|
|
|
|
|
|
|
আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব |
পদচিহ্ন |
এ শহরে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হয়, নাট্যমেলাই বা কেন আন্তর্জাতিক হবে না? শহরের হাওয়ায় হাওয়ায় সহজ প্রশ্নটা ঘুরছিল কিছু কাল আগে, নাট্যমেলার সময় থেকেই। জবাবও এসেছিল নানা রকম, পরিকাঠামোর অভাব, অর্থাভাব। কিন্তু ঘটনা, কিছু গ্রুপ থিয়েটার চেষ্টা করছে এ শহরের বুকেই আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব করার। সাম্প্রতিকতমটি ‘কালিন্দী ব্রাত্যজন’-এর। সওয়া তিন বছর বয়সের (প্রথম অভিনয়ের হিসেবে অবশ্য এখনও তিন পেরোয়নি) দলটি আয়োজন করে ফেলেছে একটি ‘আন্তর্জাতিক’ নাট্যোৎসবের। তার মূল আকর্ষণ নিশ্চয় কাশ্মীরের নাট্য ‘ওয়াত্তেপেড’, বাংলায় যার মানে ‘পদচিহ্নগুলি’। যে দলের নাটক এটি সেই ‘থিয়েটার ফর কাশ্মীর’-এর বয়সও নিতান্ত অল্প, এক। মাত্রই বছরখানেক আগে কাশ্মীরের কয়েক জন প্রবীণ ও নবীন নাট্যকর্মী উপলব্ধি করেন, কাশ্মীরের নাটককে উন্নত করতে হলে দশে মিলে কাজ করতে হবে। |
|
সেই লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠা ‘থিয়েটার ফর কাশ্মীর’-এর। আর আর্শাদ মুস্তাক নির্দেশিত তাদের প্রথম নাটকই প্রশ্ন তুলতে চেয়েছে নাগরিকের অধিকার এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিয়ে। অভিনয় অ্যাকাডেমিতে, ১৯ ফেব্রুয়ারি, উৎসবের শেষ দিনে। আহ্বায়ক ব্রাত্য বসু বলছেন, “শুধু বছরে একটা নাটক নামানোর মধ্যে একটা অসারতা আছে। আমরা সেটা কাটিয়ে উঠতে চাই।” ১৬-য় অ্যাকাডেমিতেই উৎসবের সূচনা করবেন ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-র চেয়ারপার্সন অমল আলানা। থাকবেন মহেশ ভট্ট। ওড়িশার নাট্যচেতনা-র ‘শশ’, অসমের সিগাল-এর ‘আকাশ’, থিয়েটার বাংলাদেশ-এর ‘ব্যারামখানা’, গোবরডাঙা শিল্পায়ন-এর ‘খোয়াব’, পূর্বপশ্চিম-এর ‘অশালীন’ ছাড়াও এই উৎসবেই প্রথম অভিনীত হবে দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের নিদের্শনায় ব্রাত্যজন-এর নতুন নাটক ‘চিরকুমার সভা’। থিয়েটার ফর কলকাতা-ই যেন! এ শহরের গ্রুপ থিয়েটারেও দশে মিলে কাজ করার ধারা শুরু হয়েছে। তাই, ব্রাত্যজন-এ সংসৃতি নাট্যগোষ্ঠীর নির্দেশক। সঙ্গের ছবিতে ‘ওয়াত্তেপেড’-এর একটি দৃশ্য। পুনশ্চ: উৎসবে থাকছে বিষ্ণু বসু স্মারক বক্তৃতাও, বলবেন অর্পিতা ঘোষ। |
শাশ্বত সাহসিনী |
বিনা সাজে, বিনা ভণিতায় এ মহানগরে, এবং আরও নানা শহরে ও গ্রামে মেয়েরা রোজ পেরোন দুর্গম গিরি, কান্তার মরু। কেউ দেখেন, কেউ দেখেন না, কেউ বা দেখেন শিল্পীর মন আর ক্যামেরার চোখ দিয়ে। তখন দৃশ্যের জন্ম হয়। তেমনই কয়েকটি স্মরণীয় দৃশ্যের সংকলন তারাপদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইটার্নাল শি (দে’জ, ৬০০.০০)। অচেনা সাধারণীদের সঙ্গে আছেন বিখ্যাতরাও। গ্র্যান্ড হোটেলের পার্টিতে সুচিত্রা সেন-সত্যজিৎ রায়, কিংবা ১৬ অগস্ট ১৯৯০-এর হাজরা মোড়, প্রহৃত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
