|
|
|
|
ফরাক্কা নিয়ে সমস্যা মানলেন প্রধানমন্ত্রী |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
ফরাক্কা বাঁধ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করে নিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার সন্ধ্যায় মহাকরণে বলেন, “ফরাক্কা ব্যারাজের কথা জানিয়ে আমি সোমবার (১৩ তারিখ) প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলাম। আজ তার উত্তর এসেছে। ওই চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।”
ফরাক্কা ব্যারাজের একটি লক গেট ভেঙে পড়ে রয়েছে গত ২৬ জুন থেকে। আর একটি ভেঙেছে ৯ ডিসেম্বরে। সেই সঙ্গে বাঁধের অন্য গেটগুলির অবস্থাও খুব ভাল নয়। তাই প্রচুর জল সেই ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ব্যারাজ কর্র্তৃপক্ষ কিছুই করেননি বলে অভিযোগ রাজ্যের। বুধবার বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত ফরাক্কায় গিয়ে
|
ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ
বেপরোয়া ভাবে তাঁদের দায়িত্ব
এড়িয়ে
গিয়েছেন। এটা ক্ষমাহীন কাজ।
মণীশ গুপ্ত,
বিদ্যুৎমন্ত্রী |
বলেন, “ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্পের কর্তৃপক্ষ বেপরোয়া ভাবে তাঁদের দায়িত্ব এড়িয়ে গিয়েছেন। এটা ক্ষমাহীন কাজ।” মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর, ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের দু’টি ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে রাজ্যের তরফ থেকে খোঁজখবর শুরু হয়। তখনই জানা যায়, ফরাক্কা ব্যারাজ থেকে জল সরবরাহে ঘাটতির জন্যই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ইউনিট দুটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে বিদ্যুৎমন্ত্রী এই দিন আশ্বাস দেন, “রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়নি।” তিনি এই দিন ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার অরুণকুমার সিংহের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের এক মুখপাত্র এ দিন মহাকরণে জানান, ব্যারাজের জলস্তরের উচ্চতা থাকার কথা ৭২ ফুট। কিন্তু তা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৬৫.৮ ফুটে। ভাঙা গেটগুলি এখনই মেরামত না-করা হলে এ রাজ্যে বিদ্যুৎ ও কৃষি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, “ফরাক্কার পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। ব্যারাজের ভাঙা অংশ দিয়ে হু হু করে জল বেরিয়ে পদ্মা নদীতে চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে জলচুক্তি রয়েছে, তার অনেক বেশি জল রোজই বেরিয়ে যাচ্ছে।” মুখপাত্রটি জানান, বিদ্যুৎমন্ত্রী ফিরে মুখ্যমন্ত্রীকে যে রিপোর্ট দেবেন, সেটিও কেন্দ্রকে পাঠানো হবে।
ফরাক্কা বাঁধে মোট লক গেট রয়েছে ১০৯টি। ফিডার ক্যানেলে রয়েছে আরও ১১টি গেট। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার নির্দেশে সেচ সচিব অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় ফরাক্কা পরিদর্শন করে এসে বুধবারই একটি রিপোর্ট জমা দেন মুখ্যসচিবের দফতরে। তাতে বলা হয়েছে, ব্যারাজের গেটগুলির অধিকাংশেরই অবস্থা শোচনীয়। দীর্ঘদিন মেরামতির অভাবে সেগুলি জলের তোড় সহ্য করতে পারছে না।
রিপোর্টে তিনি আরও জানিয়েছেন, গত বছর এই সময় যে-পরিমাণ জল ভাগীরথী নদীর ফিডার ক্যানালে পড়ত, এ বছর একই সময় তার চেয়ে প্রায় ৩৮ শতাংশ কম জল প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, এখন প্রতিদিন প্রায় ৪৬ হাজার কিউসেক জল বাংলাদেশে চলে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ভারত-বাংলাদেশ জলচুক্তি অনুসারে সুখা মরসুমে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার কিউসেক জলই প্রতিবেশী দেশকে দেওয়ার কথা ভারতের। কিন্তু ব্যারাজের গেট ভেঙে যাওয়ার ফলে তার অনেক বেশি জল বেরিয়ে যাচ্ছে গত সাত মাস ধরে। |
|
|
|
|
|