|
|
|
|
|
জেই ম্যাট |
চলছে ম্যানেজমেন্ট প্রবেশিকা জেই ম্যাটের আবেদনপত্র জমার পর্ব।
জেনে নিন পরীক্ষাটি সম্পর্কে কিছু তথ্য। লিখছেন কৌলিক ঘোষ। |
সারা ভারতে যেমন ক্যাট, ম্যাট বা জ্যাট। পশ্চিমবঙ্গে তেমনই জেই ম্যাট বা জয়েন্ট এন্ট্রান্স ফর ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট। রাজ্যে ‘এআইসিটিই’ স্বীকৃত প্রায় ৪২টি বিজনেস স্কুলে ম্যানেজমেন্ট পড়ার প্রবেশিকা পরীক্ষা। যেখানে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ও এমবিএ থেকে শুরু করে মাস্টার ইন হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট, মাস্টার ইন হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড অর্গানাইজেশন্যাল ম্যানেজমেন্ট-সহ একগুচ্ছ পাঠ্যক্রমে ভর্তির জন্য ফি-বছর বহু পড়ুয়াই মুখিয়ে থাকেন।
|
এই ম্যানেজমেন্ট প্রবেশিকার গুরুত্ব কতটা |
কেরিয়ার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাধারণ ভাবেই ম্যানেজমেন্ট পড়ার উন্মাদনা এখন অনেকটা কমেছে। যেমন, ফিউচার বিজনেস স্কুলের অধিকর্তা মৌসুমী ঘোষের মত, “এমবিএ পড়ার পর চাকরির বাজার খারাপ নয়। কিন্তু আগে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক করে পড়ুয়ারা ম্যানেজমেন্ট পড়তে যেত আরও ভালও চাকরির আশায়। এখন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেই চাকরি পেয়ে যাচ্ছেন অনেকে। তাই এমবিএ পড়ার তাগিদ কম।” পাশাপাশি আইআইএমের সংখ্যা ১৩ হয়ে যাওয়াতেও ক্যাট, ম্যাট বা জ্যাট দিয়ে ভর্তির প্রতিযোগিতা কিছুটা কমেছে বলে মত তাঁর। কিন্তু সার্বিক ভাবে ম্যানেজমেন্ট পড়ার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা কমলেও ইংরেজিতে সাবলীল, যোগ্যতাসম্পন্ন পড়ুয়ারা জেই ম্যাট দিয়ে ভাল কেরিয়ার গড়ার কথা ভাবতেই পারেন বলে মনে করেন মৌসুমীদেবী।
ভাল কেরিয়ার গড়ার জন্য খুব সতর্ক হয়ে কলেজ বাছার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন ক্যামেলিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান নীলরতন দত্ত। তাঁর মতে, ২০১১-এ রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে এমবিএ-র আসন পূরণ না হওয়ার কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আধিক্য। এগুলির প্রত্যেকটির মান ও পরিকাঠামো সমান নয়। তাই প্রার্থীরা অনেক ক্ষেত্রে এমবিএ পাঠ্যক্রম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
|
|
রাজ্যের ম্যানেজমেন্ট কলেজগুলিতে ভর্তির জন্য হয় জেই ম্যাট, নয়তো সর্বভারতীয় কোনও একটি পরীক্ষার বেড়া টপকাতে হয়। তবে রাজ্যেই যাঁরা এমবিএ পড়তে চান, তাঁদের পক্ষে সর্বভারতীয় পরীক্ষার তুলনায় জেই ম্যাটকে বেছে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের হবে বলে মনে করেন জে আই এস গ্রুপের কর্ণধার তরণজিৎ সিংহ। কারণ তাঁর মতে, প্রশ্নের ধরনধারণ এবং প্রতিযোগিতার দিক দিয়ে এটি ক্যাট, ম্যাট বা জ্যাটের থেকে অনেকটাই সহজ।
দুর্গাপুরের অন্যতম ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট অফ দুর্গাপুর (এমআইডি)-এর কর্ণধার রণীন্দ্রনাথ মজুমদারেরও মত, ম্যানেজমেন্ট পড়ে ছাত্রছাত্রীরা চাকরি ভালই পাচ্ছেন। কিন্তু বিজনেস স্কুলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায়, বিশেষত কলকাতা থেকে দূরের কলেজগুলি আসন ভরাতে বেশি সমস্যায় পড়ছে। যদিও পরিকাঠামো, পরিমণ্ডল, শিক্ষকমণ্ডলী বা প্লেসমেন্ট কোনও দিক দিয়েই তারা পিছিয়ে নেই। সে ক্ষেত্রে জেই ম্যাট পরীক্ষার প্রতি আলাদা করে আকর্ষণ কমে যাওয়ার কোনও যথার্থতা আছে বলে মনে করেন না রণীন্দ্রবাবু।
তবে রাজ্যের বিজনেস স্কুলগুলিতে ম্যানেজমেন্ট পড়ার প্রবণতা কিছুটা কমেছে স্বীকার করলেও, পরীক্ষাটির আয়োজক রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ম্যানেজমেন্টের অধিকর্তা অমিতাভ সরকার এ বছরের জেই ম্যাট নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী। তিনি জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীরা যে হারে খোঁজখবর নিচ্ছেন, তা আশাব্যঞ্জক। তবে কলেজগুলির প্রতি অমিতাভবাবুর পরামর্শ, পাঠ্যক্রমের আসন না-বাড়িয়ে শিক্ষার মান উন্নত করুক তারা। তাঁর মতে, কম ছাত্রছাত্রী নিয়ে ভাল ভাবে কোর্স চালালে চাকরির যেমন অভাব হবে না, তেমনই তার রেশ ধরে পরবর্তী সময়ে আসন পূর্ণ করতেও সমস্যাতে পড়তে হবে না।
|
কারা বসতে পারেন পরীক্ষায় |
যে কোনও বিষয়ে স্নাতক হলেই জেই ম্যাট দেওয়া যাবে। ২০১২-তে যাঁরা চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষায় বসছেন, তাঁরাও বসতে পারেন এই প্রবেশিকায়।
