নব্বই-এ আবার নতুন করে
মাসিক বসুমতী
পেন তো কিছু চায় না, ও শুধু বলে ওর ছোট দরজাটা যেন বড় হয়। তাই তো হয়েছে, আরও হবে।’ উপেন মানে উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। ছোট দরজা মানে বসুমতী-র দরজা। আর ওই কথাটি বলেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ। অনেকে তাঁকে বলতেন, ‘আপনি তো উপেনকে কিছু আশীর্বাদ করলেন না?’ তারই উত্তরে শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন ওই কথাটি। সেই ছোট দরজাটা বড় হয়েছিল, প্রায় অর্ধশতকেরও বেশি সময় জুড়ে বসুমতী সাহিত্য মন্দির এবং দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক বসুমতী চলেছে রমরম করে। কিন্তু তার পরে ক্রমেই দরজাটা ছোট হতে হতে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। তার পরে সরকার অধিগ্রহণ করে সংস্থাটি। এখন আবার নতুন করে বসুমতীর সেই ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি থেকেই প্রকাশিত হতে শুরু করেছে ‘মাসিক বসুমতী’।
১৯২২-এ প্রথম প্রকাশিত হয় ‘মাসিক বসুমতী’। পত্রসূচনায় লেখা হয়েছিল, ‘আমরা যথাসাধ্য সাহিত্যের সহায়তায় দেশের সেবা করিবার জন্য এই পত্রিকা প্রচারে প্রবৃত্ত হইয়াছি।...বিজ্ঞানের কথা, শিল্প-বাণিজ্যের কথা, ঐতিহাসিক কথা, কৃষি প্রভৃতির উন্নতির আলোচনা এই পত্রিকায় থাকিবে। আর পাঠকদিগের চিত্তবিনোদন করিবার উদ্দেশ্যে গল্প, উপন্যাস প্রভৃতি ইহাতে প্রকাশিত হইবে।’ পত্রিকার বর্তমান সম্পাদক ও বসুমতী কর্পোরেশন লিমিটেডের অধিকর্তা শ্যামল বিশ্বাস জানালেন, এই পুনঃপ্রকাশের উদ্দেশ্যও মোটের উপর তাই। প্রকাশিত প্রথম সংখ্যাটিতে পুরনো বসুমতী থেকে নানা লেখা, বিশিষ্ট জনেদের স্মৃতিতে বসুমতী। প্রকাশিতব্য দ্বিতীয় সংখ্যাটি দোল সংখ্যা। কবিতা-গল্পের পাশাপাশি থাকছে পুরনো কলকাতার দোল নিয়ে লেখা। প্রচ্ছদ করেছেন শুভাপ্রসন্ন। পত্রিকার পাশাপাশি নতুন করে প্রকাশিত হয়েছে মাসিক বসুমতীর সুবর্ণজয়ন্তী সংকলনটিও। কাজ চলছে নতুন বেশ কয়েকটি বইয়েরও, জানালেন সম্পাদক। বসুমতীর পুনর্জীবনের কাজটি শুরু হয়েছে তার সেই আদি ঐতিহ্যবাহী ভবনটিতেই, আনন্দের কথা, সন্দেহ নেই। সঙ্গে বাঁ দিকে নতুন সংখ্যার প্রচ্ছদ, ডান দিকে প্রথম বর্ষের প্রথম পৃষ্ঠা।

