জগদীশচন্দ্রের মৃত্যুর পরে তাঁর ভাগ্নে দেবেন্দ্রমোহন বসু মায়াপুরীতে মহাজাগতিক রশ্মি নিয়ে গবেষণার কাজ করেছেন। রাতের অন্ধকারে ফোটোগ্রাফিক প্লেটে এক নতুন কণার অস্তিত্ব টের পেয়েছিলেন তিনি। এই ফোটোগ্রাফিক প্লেট ভারতে কিন্তু সহজলভ্য ছিল না। ফলে গবেষণার কাজে বাধাপ্রাপ্ত হন দেবেন্দ্রমোহন। ফলে দেবেন্দ্রমোহন তাঁর আবিষ্কারের স্বীকৃতি পাননি। পরে বিজ্ঞানী সেসিল ফ্রঙ্কি পাওয়েল পরীক্ষামূলক ভাবে এই ‘মেসন’ কণার উপস্থিতি প্রমাণ করেন। ২০০৫ থেকে ভারত সরকারের আইআরএইচপিএ (ইনটেনসিফিকেশন অফ রিসার্চ ইন হাই প্রায়োরিটি এরিয়া) প্রকল্পের অধীনে এখানে মহাকাশ গবেষণার কাজ চলছে। তা ছাড়া প্রতি বছর উত্তর-পূর্ব ভারতের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি কর্মশালা ও আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয় বলে জানান বসু বিজ্ঞান মন্দিরের অধিকর্তা শিবাজি রাহা। এই কেন্দ্রের মহাজাগতিক রশ্মি ও বস্তুকণা নিয়ে গবেষণার দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক সঞ্জয় ঘোষ বলেন ‘‘বিশ্ব-উষ্ণায়ন এখন একটি চিন্তার বিষয়। এ প্রসঙ্গে এখানকার পরিবেশ গত বিজ্ঞানচর্চাও গুরুত্বপূর্ণ। সারা পূর্বাঞ্চলে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান খুব কমই আছে।’’ তিনি জানান, আবহাওয়ার মতো একটি জটিল বিষয় বুঝতে হলে এর ভৌত ও রাসায়নিক দিকগুলিও জানতে হবে ও পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সেই কাজটাই করা হচ্ছে এখানে। জগদীশচন্দ্রের উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞানচেতনা বৃদ্ধি, বিজ্ঞানচর্চার প্রসার। সেই কথা মাথায় রেখেই এই কেন্দ্রের উদ্যোগে ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞানচর্চায় উৎসাহিত করা হয়। দার্জিলিং-এর প্রায় কুড়িটি স্কুলে আবহাওয়ার গবেষণার কাজে যন্ত্রপাতি লাগানো হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেষজ বিজ্ঞানের দায়িত্বে থাকা প্রফেসর অভয়প্রসাদ দাশ মনে করেন এখানে একটি সুপরিকল্পিত ভেষজ উদ্যানও গড়ে তুললে জগদীশচন্দ্রকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি তা এলাকার শিক্ষা ও গবেষণার কাজে লাগবে। দার্জিলিংয়ের অর্থনৈতিক বিকাশেও এই ভেষজ উদ্যান সহায়ক হতে পারে। সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘প্রথম দিকে পরিকল্পনার মধ্যেই ছিল ভেষজ উদ্যানের বিষয়টিও। প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু কাজও হয়েছে। এ অঞ্চলে কী ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ পাওয়া যায়, তাদের নাম ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। কর্মীর অভাব ও পরিকাঠামো পর্যাপ্ত না থাকায় কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।’’ |