সুকনায় ফিরে জানালেন জাতীয় হকি দলের অধিনায়ক ভরত ছেত্রী |
ইওরোপ সফরের প্রস্তুতি কাজে আসবে অলিম্পিকে |
সৌমিত্র কুণ্ডু • শিলিগুড়ি |
লন্ডন অলিম্পিকে ‘ব্লু টার্ফ’-এর মাঠে খেলতে হবে ভরত ছেত্রী, সন্দীপ সিংহদের। এমন মাঠে খেলতে অভ্যস্ত হওয়ার এখন বিশেষ জরুরি হয়ে পড়েছে ভারতীয় হকি খেলোয়াড়দের। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির সুকনায় নিজের বাড়িতে ফিরে এ কথা জানিয়েছেন অলিম্পিকে অংশ নিতে যাওয়া ভারতীয় হকি দলের অধিনায়ক ভরত ছেত্রী। এ দিন তিনি জানান, দেশে ব্লু টার্ফের মাঠ পঞ্জাব ছাড়া অন্যত্র নেই। অথচ অলিম্পিকে ব্লু টার্ফের মাঠে খেলতে হবে তাঁদের। ওই মাঠে হকির বল হবে হলুদ রঙের। তাতে অভ্যস্ত হওয়াটা জরুরি। সামনে ইওরোপ সফরে যাচ্ছে দল। সেখানে ব্লু টার্ফে অনুশীলন কাজে লাগাতে চান ভারতীয় হকির অধিনায়ক। বেঙ্গালুরুতে ভরতদের ক্যাম্প শুরু হচ্ছে এ দিন থেকেই। আগামী ১৩ মার্চ তিনি শিবিরে যোগ দেবেন। এপ্রিলে লন্ডনে চার দেশের একটি টুর্নামেন্ট হবে। সেখানে অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ইংল্যান্ড-এর সঙ্গে খেলবেন তাঁরা। অলিম্পিকে সোনা জয় স্বপ্ন হলেও আপাতত সেমিফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার দিকেই বেশি জোর দিতে চাইছেন ভরতরা। |
তিনি বলেন, “বেজিংয়ের কাছে হেরে ১৯৯৮সালে আমরা অলিম্পিকে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি। তাতে ৮ বছর চলে গিয়েছে। তবে এ বার আমরা হারিয়ে যাওয়া ভারতীয় হকির সেই সোনালি অতীত উদ্ধার করব। সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছতে দলের সকলে বদ্ধপরিকর। সে দিকেই এখন নজর দিতে চাইছি। প্রতিটা ম্যাচ জেতাই আমাদের লক্ষ্য। দলের খেলোয়াড়রা সেটাই চাইছে।” খেলোয়াড়দের মধ্যে এই টিম স্পিরিট গড়ে উঠল কী ভাবে? অধিনায়ক জানান, দলে এখন নতুন প্রজন্মের গুরুত্ব বেশি। অধিকাংশ খেলোয়াড়ের বয়স ২৬ বছরের মধ্যে। সেটা দলে গতি আনতে সাহায্য করেছে। ভরতের কথায়, অভিজ্ঞতার চেয়ে ‘ফিটনেস’ এবং ‘দক্ষতা’-র উপর জোর দিচ্ছেন নতুন কোচ মাইকেল নবস। ৭ মাস দায়িত্ব নিয়েই তিনি নতুন প্রজন্মকে কাজে লাগাতে ঝাঁপিয়েছেন। পুরনো খেলোয়াড়দের অনেককে কাটছাট করেছেন। দলে রয়েছে সন্দীপের মতো বিশ্বের সেরা ড্র্যাগ-ফ্লিকার। খেলার গতি, বিপক্ষের উপর চাপ বাড়াতে আক্রমণের পদ্ধতি, কৌশল বদলেছে। দলে অলরাউন্ডারের গুরুত্ব বেশি। অর্থাৎ এক জন খেলোয়াড় বিভিন্ন জায়গায় খেলবেন। আক্রমণে যাঁরা উঠছেন তাঁরা ৬ মিনিট পর অন্য জায়গায় খেলছেন। তাঁদের জায়গায় অন্য জন উঠে আসছে। তাতে ম্যাচ চলাকালীন সব সময় সমান গতিতে প্রতিপক্ষের উপর আক্রমণের চাপ বজায় রাখা যাচ্ছে। লন্ডন অলিম্পিকে শেষ হাসি হাসতে অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, জার্মান এবং হল্যান্ডকে মূল বাধা হিসাবে দেখছেন তাঁরা। ১২ টি দলের মধ্যে পাকিস্তানকেও কিছুটা সমীহ করতে হবে বলে জানান। নিজের দেশকেই ফেভারিটের তালিকায় রাখছেন ভরত। এখনও হাতে ৫ মাস সময় রয়েছে। কঠিন পরিশ্রম করে সেই লক্ষ্যে যে এগোতে হবে তা জানেন ভরতরা। ২৬ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে ঘরের মাঠে যোগ্যতা অর্জনের টুর্নামেন্টের ফাইনালে ফ্রান্সকে ৮-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছিল তাঁরা। ছেলের খেলা দেখতে মাঠে হাজির ছিলেন বাবা কর্মবাহাদুর ছেত্রী, মা পার্বতী দেবী। এ দিন ছেলের সঙ্গে বাড়িতে ফেরেন তাঁরাও। অলিম্পিকের ছাড়পত্র মেলার পর বাড়ি ফিরতেই আত্মীয়-পরিজনরা এ দিন ভরতকে নিয়ে মেতে ওঠেন। |