জাপান থেকে
ভিড়ের মধ্যে তাঁকে একেবারে খুঁজে পাবেন না। সাদামাটা, কলকাতাগন্ধী পোশাক। তিনি য়ুকিচি ইয়ামামাৎসু। নিবাস জাপান। মাতৃভাষা ছাড়া অন্য কিছুই বলতে পারেন না। যাও বা বলেন তা শোনা যায় না। ভারতীয়রা আলাপ করতে গেলেই কানচাপা দেন। বাপরে, এত চেল্লামেল্লি কীসের? য়ুকিচি এক জন মাঙ্গা শিল্পী। মাঙ্গা মানে জাপানি কার্টুন বা কমিকস। এতে ওঁদের সামুরাই অতীত ছাড়াও, আধুনিক সময়টাও ভীষণ ভাবে বর্তমান। সে রকমই কতগুলি চিত্র কাহিনি নিয়ে তিনি প্রথম বার দিল্লি আসেন, ২০০৫-এ। ভেবেছিলেন, বইগুলো হিন্দি অনুবাদ করে ছাপাবেন। কিন্তু দিল্লিতে যে এত ঝকমারি, সেটা আন্দাজ করতে পারেননি। কোনও রকমে কয়েকটা বই ছাপিয়ে দেশে ফিরে যান। সেই সব মজার কাণ্ড নিয়েই আরও একটা মাঙ্গা বই লিখে ফেলেন। ছবি সাদা কালো হলেও ঘটনাগুলি বেজায় ‘রঙিন’। চটপট অনুবাদ করে দেন কুমার শিবসুব্রমনিয়ন। স্টুপিড গাই গোজ টু ইন্ডিয়া নামের সেই বইটি নিয়ে সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। বইটিও বেশ আজবরকম, পড়তে হয় ডান দিক থেকে বাঁ দিকে। এটাই নাকি মাঙ্গা রীতি। ফেরার আগে কলকাতার খুদেদের নিয়ে বসে পড়লেন তিনি। মাঙ্গা ওয়র্কশপ। এ বার অবিশ্যি আর কোনও সমস্যা হল না। সঙ্গে দোভাষী ছিলেন ভাগ্যিস!প্রথমে পরিকল্পনা ছিল নাটক, পরে ভাবনাটা বদলে ফেললেন মধুবনী চট্টোপাধ্যায়, নৃত্যনাট্যে মঞ্চস্থ করবেন ‘রক্তকরবী’। শুরু রাজার গল্প দিয়ে, সেই জালবদ্ধ রাজা। কোথাও একটা সেই রাজা-র সঙ্গে নিজের সাম্প্রতিক অতীতের সঙ্কটের মিল খুঁজে পান মধুবনী। সেই সঙ্কট থেকে শিল্পের হাত ধরে উত্তরণের চেষ্টাই ‘রেড ওলিয়েন্ডার্স’। আনন্দ লালের ভাষান্তর, সঙ্গীত পরিচালনায় মনোজ মুরলী নায়ার। গান কিন্তু অনূদিত হয়নি। কারণ শুধু কথায় সীমাবদ্ধ নয় গানগুলির আবেদন, জানাচ্ছেন মধুবনী। চমকে দেওয়া মঞ্চ তৈরি করেছেন সঞ্চয়ন ঘোষ, আলো জয় সেনের। কেন্দ্রীয় সরকারি অনুদানে অভিনয় জি ডি বিড়লা সভাগারে, ২৩ নভেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায়। আয়োজনে ‘জাহ্নবী’।

রাজার দোল
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য
রাজা নবকৃষ্ণ দেবের দত্তক পুত্র গোপীমোহন ও নিজপুত্র রাজকৃষ্ণের দুই বাড়িতে দোল উৎসব হয় এক দিন আগেপিছে। গোপীমোহনের সপ্তমপুরুষ অলককৃষ্ণ দেব জানালেন, ‘এ বাড়ির গোপীনাথ জিউ-এর দোল হয় পর দিন। এ বারে উৎসবের ২৫০ বছর হল। আগে দিন সাতেক আগেই শুরু হত আয়োজন। আগের দিন সন্ধ্যায় আগুন ধরিয়ে গান গেয়ে চলত চাঁচর প্রদক্ষিণ। শেষে হরির লুঠ এবং পরস্পরকে ফাগ মাখানো। দোলের দিন ভোর চারটেয় প্রথম পুজো দেবদোল। গোপীনাথ জিউকে আবির দেওয়ার পর হয় নিজেদের মধ্যে খেলা। পরে হরেক মেঠাই নিয়ে মিষ্টি মুখকথা’। আড়াইশো বছর উপলক্ষে এ বছর বড় করে অনুষ্ঠিত হল দোল উৎসব। সন্ধ্যায় গানে গানে শ্রীকৃষ্ণ বন্দনায় মুখরিত হল সমস্ত অঙ্গন।