|
বিস্মৃত চিকিৎসক |
ষোলো টাকা ভিজিট ছিল তাঁর প্রখর আত্মসম্মানের প্রকাশ। ঊনবিংশ শতকের শেষের দিকে ষোলো টাকার দাবিদার ছিলেন ‘সাহেব ডাক্তার’রাই। প্রথাটা ভাঙলেন নীলরতন সরকার, বাঙালির কাছে যিনি এখন এন আর এস-মাত্র। রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবর্ষে উদ্বেল শহরে নীলরতন সরকারের জন্মসার্ধশতবর্ষ নিয়ে টুকরো কিছু আলোচনাসভা ছাড়া হয়নি কিছুই। এন আর এস ছাড়াও আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ, বঙ্গীয় জাতীয় শিক্ষা পরিষদ ও তৎকালীন বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট (এখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়)-এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নীলরতন সরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিকিৎসা করেছিলেন। সুস্থ হয়ে কবি তাঁকেই উৎসর্গ করেছিলেন সেঁজুতি কাব্যগ্রন্থ। নীলরতন সরকার সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপন কমিটি ও এশিয়াটিক সোসাইটি রিক্রিয়েশন ক্লাব-এর আয়োজনে সোসাইটিতেই ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ‘নীলরতন সরকার ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: আত্মার আত্মীয়’ প্রসঙ্গে বলবেন চিকিৎসক শ্যামল চক্রবর্তী। সম্পর্কটির আর এক উপস্থাপন শর্মিষ্ঠা দত্ত পাঠক ও সুপ্তি চক্রবর্তীর গানে। পাঠে কৌশিক সেন। প্রকাশিত হবে স্মারকপুস্তিকা মানুষরতন নীলরতন।
|
‘ওরা’ |
প্রত্যেক বয়ান-এ তৈরি হয় একটি কেন্দ্র, সেই কেন্দ্রের সাপেক্ষে প্রান্ত আর সেই প্রান্তিক অবস্থানেই থাকে ‘ওরা’। দক্ষিণ এশিয়ার নিরিখে ইংরেজি সাহিত্যে এ ধরনের প্রান্তিকতার নির্মাণ প্রসঙ্গে আলোচনা নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন কলেজে। ইংরেজি বিভাগের উদ্যোগে, ইউজিসি এবং সাহিত্য অকাদেমি-র সহায়তায়, ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি। বিষয়, ‘এনগেজিং দি আদার ইন সাউথ এশিয়ান লিটারেচার ইন ইংলিশ: প্রবলেম্স অ্যান্ড পলিটিক্স অব রিপ্রেজেন্টেশন’। সূচনা কথনে জাতীয় গ্রন্থাগারের অধিকর্তা স্বপন চক্রবর্তী। অংশ নেবেন নেপালের ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তথা সাহিত্যিক ও মানবাধিকার কর্মী অভী সুবেদি, ‘জার্নাল অব কমনওয়েলথ লিটরেচার’-এর সহ সম্পাদক লিডস মেট্রোপলিটান ইউনিভার্সিটির ক্লেয়ার চেমবার্স, সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্ক-এর নিবেদিতা মজুমদার। থাকবেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণা সেন, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিস্টেল দেবদাসন। বিশেষ অতিথি নেপালের কনসাল জেনারেল চন্দ্রকুমার খিমিরে। