উন্নয়নের স্বার্থে’ বামেদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সাধারণ সভাতে বামেরা সংখ্যালঘু বলেই ওই বাজেট পাশ করানো যাচ্ছিল না। তার ফলে জেলার উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়েছিল। বিভিন্ন প্রকল্প আটকে গিয়েছিল টাকার অভাবে। তাই এ বার পর পর দু’টি আর্থিক বছরের বাজেট পাশ করিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। জেলাশাসক রাজীবকুমার বলেন, “২০১১-১২ আর্থিক বছরের বাজেট এখনও পাশ হয়নি। ২৪ মার্চ ওই বাজেট পাশ করানো হবে। ২০১২-১৩ আর্থিক বছরের যে বাজেট, তা-ও এই বছর ৩১ মার্চের মধ্যেই পাশ করাতে হবে। ২০১২-১৩ আর্থিক বছরের বাজেটের ব্যয় বরাদ্দের পাশাপাশিই চলবে তার আগের আর্থিক বছর অর্থাৎ ২০১১-১২ আর্থিক বছরের বাজেট বরাদ্দের কাজগুলিও।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি সিপিএমের পূর্ণিমা দাস বলেন, “বাজেট পাশ করানোর ব্যাপারে কংগ্রেসের লিখিত চিঠি পেয়েছি। আগামী ২৪ মার্চ বাজেট পাশের সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে।”
ওই বাজেট পাশ হলে তার সাত দিনের মধ্যেই ২০১২-১৩ সালের আর্থিক বছরের বাজেট পাশের জন্য ফের সাধারণ সভা ডাকা হতে পারে। পূর্ণিমাদেবী বলেন, “২০১২-১৩ সালের আর্থিক বছরের বাজেট আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে পাশ করতে হবে। ফলে পঞ্চায়েত আইনে কোনও বাধা না থাকলে ২৪ মার্চ বাজেট পাশের পাশাপাশি ২০১২-১৩ সালের আর্থিক বছরের বাজেটের খসড়া তালিকাও পেশ করা হবে।” সামনের শনিবারের ওই সাধারণ সভার কথা জানিয়ে জেলাপরিষদের সদস্যদের উদ্দেশ্যে চিঠি পাঠানো শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে ওই বাজেট পাশের দিন স্থির হয়েছিল গত বছর ২৩ জুলাই। কিন্তু সে সময়ে বাজেট পাশের তীব্র বিরোধিতা করে কংগ্রেস সদস্যরা। সভায় হাজির থেকেও সই করেননি তাঁরা। ফলে কোরাম না হওয়ায় তখন বাজেট পাশ করা সম্ভব হয়নি। ফের দ্বিতীয় বারের জন্য গত ১৩ মার্চ বাজেট পাশের সাধারণ সভা ডাকা হয়। ওই দিনও বাজেট পাশ থমকে যায়। কিন্তু জেলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ওই দিন স্পষ্টই জানিয়ে দেওয়া হয় যে, উন্নয়নের প্রশ্নে বাজেট-বিরোধিতা আর নয়। কংগ্রেস দলের তরফে গত শুক্রবার জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে লিখিত আকারে তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। তারপরেই ফের বাজেট পাশের সাধারণ সভা ডাকা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়ে যায়। জেলা পরিষদের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা তথা বিধায়ক কংগ্রেসের হুমায়ুন কবীর বলেন, “জেলার উন্নয়নের প্রশ্নে সাধারণ সভায় বামফ্রন্ট বাজেট প্রস্তাব পেশ করলে, আমরা তা সমর্থন করব।” সাধারণ সভায় এখন মোট সদস্য সংখ্যা ১০৯। কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট উভয়েরই এখন ৫১ জন করে সদস্য রয়েছেন। ৫৫ জনের সমর্থন লাগবে বাজেট পাশ করাতে। হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই দিন জেলা পরিষদের কংগ্রেসের স্থায়ী সদস্যদের সকলকে সভায় হাজির থাকার জন্য দলীয় তরফে হুইপ জারি করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনও সদস্য অনুপস্থিত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে দলবিরোধী আইন প্রয়োগ করা হবে।” তবে সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, “২০১২-১৩ আর্থিক বছরে উন্নয়নের খসড়া তালিকায় কংগ্রেসের সদস্যদের এলাকা উন্নয়নে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প ঘোষণা করা হচ্ছে কি না, খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি জেলার উন্নয়নে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের মতামত গুরুত্ব পাচ্ছে কি না, তা-ও দেখা হবে।”
সদ্য দলত্যাগী কংগ্রেসের বাণী ইস্রাইল অবশ্য বলেন, “মুখে সিপিএমের বিরোধিতা করলে কংগ্রেসের সঙ্গে গোপন আঁতাত রয়েছে, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বাজেট পাশ করানোর চিঠি দেওয়া থেকেই তা প্রমাণিত। এটা আমাদেরই নৈতিক জয়। আমরা উন্নয়ন বিরোধী নই। কিন্তু গত সাড়ে তিন বছর ধরে সিপিএম তথা বামফ্রন্ট আমাদের অবজ্ঞা ও অপমান করেছে, প্রতিবাদে আমরা বাজেট পাশে অংশ নিইনি। কংগ্রেস দল ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এখন সেই নীতিগত অবস্থান থেকে সরে যাওয়ায় বিষয়টি আমরা মানতে পারিনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.