আখর
তিন কন্যে নাদিরা, আফরিন আর প্রিয়াঙ্কা। ওঁরা ‘আখর’। গত ছয় বছর দল বেঁধে গাইছেন লালন, হাসন, রাধারমণ, আব্দুল করিম, চটকা, ভাটিয়ালি সহ বাংলার নানা লোকগান। তবে প্রাধান্য পায় মূলত মেয়েদের গান। যেমন, ধান ভানা, ঘুমপাড়ানো, কনে সাজানো, জল ভরা, উনুনের ধোঁয়ায় কষ্ট লুকনো ইত্যাদি গ্রামের মেয়েদের অন্তরের গান। সঙ্গত হিসেবে থাকে বিভিন্ন লোকযন্ত্র। ১৫ মার্চ শিশির মঞ্চে সন্ধে ছ’টায় অনুষ্ঠিত হবে আখরের গান। অনুষ্ঠানে অ্যানিমেশন-এ দেখানো হবে উপেন্দ্রকিশোরের লোককথা অবলম্বনে ‘টুনটুনি ও বেড়াল’। সংবর্ধনা জানানো হবে লোকশিল্পী পূর্ণিমা খাতুনকে।

শুরুর কথা
মধুসূদন গুপ্তের প্রথম শবব্যবচ্ছেদ, হ্যালির ধূমকেতুর ফিরে আসা আর ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠা তিনটি ঘটনাই ১৮৩৬-এ, বলছিলেন কলকাতা গবেষক পি থঙ্কপ্পন নায়ার। এই গ্রন্থাগারের জন্য ৩০০ টাকা অনুদানে যুক্ত হয়েছিলেন বাবু দ্বারকানাথ ঠাকুর। মেটকাফ হলে এই গ্রন্থাগারের জন্য শেয়ারও বিক্রি হয়েছিল। পরে এখানেই গড়ে ওঠে জাতীয় গ্রন্থাগার। ১৭৫ বছর পেরিয়ে আসার স্মরণে সম্প্রতি জাতীয় গ্রন্থাগারের ভাষা ভবনে আয়োজিত হয়েছিল একটি আলোচনা ‘ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি অ্যান্ড ইটস ইমপ্যাক্ট অন নাইনটিন্থ সেঞ্চুরি লাইব্রেরি মুভমেন্ট ইন ইন্ডিয়া’। মূল বক্তা ছিলেন পি টি নায়ার। লাইব্রেরির সঙ্গে তিরিশ বছর যুক্ত ছিলেন প্যারীচাঁদ মিত্র। তাঁর একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপনের জন্য আবেদন জানানো হয় সভার পক্ষ থেকে।

আড়ালে
কিছু মানুষ চিরকালই থেকে যান পর্দার আড়ালে। সঙ্গীতের প্রতি তাঁর ছিল দারুণ প্রেম। শেষ দিন পর্যন্ত সেই ভালবাসাকে সযত্নে লালিত করে সম্প্রতি চলে গেলেন অরুণ চট্টোপাধ্যায়। দক্ষিণ কলকাতায় তাঁর নিজস্ব স্টাইলে তৈরি করা মজলিশ সেই কবে থেকে আলোকিত করে গিয়েছেন বিশিষ্টরা। উস্তাদ আমীর খান, পণ্ডিত নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, পণ্ডিত রবিশঙ্কর, পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, বিমান ঘোষ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় তাঁর আতিথ্য গ্রহণ করেছেন। ডোভার লেন মিউজিক কনফারেন্স-এর সঙ্গে তাঁর যোগ ছিল বহু দিনের।

