বাঁকুড়া শহরের বেশ কিছু স্কুলের দেওয়াল যেন সিনেমার পোস্টারের হোর্ডিং-এ পরিণত হয়েছে। স্কুল হল বিদ্যা চর্চার প্রাণকেন্দ্র। তারই প্রাচীরে সিনেমার কুরুচিকর রঙিন পোস্টার টাঙানো থাকে। এই সব পোস্টার দেখে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে ঢোকে। বাড়ি ফেরার সময়ও চোখের সামনে এই সব দৃশ্য জ্বলজ্বল করে। এই দৃশ্য ছেলেমেয়েদের মনে কী প্রভাব ফেলে তা সহজেই অনুমান করা যায়। ছোটদের সিনেমা চর্চার প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। তাদের নির্মল মনে কুপ্রভাব ফেলে। স্কুল কতৃপক্ষও এ ব্যাপারে তেমন ভ্রূক্ষেপ করেন না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, বিদ্যালয় প্রাচীরকে এ ভাবে দৃশ্য-দূষণ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করুন।
শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়। বাঁকুড়া
|
নয় মাস পার হয়েছে নতুন সরকারের।
ভেবেছিলাম এই সরকার বেকার সমস্যা সমাধানে স্বচ্ছ নীতি গ্রহণ করবে। কিন্তু দিন দিন হতাশা বাড়ছে। সরকারি চাকরিতে নতুন নিয়োগ হচ্ছে আগের থেকে কম। বরং অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের দিয়ে সরকারি কাজ করিয়ে তেলা মাথায় তেল দেওয়া চলছে। এতে নতুন কর্মী নিয়োগের স্থান আরও সংকুচিত হচ্ছে। রাজ্যে বেকারের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। তা ছাড়া বিভিন্ন পদ্ধতিতে যে অল্প সংখ্যক অস্থায়ী বা স্থায়ী কর্মী নিয়োগ চলছে তাতে যোগ্যরা সুযোগ পাচ্ছে না। পিএসসি বা অনুরূপ মানের কোনও সংস্থা দ্বারা এক বিস্তারিত পরীক্ষার মাধ্যমে রাজ্যের সমস্ত সহায়ক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক এবং অন্যান্য পদে নিয়োগ করা হলে যোগ্য বেকারদের কর্মসংস্থান হবে। অন্যথায় শিক্ষিত বেকারদের সামনে অন্ধকার গাঢ় থেকে গাঢ়তর হবে।
শংকর পাত্র। জয়রামপুর, হাওড়া
|
দেশের অর্থমন্ত্রী বাদল অধিবেশনের আগে প্রতি বছর একটি কথা বলে থাকেন: এ বার বৃষ্টি ভাল হলে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়বে এবং ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি কমবে। কিন্তু চাষিরা আজ পর্যন্ত বুঝতে পারেন না, কোনও সরকারই সত্যিকারে চাষির উন্নতির চেষ্টা করে না। রাজনৈতিক প্রচারই প্রধান উদ্দেশ্য। নইলে প্রতি দিন চাষির মৃত্যুর ঘটনাগুলো সরকার শুধু খবরের কাগজের মাধ্যমেই পড়ে। এগিয়ে এসে খোঁজ নিয়ে এর মোকাবিলা করার চেষ্টা করে না।
সরকার ঘটা করে ঘোষণা করেছে, চাষির অভাবী বিক্রি রুখতে প্রতি বস্তা মোটা ধান ১০৮০ টাকা প্রতি কুইন্টাল দরে অর্থাৎ ৬৪৮ টাকা প্রতি বস্তা দরে কেনা হবে।