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের ১৭৫তম আবির্ভাব বছরে এবং স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধজন্মশতবর্ষে এই আয়োজন। শুরু সকাল সওয়া দশটায়, কলেজ হলে।
|
একের মধ্যে তিন |
রবীন্দ্রনাথ ‘রাজা’ নাটক লেখা শেষ করেছিলেন ১৯১০ সালের ১০ নভেম্বর। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৯১১-য়। সেই বছরেরই মার্চ মাসে নাটকটি প্রথম বার মঞ্চস্থ হয়। রাজা ও ঠাকুর্দা, এই দ্বৈত চরিত্রে ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। কিছু পরে ‘অরূপরতন’ নামে নাটকটিকে একটি সংক্ষিপ্ত আকারও দিয়েছিলেন তিনি। ১৯১৪-য় ভারতীয় নাটক ‘রাজা’র ইংরাজিতে অনুবাদ হয়। নাম ‘দি কিং অব দ্য ডার্ক চেম্বার’। তার মঞ্চায়নও হয় ইউরোপে। সেই স্মরণীয় ঘটনার স্মৃতিতে এই প্রথম বার মাল্টিমিডিয়া মাধ্যমে মঞ্চস্থ হতে চলেছে ‘দি কিং অব দ্য ডার্ক চেম্বার’। উল্লিখিত তিনটি পাঠকে পুনর্নির্মাণ করে নাট্যরূপ দেওয়া হয়েছে। মঞ্চে শিল্পীরা অভিনয় করবেন, একই সঙ্গে চলবে ভিডিয়ো। ঠাকুর্দার চরিত্রে পরিচালক দেবাশিস রায়চৌধুরী। সুরঙ্গমা রোহিণী রায়চৌধুরী, রানি সুদর্শনা নিবেদিতা ভট্টাচার্য, বিক্রম ববি চক্রবর্তী। রাজার ভূমিকায় ব্রিটিশ কবি ও অনুবাদক উইলিয়াম রাদিচে। প্রথম অভিনয় ১৬ ফেব্রুয়ারি, সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায়, জ্ঞান মঞ্চে।
|
শেখরের ছবি |
এই সব ছবি তাঁর নিজস্ব ঘরানায় গড়া। কিন্তু, এই চিত্রায়ণ নজরকাড়া, কারণ, জলরঙ মানেই যে ছলছলে একটি রোমান্টিক অনুভব, তা থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছেন তিনি। শেখর রায়। আকৃতি আর্ট গ্যালারিতে ১৬ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে তাঁর একক প্রদর্শনী। ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেখা যাবে তাঁর সাম্প্রতিক কাজকর্মের এই ধারা। তাতে অন্ধকার আছে। ‘অ্যাকসেন্ট’ রং আছে। বিভিন্ন ‘ফমর্’-এর রূপারোপেও তাঁর নির্ভুল প্রকাশ। অথচ, তাদেরই অনচ্ছ এবং প্রায়-অনচ্ছ জলরঙে অন্য ভাবে প্রকাশ করেছেন তিনি। ছোট থেকে শুরু করে ত্রিশ বাই বারো ফুটের বিশাল চিত্রপটও থাকছে প্রদর্শনীতে। নিজেকেও কি নতুন করে দেখছেন, মাধ্যমের এই বাঁক-বদলের মধ্যে? প্রশ্ন শুনে শেখর হাসলেন। পরিচিত হাসি।
|
প্রকৃতি, স্মৃতি |