তথাগত
শারীরিক অসুস্থতাকে জয় করে এখনও নিয়মিত কাজ করে চলেছেন নাট্যকার মোহিত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ‘আওরঙ্গজেব’ পেয়েছিল সর্বভারতীয় স্বীকৃতি। এ বার গৌতমবুদ্ধের বহু ব্যাপ্ত জীবন নিয়ে ওঁর কাজ ‘তথাগত’। নাট্যকারের কথায়, ‘ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকাতে হয়, দেখে নিতে হয় মানুষের চলমান সভ্যতার মিছিলে আলোকবর্তিকার মতো উঁচু কিছু মানুষের জীবন। প্রতি দিনের স্খলন আর বিপন্নতায় তাঁরাই আমাদের স্বপ্নসংগ্রাম আর উত্তরণের দিকচক্রবাল রেখা হয়ে এসে দাঁড়ান,... ভগবান নয়, এই তথাগত এক জন রক্তমাংসের মানুষ, দার্শনিক, চিন্তাবিদ, জনজাগরণের নেতা, সমাজ পরিবর্তনের পথিকৃৎ’। তিন হাজার বছর আগের সময় উঠে এসেছে জয় সেনের আলো, সঞ্চয়ন ঘোষের মঞ্চ ভাবনা আর দেবকুমার পালের কোরিয়োগ্রাফিতে। ভারত এবং চিনের বিভিন্ন বৌদ্ধসংঘ ঘুরে সঙ্গীত ও আবহ রচনা করেছেন দেব চৌধুরী, পালি-দেবনগরীতে স্তোত্রপাঠে শ্রীকান্ত আচার্য এবং পরিচালনায় তপনজ্যোতি দাস।

গীতি আলেখ্য
গায়ক-সঙ্গীতকার হিসেবে শেখর সেন ইতিমধ্যেই পরিচিত। বাবা-মায়ের কাছেই সঙ্গীত শিক্ষার সূত্রপাত। দেশ-বিদেশে অনুষ্ঠান করা ছাড়াও কাজ করেছেন কবীর, তুলসীদাস ও বিবেকানন্দকে নিয়ে। ছোট পর্দায় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ধারাবাহিকে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশতজন্মবার্ষিকীতে ওঁর একক অভিনয় ও গায়কীতে প্রস্তুত হয়েছে দু’ঘণ্টার আলেখ্য। বিলে-র ছেলেবেলা থেকে বিবেকানন্দের স্বামীজি হয়ে ওঠার পুরো বৃত্তান্তটি ধরা পড়েছে এই একক গীতি আলেখ্যে। কলকাতা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আগামী শনিবার সন্ধে ছ’টায় সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে দেখা যাবে শেখর সেনের নিবেদন ‘স্বামী বিবেকানন্দ’। সহায়তায় কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক।

কালজয়ী
‘সার্ধশতবর্ষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে যখন যাবতীয় হইচই, তখন কালজয়ী এই মহিলা কেন তমসাচ্ছন্ন থাকবেন?... তাঁরও তো সার্ধশতবর্ষ!’ প্রাক-কথনে লিখেছেন সুনীতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার প্রথম মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে লেখা কালজয়ী কাদম্বিনী ও তাঁর কাল বইয়ে কাদম্বিনীর সাফল্যকে কোনও ব্যক্তির মসৃণ ও একক উত্তরণ হিসাবে দেখা হয়নি। বরং, তৎকালীন বঙ্গসমাজের দ্বন্দ্বগুলির প্রেক্ষাপটে তাঁকে স্থাপন করে তাঁর মুখে ইতিহাসের আলো ফেলা হয়েছে। যাতে নারী হিসাবে কাদম্বিনীর সংগ্রামের চিহ্নগুলি এবং তাঁর পুরুষ সহযোদ্ধাদের প্রগতিশীল ভূমিকাও ভাস্বর হয়ে উঠেছে। ভূমিকা লিখেছেন এশিয়াটিক সোসাইটির প্রাক্তন সভাপতি অমলেন্দু দে। সম্প্রতি ভারতীয় ভাষা পরিষদে বইটি প্রকাশ করেন চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়।

