ঢাকার রাস্তায় মধ্যরাতে খুন সৌদি কূটনীতিক
য়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীর গুলিতে মারা গেলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের কূটনীতিক খালাক আল আলি (৪৫)। খোদ রাজধানী ঢাকার কূটনীতিক পাড়া হিসেবে পরিচিত গুলশান এলাকায় খুন করা হয় তাঁকে। গত কাল গভীর রাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে একটি স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ সেখানেই ভোর পাঁচটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর বুকের বাঁ দিকে গুলির ক্ষত ছিল।
ঢাকায় কোনও বিদেশি কূটনীতিকের খুনের ঘটনা এই প্রথম। তা ছাড়া সৌদি আরবের কোনও কূটনীতিকের বাংলাদেশে খুন হওয়ার ঘটনার একটা আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। কম করে ২০ লক্ষ বাংলাদেশি বর্তমানে সৌদির বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তাই এই হত্যাকাণ্ডকে অশনি সংকেত হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশের রাজনীতিকদের একাংশ।
সহযোগী পুলিশ কমিশনার নুরুল আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গুলশান এলাকায় গত কাল রাত সওয়া একটা নাগাদ তাঁর বাড়ি থেকে সামান্য দূরে খালাকের বুকে গুলি করা হয়। গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন খালাক। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি বলেছেন, “বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্খিত। সৌদি সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল। এই ঘটনার কোনও প্রভাব আমাদের সম্পর্কের উপর পড়বে বলে মনে হয় না।” পুলিশ জানিয়েছে, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হালপাতালে ময়না তদন্তের পর খালাকের দেহ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সৌদি দূতাবাসে।
ঘটনাস্থলে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে সৌদি দূতাবাসের প্রতিনিধিরা। ছবি: এএফপি।
সৌদি দূতাবাসে নাগরিক সুবিধা-অসুবিধা সংক্রান্ত বিভাগটির দায়িত্বে ছিলেন খালাক। গত কাল রাত দেড়টার সময় গুলশানের ১১৭ নম্বর সড়কে পর্তুগাল দূতাবাসের নিরাপত্তারক্ষী জুলফিকার আলি এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা থানায় ফোন করে জানান। তখনই খালাককে উদ্ধার করে হালপাতালে ভর্তি করা হয়। তখনও ওই সৌদি কূটনীতিকের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। পরে, আজ সকালে সৌদি দূতাবাসের কর্তারা হাসপাতালে গিয়ে মৃত খালাককে শনাক্ত করেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর আজ ঢাকায় সৌদি দূতাবাস কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে খুনিদের দ্রুত শনাক্ত ও শাস্তির দাবি জানিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছেন। কিন্তু এ সম্পর্কে বেশি কিছু বলতে চায়নি তারা। তবে বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আবদুল্লা আল বুশায়েরি বাংলাদেশের একটি সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন, “গুলশান এলাকায় নিজের বাড়ির সামনে খুন হয়েছেন আমাদের কর্মী খালাক। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমরা আশা করি, দেশের সরকার খুনিদের ধরতে পারবে।” বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক ও বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি এই ‘বর্বরোচিত’ খুনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। খুনিদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশকে।
সৌদি দূতাবাস সূত্রে জানা গিয়েছে, গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কের ২২/এ নম্বর বাড়ির চার তলায় একাই থাকতেন খালাক। ওই ভবনের নিরাপত্তারক্ষী তাপস রেমা জানিয়েছেন, খালাক প্রায়ই নৈশভ্রমণে বের হতেন। খানিক পরে ফিরেও আসতেন। সোমবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ একটি জলের বোতল হাতে নিয়ে একাই পায়ে হেঁটে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু আর ফিরে আসেননি। আজ সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, খালাক তাঁর নিজের বাড়ির অদূরে যে সরু রাস্তার পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন সেখানে রক্তের দাগ রয়েছে সামান্যই। প্রশ্ন উঠেছে, বাড়ি থেকে প্রায় প্রতি রাতে সাইকেল নিয়ে বেরোলেও গতকাল খালাক সাইকেল ছাড়াই বেরিয়েছিলেন কেন? কেনই বা অত রাতে সানগ্লাস পরেছিলেন? রাত সাড়ে এগারোটায় খালাক যখন হাঁটতে বের হন তখনও রাস্তা ছিল জমজমাট। কিন্তু তাঁকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় যখন উদ্ধার করা হয়, তখন পথঘাট শুনশান। মাঝের দু-ঘণ্টা সৌদি কূটনীতিক কোথায় ছিলেন তা পুলিশের কাছে এখনও অজানা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.