লেখক-শিল্পী অশোক চক্রবর্তী কানাডার প্রকৃতিতে খুঁজে পেয়েছিলেন সৌন্দর্য। জঙ্গল, নদী, স্রোত, গ্রাম, আকাশছোঁয়া গাছ বা জলের আয়নায় অরণ্য সবই তিনি রচনা করেছেন তেলরঙে। সঙ্গে কিছু বিমূর্ত চিত্রায়ণ। এ রকম কুড়িটি ছবি নিয়ে চিত্রকূট গ্যালারিতে শুরু হয়েছে অশোক চক্রবর্তীর একক প্রদর্শনী ‘কানাডিয়ান ল্যান্ডস্কেপ অ্যান্ড অ্যাবস্ট্রাক্ট পেন্টিংস্’। চলবে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতি দিন ৩-৮’টা। এ দিকে, ফেব্রুয়ারির ১৭-১৯ গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় থাকছে ‘স্মৃতিঘরের বাতিওয়ালা’ (২-৮’টা)। অভিজিৎ চক্রবর্তীর ক্যামেরা এবং অপ্রতিম মুখোপাধ্যায়ের ভাষ্যে উত্তর কলকাতার এক বিচিত্র বৃদ্ধের কাহিনি। তিনি পুরনো জিনিসপত্রের সংগ্রাহক, কিন্তু সেই সব সংগ্রহের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আশ্চর্য এক ভালবাসার। সেই ব্যক্তি, সুশীলকুমার চট্টোপাধ্যায়ের হাতেই প্রদর্শনীর সূচনা।
|
আদিপর্ব |
রবীন্দ্রনাথ দিয়েছিলেন একটি খাতা, উইলিয়ম রদেনস্টাইনকে। তাতে ছিল ‘গীতাঞ্জলি’র অনুবাদ। বাকিটুকু ইতিহাস। রদেনস্টাইনের কাছ থেকে সেই খাতা স্থান পায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হাউটনটন গ্রন্থাগারে। রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবর্ষ জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের উদ্যোগে ‘টেগোরস গীতাঞ্জলি: ফার্স্ট ড্রাফ্ট ম্যানুস্ক্রিপ্ট’ নামে ওই পাণ্ডুলিপি-খাতার এক অবিকল প্রতিলিপিগ্রন্থ সম্প্রতি প্রকাশিত হল এশিয়াটিক সোসাইটির বিদ্যাসাগর হলে। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি-সচিব জহর সরকারের উপস্থিতিতে বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে প্রকাশিত হল জাতীয় গ্রন্থাগার, কলকাতার উদ্যোগে অন্যান্য ভারতীয় সাহিত্যে রবীন্দ্র-প্রভাব নিয়ে গ্রন্থাগারের অধিকর্তা স্বপন চক্রবর্তী সম্পাদিত ‘নেমলেস রেকগনিশন: দ্য ইমপ্যাক্ট অব রবীন্দ্রনাথ টেগোর অন আদার ইন্ডিয়ান লিটারেচার’ নামে আর একটি গ্রন্থও। |
নবরূপে |
কোনও ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা বললেই সাধারণ ভাবে যে বিবর্ণ বইপত্রের ছবি মনে পড়ে, তাকেই বদলাতে চাইছেন তাঁরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা বিভাগ। “আমাদের লক্ষ্য স্বনির্ভর হওয়া। বিদেশের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনাগুলি চলে নিজেদের বই বিক্রির উপার্জনেই,” বললেন প্রকাশনার কর্ণধার, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক সমীরকুমার সাহা। বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে থাকবে না এই প্রকাশনা, যে কোনও গভীর গবেষণার বইপত্রই প্রকাশ করায় তাঁদের আগ্রহ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের ভূতপূর্ব অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরীর সাধারণ সম্পাদকত্বে, রেনেসাঁস চর্চাকেন্দ্র ও নেপলস ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হচ্ছে ইতালীয়-বাংলা অনুবাদমালা। আপাতত প্রকাশিত হয়েছে দুটি বই: নিক্কোলো মাকিয়াভেল্লির ইল প্রিঞ্চিপে-র দয়িতা মজুমদার-কৃত বাংলা অনুবাদ রাজপুরুষ এবং লেয়োনার্দো দা ভিঞ্চি-র নোটবুক-এর সুকান্ত চৌধুরী-কৃত অনুবাদ শিল্পচিন্তা।