বাহাত্তুরে
ওঁরা বাহাত্তুরে, ওঁরা স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের ১৯৭২-এর হায়ার সেকেন্ডারি ব্যাচ। দীর্ঘ সময়ের ব্যবধান সত্ত্বেও ২০০৫-এ তাঁরা মিলিত হয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্কুল স্কটিশের বাহাত্তুরে’। সকলকে জড়ো করা যায়নি। কেউ কেউ চলেও গিয়েছেন পৃথিবী ছেড়ে। তবুও নিতান্ত কম নয় তাঁদের সদস্য সংখ্যা। অনেকের চেহারা পাল্টে গিয়েছে, জীবন ও জীবিকা নানা রকম। তবু ফিরে দেখার স্মৃতি নিয়ে তাঁরা সপরিবার মিলিত হন। গানবাজনা খেলাধুলো বনভোজন আর অভিনয়ে গতানুগতিক দিনযাপনে লাগে নতুন রঙ। একে অপরের সুখদুঃখের সঙ্গী হন। গতকাল টালাপার্কের মোহিত মৈত্র মঞ্চে ওঁরা প্রকাশ করলেন স্কটিশ স্মৃতিসমৃদ্ধ সংকলন স্মৃতির নেশায়।

সামাজিক
এ বারেও দিন কয়েকের জন্যে গ্রাম-পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন সংস্থার মানুষজন, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রতিনিধিতে ভরে উঠবে কলকাতার নন্দন। ১৪-১৬ মার্চ, ১১তম ‘ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যাল কমিউনিকেশন সিনেমা কনফারেন্স’, রূপকলা কেন্দ্র-র উদ্যোগে, সঙ্গে নন্দন। মানব ও সমাজ উন্নয়নের নানা বিষয় নিয়ে ছোট-বড় তথ্য ও কাহিনিচিত্রের সমাহার। সঙ্গে তেমনই দেশভাগে সীমান্ত-পেরনো মানুষকে নিয়ে শুভা দাস মল্লিকের একটি ছবির স্থিরচিত্র। ছবি দেখানো ছাড়াও শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে আলোচনাচক্রের আয়োজন। উদ্বোধনে প্রয়াত তারেক মাসুদের ‘নারীর কথা’ ও ‘রানওয়ে’। ক্যাথরিন মাসুদের সঙ্গে সে-সন্ধ্যায় উপস্থিত থাকবেন জহ্নু বড়ুয়া রঞ্জিত মল্লিক হরনাথ চক্রবর্তী এবং সন্দীপ রায়।

সংকল্প
তাঁর জন্মদিন যেন বয়ে নিয়ে এল নতুন সংকল্প। গত ২ মার্চ, নাট্যব্যক্তিত্ব কুমার রায়ের জন্মদিনে ‘বহুরূপী’র উদ্যোগে আয়োজিত হল ‘কুমার রায় স্মৃতি সম্মান প্রদান’ ও স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠান। কুমারবাবুর স্ত্রী লতা রায় ও পুত্র ইন্দ্রপ্রমিতের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত ‘কুমার রায় স্মৃতি রক্ষা সমিতি’র সংকল্প, প্রতি বছর কলকাতা বা বিভিন্ন জেলায় যাঁরা সুস্থ নাটকের জন্য কাজ করে চলেছেন, কিন্তু অনুদান বঞ্চিত, তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে পঁচিশ হাজার টাকা। এ বারে এই পুরস্কার পেল ‘নবদ্বীপ ছন্দনীড়’। শিশির মঞ্চে অনুপ মতিলাল, স্বপন মজুমদার, প্রভাতকুমার দাসের উপস্থিতিতে সেই সন্ধ্যায় নবদ্বীপের আবেগ যেন সঞ্চারিত হল নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নাট্যকর্মীদের মধ্যেও। স্মারক বক্তৃতায় প্রায় এক ঘণ্টা কার্যত মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখলেন শঙ্খ ঘোষ, তাঁর ‘জানার বোধ’ শিরোনামের উপস্থাপনায়। গত বছর শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মারক বক্তৃতাটি ‘বহুরূপী’ এ বার পুস্তকাকারে প্রকাশ করেছে। শঙ্খবাবুর বক্তৃতাটিও সে ভাবেই দেখার প্রতীক্ষা রইল।

