ভূগর্ভের চিন্তা রাতারাতি বদল, জোর ধর্মতলা বাসডিপো উন্নয়নে
বায়ুদূষণ কমাতে ধর্মতলা থেকে বাস টার্মিনাস সরিয়ে ভূগর্ভে নিয়ে যাওয়া কার্যত সম্ভব নয় বুঝেই এ বার অন্য পথে হাঁটতে চায় পরিবহণ দফতর। তাই ধর্মতলা থেকে ওই বাসগুমটি পুরোপুরি তুলে না-দিয়ে বরং তার পরিকাঠামোগত উন্নতি এবং সেই সঙ্গে কিছু রুটের বাসকে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় কি না, তা নিয়ে সমীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার মহাকরণে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের সঙ্গে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের এক বৈঠকের পরে এ ব্যাপারে সায় দিয়েছে উভয় পক্ষই।
এ দিনের বৈঠকে পরিবহণসচিব, হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স ও রাজ্য পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা ছিলেন। বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠকে ধর্মতলার বাস টার্মিনাসকে ভূগর্ভে সরানোর ভাবনা কার্যত বাতিল করে দেন মদনবাবু। কারণ, তাঁর মতে, ওই এলাকা সেনাবাহিনীর এক্তিয়ারভুক্ত হওয়ায় ভূগর্ভ বাস টার্মিনাস তৈরির অনুমতি পাওয়া মুশকিল হবে। দ্বিতীয়ত, মাটির নীচে বাস টার্মিনাস তৈরির বিপুল খরচ জোগানোও কঠিন। সে জন্যই ভূগর্ভে বাসগুমটি গড়ার বিকল্প খুঁজছে রাজ্য। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে হাইকোর্টের কাছে নতুন করে আবেদন জানানোর ইঙ্গিতও দেন মদনবাবু।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের শুভ্রতা অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং কলকাতার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কলকাতা হাইকোর্ট ২০০৭-এ ধর্মতলা থেকে বাস টার্মিনাস সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। এ ব্যাপারে জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেছিলেন সুভাষবাবু। ধর্মতলায় বাস টার্মিনাসের জেরে যে দূষণ ছড়াচ্ছে, তা রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে সুভাষবাবুর মতামত নেওয়ার জন্যও রাজ্যকে পরামর্শ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই এ দিনের বৈঠক।
পরিবহণমন্ত্রীর যুক্তি, ধর্মতলা থেকে বাস টার্মিনাস সরিয়ে সব বাসই উত্তর বা দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পাঠিয়ে দেওয়া হলে কলকাতার ‘কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চলে’ পৌঁছনোর কোনও বাসই থাকবে না। আর ভিক্টোরিয়ার শুভ্রতা বজায় রাখতে হাইকোর্ট তিন কিলোমিটার পর্যন্ত খোলা জায়গায় উনুন জ্বালানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও বাস টার্মিনাসের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দূরত্বের কথা বলেনি। মদনবাবু জানান, ভিক্টোরিয়ার তিন কিলোমিটার পর্যন্ত অংশে, বিশেষত এসএসকেএম লাগোয়া এলাকায় উনুন জ্বালানো বন্ধ করতে রাজ্য ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে। ধর্মতলা বাস টার্মিনাস নিয়ে কী করা যায়, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতেও অবিলম্বে সমীক্ষার কাজ করতে চায় রাজ্য।
সুভাষবাবু জানান, এ দিনের বৈঠকে দু’টি বিষয়ে একমত হয়েছে দু’পক্ষ। প্রথমত, ধর্মতলার বাসগুমটির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করে বায়ুদূষণের মাত্রা (এখন যা স্বাভাবিকের তুলনায় সাত গুণ) কমানো যায় কি না, সে ব্যাপারে ‘নিরি’ (জাতীয় পরিবেশ প্রযুক্তি গবেষণা সংস্থা)-কে দিয়ে সমীক্ষা করানো। দ্বিতীয়ত, কিছু বাস বেহালা, উল্টোডাঙা, ই এম বাইপাস ও বিদ্যাসাগর সেতুর কাছে সরিয়ে নেওয়া যায় কি না, তা নগরায়ণ-বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পর্যালোচনা করা। সুভাষবাবুর আশা, “ধর্মতলা বাসগুমটির দূষণ কমানোর ব্যাপারে তিন মাসের মধ্যেই সুস্পষ্ট রূপরেখা তৈরি হয়ে যাবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.