খুন, ডাকাতি, চুরি, ছিনতাই বসিরহাট মহকুমা জুড়ে গত কয়েক মাস ধরে অপরাধমূলক কাজকর্ম বেড়েই চলেছে। পুলিশের দাবি, সব ক্ষেত্রেই ঘটনার তদন্ত চলছে। কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও অপরাধ বেড়ে চলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ক্ষোভ জমছে তাঁদের।
গত বছর অক্টোবরে বাদুড়িয়ার কাটিয়াহাটে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন যুব কংগ্রেস নেতা দেবকুমার অধিকারী। ডিসেম্বর জানুয়ারি মাসে খুন হন স্বরূপনগরের শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা, তৃণমূল নেত্রী সাগরিকা মণ্ডল। তিনি বাড়িতে রান্না করছিলেন। দুষ্কৃতীরা কাছ থেকে গুলি চালিয়ে তাঁকে খুন করে। চলতি মাসেই হিঙ্গলগঞ্জের যোগেশগঞ্জ বাজারে তিনটি সোনার দোকানে ভাঙচুর চালিয়ে দুষ্কতীরা কয়েক লক্ষ টাকার অলঙ্কার নিয়ে পালায়। ওই বাজারে পুলিশ চৌকি এবং নৈশপ্রহরার ব্যবস্থা রয়েছে। তা সত্ত্বেও কী ভাবে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে ডাকাতি সম্ভব হল, তা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। দোকান-বাজার বন্ধ রেখে, রাস্তা অবরোধ করে এবং পুলিশ চৌকি ঘেরাও করে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ কর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।
চলতি মাসেই সন্দেশখালির ন্যাজাটের কালীনগর কলেজে হামলা চালিয়ে দুষ্কৃতীরা নৈশপ্রহরীকে বেঁধে টাকা লুঠ করে পালায়। পুলিশ ফাঁড়ি থাকা সত্ত্বেও দাউদপুর বাজারে তিনটি দোকানে লুঠপাট চালিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। ঘটনার পরে বাজার বন্ধ রেখে পুলিশ চৌকি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। বসিরহাট থানার উত্তর কাঁকড়া গ্রামের সুশান্ত নাথের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার পরে এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। কেবল মাত্র এক জন ছাড়া আর কোনও দুষ্কৃতীকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উদ্ধার হয়নি খোয়া যাওয়া অলঙ্কার। ওই ডাকাতির সময়ে দুষ্কৃতীদের হাতে গুরুতর আহত সুশান্তবাবু এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সম্প্রতি মাটিয়ায় এক যৌনপল্লিতে এক মহিলাকে খুন করা হয়। এ ছাড়া, সীমান্তে গরু পাচার, অনুপ্রবেশ বা ছিনতাইয়ের ঘটনা তো রয়েছেই।
মহকুমায় এ ভাবে অপরাধমূলক কাজকর্ম বেড়ে যাওয়া নিয়ে পুলিশের একাংশের বক্তব্য, দুষ্কৃতীদের মধ্যে বেশির ভাগই বাংলাদেশি। চোরাপথে এসে অপরাধ করে তারা ফের বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ায় অনেককেই ধরা যাচ্ছে না। তা ছাড়া, প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা নতুন। এটাও তাদের ধরতে না পারার একটা বড় কারণ। সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোও জরুরি বলে মনে করছেন পুলিশকর্মীরা। |