বছরে কুড়িটি করে! পাঁচ বছরে একশোটি রকেট, আর তাতে করে মোট একশোটি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাবে চিন। অবশ্য, পাঠাবে বলা ভুল। পাঠানোর কাজটা গত বছর থেকেই শুরু করেছে তারা। এবং সে বছরই তারা ছাপিয়ে গিয়েছে আমেরিকাকে। ২০১১-তে নাসা ১৮টি রকেট উৎক্ষেপণ করেছে। আর চিন তাদের লং মার্চ রকেট পাঠিয়েছে ১৯টি। যেগুলিতে করে মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছে মোট ১৯টি উপগ্রহ, ‘টার্গেট অর্বিটর’ তিয়াংগং-১ ও মহাকাশযান শেনঝৌ। রকেট উৎক্ষেপণে চিন এখন তাই বিশ্বে এক নম্বরে।
গত বছর তবু তারা গড় লক্ষ্য কুড়িতে পৌঁছতে পারেনি। ‘২০১৫ সালের মধ্যে’ সেটা সম্ভব হবে বলে দাবি করেছেন চিনের অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কর্পোরেশনের উপ-অধিকর্তা ঝাং জি। তাঁর কথায় “দেশের মহাকাশ কর্মসূচির পক্ষেও এটা এক অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ।” |
চিনের লং মার্চ রকেট পরিবার |
প্রশ্ন হচ্ছে, গোটা বিশ্ব যখন ফের আর্থিক মন্দার কবলে পড়ার প্রবল আশঙ্কায় ভুগছে, সে সময় চিন কী করে এমন উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প হাতে নিয়েছে? আর্থিক প্রসঙ্গ নিয়ে এই প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন চিনের ওই মহাকাশ-কর্তা। তা হল, তাঁদের এই মহাকাশ-চর্চার অন্যতম উদ্দেশ্য অবশ্যই বাণিজ্য। লাতিন আমেরিকার ব্রাজিল থেকে শুরু করে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ-সহ বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে মহাকাশ সহযোগিতার চুক্তি বা সমঝোতা রয়েছে চিনের। তাদের নানা ভাবে উপগ্রহ-পরিষেবা দিয়ে থাকে চিন। উপগ্রহগুলির পাঠানো তথ্য জোগায় দেশগুলিকে। এ সব থেকে মোটা অঙ্কের আয় হয় বেজিংয়ের।
ঝাং জি জানিয়েছেন, শুধু ২০১১ সালেই সমস্ত খরচখরচা মিটিয়ে তাঁদের সংস্থা নিট ১০ হাজার কোটি ইউয়ান (প্রায় ১ হাজার ৫৮৭ কোটি ডলার) আয় করেছে।
এই আয় বছরে ২০ শতাংশ করে বাড়াবে বলে আশা করছে চিন। যে কারণে দেশের প্রচুর সংস্থা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও দেশের এই যজ্ঞে সামিল করা হয়েছে।
মন্দার বিশ্ব-বাজারেও বেজিংয়ের মন্ত্র এখন ‘মহাকাশ-বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’! তাতেই বেশ লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে তাদের। |