দুবরাজপুরের ইয়ুথ কর্নার ক্লাব আয়োজিত ২৫তম শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল। গত শনিবার দুবরাজপুরের নেপাল মজুমদার ভবনে বাবা আলাউদ্দিন খাঁ নামাঙ্কিত মঞ্চে সারারাত ধরে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠান মুগ্ধ করল হলভর্তি দর্শক-শ্রোতাদের।
দুবরাজপুর শহরে ৩২ বছর আগে ১৯৭৯ সালে যাঁর উদ্যোগে প্রথমবার উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সম্মেলন শুরু হয়েছিল, তিনি ইয়ুথ কর্নারের কর্ণধার সোমেশ আচার্য। ২৫ ফেব্রুয়ারি সেই উদ্যোগের ২৫তম বর্ষপূর্তিতে সোমেশবাবু বলেন, “২০০৬ সাল পর্যন্ত একটানা এই অনুষ্ঠান চালাতে পেরেছিলাম। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যয়ভারের কারণে মাঝে কয়েক বছর তাতে ছেদ পড়ে। তার জন্য হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু কিছু মহৎ মানুষ এগিয়ে আসায় এবং শিল্পীরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় আবার এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হল।” |
সোমেশবাবুর দেখা স্বপ্ন পূরণে যে আক্ষরিক অর্থেই জেলার বহু সঙ্গীতপ্রেমীর মনোরঞ্জন হল তা বলাই বাহুল্য। শনিবার রাত ৯টা বাজার আগেই নেপালমজুমদার ভবনে জেলা ও জেলার বাইরে মিলিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রায় শ’পাঁচেক দর্শক-শ্রোতা। শিল্পীদের সম্বর্ধনা পর্ব শেষ করে রাত ১০টা নাগাদ মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমে ভারত নাট্যম পরিবেশন করেন মালবিকা সেন। ভারত নাট্যম নৃত্যশৈলীর গণেশ বন্দনা, দশাবতার-সহ একাধিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন শিল্পীরা। নৃত্যের রেশ কাটতে না কাটতেই মঞ্চে এলেন মানসী মজুমদার। তিনি গাইলেন রাগ যোগ। তবলায় ছিলেন উজ্জ্বল ভারতী। রাত ২টো নাগাদ মঞ্চে উঠলেন সরোদ শিল্পী পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার। বাজালেন রাগ মালকোষ। রাত সাড়ে তিনটে পার হয়ে গেলেও শ্রোতারা শিল্পীদের ছাড়তে চাইছিলেন না। প্রায় ভোর ৪টে নাগাদ শ্রোতাদের সামনে এলেন রাশিদ খান। বাগেশ্রী রাগের সুরবিহারে শ্রোতাদের মাতালেন তিনি। দুই কণ্ঠ শিল্পীর সঙ্গে হারমোনিয়ামে ছিলেন জ্যোতি গুহ। তবলায় সাহায্য করেন শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
সিউড়ি থেকে অনুষ্ঠান দেখতে আসা প্রদীপ অধিকারী, লাভপুরের উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় কিংবা রামপুরহাট থেকে আসা তারাশঙ্কর রায়দের মুগ্ধতা কিছুতেই কাটতে চাইছিল না। তাঁদের কথায়, “অসাধারণ একটা রাত কাটল। এই ধরনের অনুষ্ঠান দেখতে বহুদূর যাওয়া যায়।” জেলায় এই ধরনের অনুষ্ঠান খুব কম হওয়ায় খানিকটা আক্ষেপও রয়েছে তাঁদের।
|
সানন্দা টিভির ‘রঙের আনন্দে সানন্দা’ অনুষ্ঠানের শ্যুটিংয়ে দেব। দক্ষিণ
শহরতলির বোড়াল অঞ্চলের এক স্টুডিওয়। রবিবার। ছবি: সুমন বল্লভ |