আবেদনপত্র কী ভাবে পাওয়া যাবে
রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট www.wbut.ac.in বা www.wbut.net থেকে আবেদনপত্র ডাউনলোড করুন। পূরণ করে ৮০০ টাকার ডিমান্ড ড্রাফট (তফশিলি জাতি, উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেণিভুক্তদের ক্ষেত্রে ৪০০ টাকা)-সহ অন্যান্য তথ্য (মার্কশিট, সার্টিফিকেট) জমা করুন রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
|
পরীক্ষার ধরন কী রকম |
দু’ঘন্টার পরীক্ষা। অবজেকটিভ ধরনের।
প্রথম ভাগে থাকবে ৪০ নম্বরের ইংরেজির প্রশ্ন।
দ্বিতীয় ভাগে ৪০ নম্বরের অঙ্ক।
তৃতীয় ভাগে ২০ নম্বরের লজিক্যাল রিজনিং ও সাধারণজ্ঞান।
লিখিত পরীক্ষার ধাপ পেরোনোর পর গ্রুপ ডিসকাশন, ইন্টারভিউ ও কলেজ বাছাই। এগুলিও পরিচালনার দায়িত্ব রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন স্কুল অফ ম্যানেজমেন্ট-এর। অমিতাভবাবু জানান, বহু ছাত্রছাত্রীর ধারণা কোনও প্রবেশিকা পরীক্ষা ছাড়াই স্নাতকোত্তরে ম্যানেজমেন্ট পড়া সম্ভব। কিন্তু ক্যাট, ম্যাট, জ্যাট (এ বছর থেকে সি-ম্যাট) বা রাজ্য স্তরের জেই ম্যাট পরীক্ষায় না বসলে ম্যানেজমেন্ট পড়ে আকর্ষণীয় কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন অধরা থেকে যেতে পারে।
|
কোথায় কেন্দ্র হবে |
কলকাতা উত্তর, দক্ষিণ, খড়্গপুর, দুর্গাপুর, বহরমপুর, শিলিগুড়ি, হাওড়া, কল্যাণী, হুগলি ও সল্টলেক।
|
মনে রাখুন গুরুত্বপূর্ণ তারিখ |
আবেদনপত্র জমা নেওয়া চলবে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। লেটফাইন দিয়ে তা দেওয়া যাবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষা হবে ১১ মার্চ। রেজাল্ট বেরোবে মার্চ-এর তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ। গ্রুপ ডিসকাশন, ইন্টারভিউ ও কাউন্সেলিং-এর তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। জেই ম্যাট-এ কী প্রশ্ন হতে পারে তার নমুনা দেওয়া রয়েছে রাজ্য প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে। |
|
|
খেয়াল রাখুন তথ্য সংকলন: কৌলিক ঘোষ |
|
আবেদনপত্র পূরণের বিষয়টি সহজ করে দিয়ে ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়াদের খাটনি কমাতে এবং সময় বাঁচাতে উদ্যোগী হয়েছে শিক্ষা সংক্রান্ত পোর্টাল ‘শিক্ষা ডট কম’। এই লক্ষ্যে, একটিমাত্র সাধারণ আবেদনপত্র পূরণের মাধ্যমেই দেশের বিভিন্ন বিজনেস ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য আবেদন করার সুযোগ চালু করেছে তারা।
সুবিধাটি নিতে পড়ুয়াদের প্রথমে শিক্ষা ডট কম ওয়েবসাইটে নিজের প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। যা ব্যবহার করে পছন্দ মতো কলেজে আবেদন করা যাবে বলে দাবি পোর্টাল কর্তৃপক্ষের। আবেদনপত্র পূরণের পর সাইট মারফতই তা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আবেদনের জন্য বরাদ্দ অর্থও মেটানো যাবে। এখনও পর্যন্ত ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট-নির্মা ইউনিভার্সিটি, টি এ পাই ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট, লয়লা ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, জেভিয়ার ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অন্ত্রেপ্রেনরশিপ, ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক এন্টারপ্রাইজ, আইএফআইএম বিজনেস স্কুল-সহ ১১টি প্রতিষ্ঠান এই ব্যবস্থায় সামিল হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কবে, কখন, কোন প্রতিষ্ঠান আবেদনপত্র দিতে শুরু করছে, সময়সীমা কী ইত্যাদিও জানা যাবে।
|
ফ্রন্টলাইন ইনস্টিটিউট অফ কম্পিটেটিভ এগজামিনেশন্স স্কুল সার্ভিস কমিশন আয়োজিত সহ-শিক্ষক হওয়ার পরীক্ষার পাশাপাশি অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি পরীক্ষার জন্যও প্রস্তুতি প্রশিক্ষণের নতুন মরসুম চালু করল। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রে ভর্তির জন্য যোগাযোগ করে নিতে পারেন। বিষয়টি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার জন্য ফোন করে নিতে পারেন ৯৮৩৬৪-৩৬৩৬৪ নম্বরে। দেখুন frontlineinstitute.com ওয়েবসাইট। |
|
উত্তর পেতে চিঠি লিখবেন কোন ঠিকানায়
আপনার প্রশ্ন বিশেষজ্ঞের উত্তর,
কাজের বাজার,
ব্যবসা বিভাগ,
৬, প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা- ৭০০০০১
ই-মেল করেও আপনার প্রশ্ন পাঠিয়ে দিতে পারেন: kajerbazar@abp.in |
|
|
|
|
|
|