|
ভ্রমরা |
১৭-১৯ ফেব্রুয়ারি সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘ভ্রমরা’ আয়োজন করেছে এক লোকসংস্কৃতি উৎসব। স্থান: পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র, সল্টলেক। থাকবে লোকবাদ্য প্রদর্শনী, লোকগান এবং আলোচনা সভা। লোকগানের দল হিসেবে ভ্রমরা’র সূচনা। লোকগান সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং প্রসারে তারা নিয়োজিত। তার পঞ্চাশ বছরে প্রকাশিত হল ‘শিকড়ের সন্ধানে’, বাংলা ও অসমের লোকশিল্পীদের লোকগানের ক্যাসেট ও সহায়ক পুস্তিকার সিডি।
|
শতক সেরা |
রবীন্দ্রসঙ্গীত, দ্বিজেন্দ্রগীতি, অতুলপ্রসাদী, বা রজনীকান্ত বাংলা গানের ব্যক্তিখচিত ধারাগুলির বাইরে, ছায়াছবির গানের পাশাপাশি, বিশ ও একুশ শতক জুড়ে বাংলা গানের ধারাটি বহমান। বিভিন্ন ব্যক্তিগত উদ্যোগে সে সব গানের তথ্যসংগ্রহ চলেছে। সেই সংগ্রহে ভর করে সারেগামা থেকে এল শতক সেরা গান। কালপর্ব ১৯০৪ থেকে ২০০০; দশটি সিডি-র অ্যালবামের শুরু লালচাঁদ বড়ালের গাওয়া ‘তুমি কাদের কুলের বউ দিয়ে’, শেষটিতে সুমন, অঞ্জন, নচিকেতা প্রমুখ। এই সংকলনের ভূমিকা লিখেছেন স্বপন সোম। যে-শহরে আজও বাংলা গানের কোনও আর্কাইভ গড়ে উঠল না, সেখানে ১৯৭টি আধুনিক গান কালানুক্রমে শুনতে পাওয়া বড় কম প্রাপ্তি নয়।
|
আজীবন |
লন্ডনের ‘রয়্যাল কলেজ অব গাইনকলজি’ থেকে ফেলোশিপ করেছিলেন। কিন্তু অঞ্জলি মুখোপাধ্যায় আমৃত্যু সঙ্গীতে নিবেদিত। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিক্ষা দাদা শিবকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। ১৯৬৯-এ কাজি নজরুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাতের পর আত্মনিয়োগ নজরুলগীতিতে। প্রয়াণ মাত্রই ৫১ বছব বয়সে। তাঁর আশিতম জন্মদিন উপলক্ষে ‘ভবানীপুর সঙ্গীত সন্মিলনী’তে উন্মোচিত হল তাঁর প্রতিকৃতি। শতাব্দী-প্রাচীন এই সংস্থাটির পক্ষ থেকে দেবেশ মুখোপাধ্যায় জানালেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি উন্মোচিত হবে সঙ্গীত শিল্পী বিমান মুখোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিও।
|
রসনার ঋতু |