গানের গলা
সাঁতার-সাইকেল-ক্রিকেটের সঙ্গে তুখোড় ছিলেন অভিনয় আর গানেও, অথচ গান শেখেননি কখনও, সুরজ্ঞান বাড়ি থেকে পাওয়া। গানের গলা এত ভাল ছিল যে শ্যামপার্কে নিয়ে গিয়ে তাঁর গান শুনতেন অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘বহু বছর ধরে সিগারেট খেয়ে খেয়ে সে গানের গলা নষ্ট করে ফেলেছি’, খেদোক্তি রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের। যদিও তাঁর গলায় সম্প্রতি রবীন্দ্রনাথের ‘কার মিলন চাও বিরহী’ গানটি শুনে বিস্ময়ে মুগ্ধ দর্শককুল। নিজের লেখা নান্দীকার-এর নতুন নাটক ‘অন্ত আদি অন্ত’-এ গাইলেন রুদ্রপ্রসাদ। ‘কিছুতেই রাজি হচ্ছিলেন না, কিন্তু আমি চেয়েছিলাম উনিই গান। কারণ, ওঁর গলার timbre... যেটা গানটাকে নাটকটায় নানান মুড তৈরি করতে সাহায্য করছে।’ জানালেন স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত, নাটকটির সংগীত-চিন্তক, প্রয়োগে আছেন ময়ূখ-মৈনাক। দেবশঙ্কর হালদারের নির্দেশনায় এ-নাটকে অভিনয় করছেন সোহিনী সেনগুপ্ত ও দেবশঙ্কর, আগামী ৪ এপ্রিল অ্যাকাডেমি-তে সন্ধে ৭টায় আবার অভিনয়। দেবব্রত বিশ্বাসের গান আর শম্ভু মিত্রের আবৃত্তিতে প্রাণিত রুদ্রপ্রসাদ তালিম ছাড়া এমন গায়কী রপ্ত করলেন কী ভাবে জানতে চাওয়ায় তিনি বললেন ‘আমি শ্রুতিধর, মিউজিক্যাল মেমরি খুব প্রখর আমার।’

গবেষক
কলকাতায় জন্ম, পড়াশোনাও শুরু এই শহরেই। ঢাকায় চলে যান ১৯৫৩-য়। পরভীন হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি নিয়ে পড়ে সেখানেই পড়াতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৩-এ আমেরিকায় চলে যাওয়ার পর সব পাল্টে গেল। হার্ভার্ডে পিএইচ ডি করলেন বাংলাদেশের সুলতানি আমলের মসজিদ স্থাপত্যের উপর। একেবারে যাকে বলে ক্ষেত্রসমীক্ষা করে গবেষণা। দেশে ফিরে যোগ দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে, এখনও আছেন সেখানেই। তাঁর বিষয়ে যে আগেও কাজ হয়নি এমন নয়। আহমদ হাসান দানি কি মাহমুদুল হাসানের মতো পূর্বসূরিরা তো আছেনই, আছেন আরও অনেক নবীন-প্রবীণ গবেষক। কিন্তু যে স্বাধীন সুলতানদের আমলে বাঙালির নিজস্ব সত্তা তৈরি করার চেষ্টা শুরু হয়েছিল, সেই আমলের স্থাপত্যে বাঙালি ঘরানার ছাপ সত্যিই কী ভাবে বাংলাদেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা খ্যাত-অখ্যাত মসজিদে বিধৃত হয়ে আছে, তার সামগ্রিক ছবি তুলে ধরার চেষ্টা হয়নি। ২০০৭-এ লন্ডনের আই বি টরিস থেকে ছাপা হয়েছে তাঁর বই সুলতানস অ্যান্ড মস্কস: আর্লি মুসলিম আর্কিটেকচার অব বাংলাদেশ। পশ্চিমবঙ্গে এমন কাজ এখনও হয়নি, তবে সেন্টার ফর আর্কিয়োলজিক্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড ট্রেনিং প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। পরভীন সদ্য ঘুরে গেলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ আয়োজিত এ বি এম হবিবুল্লাহের শতবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনাচক্রে। বলে গেলেন, সুযোগ হলেই আবার আসব, এ বাংলায় অনেক কিছু দেখা বাকি আছে।
   


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.