তৃণমূলের ব্লক সম্মেলনে গোষ্ঠী-সংঘর্ষ, জখম ৫
লীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। রবিবার দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের পঞ্চায়েত রাজ সম্মলেন শুরুর আগে গোষ্ঠী সংঘর্ষে জখম হলেন জনা পাঁচেক। তাঁদের মধ্যে এক জনকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক অবশ্য বিষয়টিকে ‘সামান্য ঘটনা’ বলে দাবি করেছেন।
দলের উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের সমস্ত ব্লকেই পঞ্চায়েত রাজ সম্মেলন আয়োজিত হচ্ছে। আগামী পঞ্চায়েত ভোটের কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হচ্ছে এই সব কর্মী সম্মেলনগুলিতে। এর আগে জেলায় রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া ও মঙ্গলকোটে তৃণমূলের এই সম্মেলন ঘিরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। রবিবার লাউদোহায় সম্মেলন শুরুর সময়ে মঞ্চের বাইরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট শুরু হয়ে যায়। লাঠির ঘায়ে জখম হন জনা পাঁচেক।
হাসপাতালে শেখ ইউসুফ। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, এ দিন এলাকার কয়লা মাফিয়া শেখ আমিনের লোকজন একটি মিছিল করে সম্মেলনে ঢোকার চেষ্টা করে। তাঁরা বাধা দেন। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে মিছিলের লোকজন তাঁদের কর্মীদের উপরে চড়াও হয়। লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। সুজিতবাবুর অভিযোগ, “আমাদের দলের কর্মী শেখ খোকন, শেখ কামালকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তেরা ওই মিছিলে ছিল। খুনের ঘটনার সাক্ষী, আমাদের কর্মী শেখ সৈফুদ্দিনকে মারধর করেছে তারা।” সুজিতবাবু দাবি করেন, গণ্ডগোলে তাঁদের পক্ষের তিন জন জখম হয়েছেন। তাঁদের স্থানীয় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়েছে।
সংঘর্ষে জখম হয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শেখ ইউসুফ। মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁর মাথায় চোট রয়েছে। যে মিছিলটি সম্মেলনে ঢোকার সময়ে ঝামেলা বাধে, তাতে ছিলেন ইউসুফ। সেই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন ব্লক যুব তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য মানস মণ্ডল। মানসবাবুর অভিযোগ, “দলের একাংশ বিশেষ কোনও উদ্দেশ্যে এই ধরনের কাণ্ড ঘটাচ্ছে।” শেখ আমিনের লোকজনের মিছিলে থাকার কথা অস্বীকার করে তাঁর দাবি, “হাজারখানেক মানুষের মিছিল নিয়ে কোচডিহি মোড় থেকে যাচ্ছিলাম আমরা। মিছিলে যাঁরা ছিলেন তাঁরা সকলেই দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক হিসেবে পরিচিত।”
দলের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অস্বস্তিতে পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। গণ্ডগোলের সময়ে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। কিছু ক্ষণ পরে সম্মেলনে যোগ দিতে যান রাজ্যের আইনমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক মলয় ঘটক। দু’জনেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টি ‘সামান্য ঘটনা’ বলে দাবি করেছেন। অপূর্ববাবু বলেন, “দু’দল কর্মী-সমর্থকের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমন হয়েছে।” মলয়বাবুর কথায়, “একটা সামান্য ঘটনা ঘটে গিয়েছে। দু’পক্ষকেই বুঝিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হয়েছে।” এর পরে কর্মী সম্মেলন নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়েছে বলে তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন।
শনিবার কাঁকসা ব্লকের গোপালপুরেও তৃণমূলের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ছিলেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিদর্শক অলোক দাস প্রমুখ। নানা সময়ে কাঁকসাতেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। এই সম্মেলনে অবশ্য কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। দলীয় নেতৃত্ব গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে কর্মীদের একজোট হয়ে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াই করার আহ্বান জানান।
রবিবার কাটোয়া ১ ব্লকেও তৃণমূলের সম্মেলন হয়। সেখানেও কর্মীদের গ্রামে-গ্রামে সংগঠন বাড়ানোর পরামর্শ দেন দলের নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, আগামী পঞ্চায়েত ভোটে ভাল ফল করতে হলে দলীয় কোন্দল ভুলে এক সঙ্গে লড়াই করতে হবে। জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ বলেন, “সংগঠন বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।” রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের ওই সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি যেতে পারেননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.