ইস্তাম্বুল গিয়ে, জাপান-প্যারিস গিয়ে তিনি শিখেছেন এই সব রান্না। না, ভজহরি মান্না নন, তিনি ঋতু ডালমিয়া। এ বারের বইমেলার থিম-দেশ ছিল ইতালি। তার ঠিক মুখে-মুখে বাঙালির ইতালি-বাসনায় কিঞ্চিৎ স্টার্টার জুগিয়ে গেলেন ঋতু। ইতালিয়ান রান্নার জন্যই রীতিমত পরিচিত তিনি, দিল্লিতে তাঁর রেস্তোরাঁ ডিভা, কাফে ডিভা আর ল্যাটিটিউড ২৮ ইতালি-রসনায় জল আনে। তাই রান্না নিয়ে তাঁর প্রথম বই ইতালিয়ান খানা। সেটা প্রকাশিত হওয়ার পরেই ঋতু ভেবেছিলেন, আর নয়, এটাই হোক প্রথম এবং শেষ বই। কিন্তু না, প্রাজ্ঞজন বলে থাকেন, ‘নেভার সে নেভার’। তাই এ বার ঋতু-র দ্বিতীয় বই, ট্র্যাভেলিং ডিভা: রেসিপিজ ফ্রম অ্যারাউন্ড দি ওয়ার্ল্ড (হ্যাচেট ইন্ডিয়া)। বর্মা থেকে বালি, ইস্তাম্বুল থেকে এডিনবরা বিখ্যাত থেকে প্রান্তিক নানা হেঁশেলে হানা দিয়েছেন ঋতু, শিখে এসেছেন আজব সব রান্না। সে সবেরই পাকপ্রণালী নিয়ে তৈরি বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করতে এ শহরে এসেছিলেন এই শেফ। এলগিন রোডের ক্রসওয়ার্ড বুকস্টোরে জিভে-জল-আনা এক সন্ধেয় শোনাচ্ছিলেন নানা স্বাদের গল্প। সে সবে মোহিত কেউ বলতেই পারেন ইতালীয় প্রবাদটি: ‘আ ম্যান অ্যাট আ ডিনার টেবল উইথ ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলি নেভার রিয়েলি গেটস ওল্ড’। |
|
|
|
কবি |
আমার মনে হয় কবিতাই আমার মাতৃভাষা। সারা জীবনে আমি প্রচুর গদ্য লিখেছি। খবরের কাগজে কাজ করেছি, কত রকম গদ্য লিখেছি। কিন্তু... কেবলই মনে হয়, কবিতাকে ফাঁকি দিয়ে, তার থেকে সময় চুরি করে নিয়ে আমি গদ্যকে দিচ্ছি। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মাস দু’য়েক আগের এই সাক্ষাৎকার থেকে যদি ফিরে যাই তাঁর যৌবনবেলায়, তখনও তিনি কবিতাস্পৃষ্ট, জীবনানন্দের ধূসর পাণ্ডুলিপি পড়ে মনের মধ্যে ওলটপালট ‘কলেজ ছুটির পরে, বাড়ি না-ফিরে, ভূতগ্রস্তের মতো আমি তখনকার সেই জনবিরল আমহার্স্ট স্ট্রিটের ফুটপাথ ধরে উদ্দেশ্যহীন ঘুরে বেড়াই।’ আদ্যোপান্ত কবি-মানুষটিকে প্রথম চিনেছিলেন তাঁর বন্ধু, আর-এক কবি অরুণকুমার সরকার, দিলীপ গুপ্তের সিগনেট থেকে নিজের নেপথ্য উদ্যোগে নীরেন্দ্রনাথের প্রথম কবিতার বই নীলনির্জন (১৯৫৪) বের করে তাঁকে বলেছিলেন ‘কবিতা না লিখলে তুই তো মারাই যাবি।’ কবিকে (জ. ১৯২৪) ফিরে পাওয়া গেল সদ্য-সমাপ্ত বইমেলায়, কোরক-এর (সম্পা: তাপস ভৌমিক) ‘নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সংখ্যা’য়। কবির পাশাপাশি ছড়াকার, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, গদ্যকার, গোয়েন্দা-গল্পকার, শিশুসাহিত্যিক, ভ্রমণ-কাহিনির লেখক, সম্পাদক, বানান-বিশেষজ্ঞ নীরেন্দ্রনাথকে চেনা গেল; জানা গেল, আত্মজীবনীর বাকি অংশটুকু দ্রুত শেষ করে ফেলতে চান তিনি। তাঁকে নিয়ে লিখেছেন বহু বিশিষ্ট জন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়: “তাঁর ‘কলকাতার যিশু’ এবং ‘উলঙ্গ রাজা’ তো এর মধ্যেই প্রবাদে পরিণত হয়েছে। ‘অমলকান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল’ এই লাইনটাও অনেকেরই মুখে মুখে ফেরে।” |
|
|
|
|
|
|
|