বাস্তবটা হল, চাষি নিজে গাড়ি ভাড়া করে দুই-চার জন শ্রমিকের বেতন দিয়ে ধান নিয়ে যাবেন ধানকলগুলিতে। এতে বস্তা পিছু পঁচিশ টাকা করে খরচ হবে। ইতিমধ্যেই সার, শ্রমিকের খরচ সব মিলিয়ে চাষির বিঘা প্রতি প্রায় ৬,০০০ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। অথচ ধানকল মালিকরা এমন ভাব করেন, যেন চাষিটিকে দয়া করছেন। এর পর ধানকল মালিকদের বক্তব্য, মাস দুয়েক পর জমির পড়চা সমেত ধান নিয়ে এসো। কিন্তু যিনি ভাগচাষি, তিনি কোথায় পড়চা পাবেন? জমির আসল মালিক কোন বিশ্বাসে ভাগচাষিকে জমির দলিল দেবে? এ তো গেল ধান দেবার সমস্যা। ধানে অপুষ্টি ও কাঁকড় দেখিয়ে বস্তা পিছু ২-৩ টাকা প্রতি কেজিতে বাদ। অর্থাৎ শেষমেশ প্রতি বস্তার মূল্য দাঁড়ায় ৬০২ টাকা। এর পর ধানের মূল্য বাবদ যে চেক দেওয়া হয়, সেটিতে এক মাস পরের তারিখ দেওয়া থাকে। ব্যাঙ্কে লাগে আরও পনেরো দিন। অর্থাৎ চাষি ডিসেম্বর মাসে ধান তুললে, তার মূল্য পাবেন মার্চ মাসে। যে চাষির আর্থিক সামর্থ্য আছে তিনি সমস্যা সামলে নেবেন, কিন্তু যাঁর নেই তিনি কি আপনাদের পত্রিকায় খবরের শিরোনাম হবেন?
সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার চিন্তাভাবনা যথেষ্ট সমর্থন যোগ্য। আগে তো কখন সরকার ধান কিনবে জানাই যেত না। তখন ফড়েরা যা দাম বলেছে তা-ই দিতে হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে আশা জাগিয়েও প্রশাসনের অযোগ্যতায় আখেরে লাভ কিছুই হচ্ছে না। চাষির সময় মতো দাম না পাওয়ার পেছনেও রয়েছে ফড়েদের হাত। কারণ ধানকল মালিকরা জানেন, সরকারের কাছ থেকে সহায়তা মিলবে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। তার পর ফড়েরাই ভরসা। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার বিষয়টি ঠিকমত রূপায়ণের জন্য প্রতিটি মিলে দিনে এক বার পুলিশ টহল দেওয়ার ব্যবস্থা করুন ও প্রকৃত তথ্য জানার চেষ্টা করুন। যে করেই হোক ফড়েরাজ নিয়ন্ত্রণ করুন। তবেই চাষিরা সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কিনতে পারবেন।
জগন্নাথ ঠাকুর। বর্ধমান
|
সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও নজরদারি চালানো উচিত। এরা মোটা টাকার বিনিময়ে রোগী ভর্তি করে নেন বটে, কিন্তু রোগী ঠিকমত চিকিৎসা কতটা পান সেই নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। প্রয়োজন না থাকলেও অনেক সময় সামান্য অসুস্থ রোগীদেরও আইসিইউ-তে ভর্তি করে নেওয়া হয় মোটা টাকার বিনিময়ে। রোগী সুস্থ হয়ে গেলেও সেখান থেকে জেনারেল বেডে সহজে দেওয়া হয় না।
দামি সব ওষুধ-ইনজেকশনের যে বিল ধরানো হয়, সেই সব ওষুধের কতটা রোগীর শরীরে ব্যবহার করা হচ্ছে আর কতটা আবার ফার্মেসিতে ফেরত যাচ্ছে তা জানার কোনও উপায় থাকে না। রক্তের প্রয়োজন বলে ডোনার খোঁজার জন্য রোগীর বাড়ির লোককে ব্যতিব্যস্ত করা হয়। অথচ তার কত বোতল রক্ত রোগীর শরীরে গেল সে হিসেব সাধারণ মানুষ কী ভাবে বুঝবে? ফলে এই বেসরকারি সব হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়ে সর্বস্বান্ত হতে হয় মধ্যবিত্তকে। এ বিষয়ে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী যদি কোনও পদক্ষেপ নেন তা হলে অসংখ্য মানুষ উপকৃত হবেন। নীলাংশু ধর। বাদকুল্লা, নদিয়া
|
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
আমাদের চিঠি,
সম্পাদকীয় বিভাগ,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১ |
|