আই টি পি এ-র আর্জি রাজ্যকে
চা শিল্পের উৎপাদন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে শ্রমিকদের সামাজিক ব্যয়ের দায় মালিকদের কাঁধ থেকে নামানোর জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানাল ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইটিপিএ)। এই কাজে ১৯৫১ সালের প্ল্যান্টেশন লেবার অ্যাক্ট সংশোধন করা আবশ্যক বলে চা মালিকদের বক্তব্য। বীরপাড়ায় অনুষ্ঠিত বাগান মালিক সংগঠন আইটিপিএ-র ৬৩ তম বার্ষিক সম্মেলনে মূলত ওই সামাজিক ব্যয়ের উপরে জোর দেওয়া হয়। আইটিপিএ’র চেয়ারম্যান শিবকুমার কল্যাণী বলেন, “চা বাগানের বর্তমান পরিস্থিতি টিঁকিয়ে রাখার জন্য সামাজিক খরচ কমানো অত্যন্ত জরুরি। বাগানের বস্তিগুলি এক একটি গ্রামের মতো। বেতন ছাড়াও শ্রমিকদের বাসস্থান, রেশন, নিকাশি নালা, পানীয় জল, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ-সহ নানাদিকের খরচ মেটাতে হয় মালিকদের। বিদেশে যা মালিকদের মেটাতে হয় না। স্থানীয় সরকার সেই ব্যবস্থা করে। এখানে সে ব্যবস্থা করা হলে চা শিল্পে মন্দা দশা থাকবে না।” মালিকদের সংগঠনের কর্তারা জানান, কেনিয়া ও শ্রীলঙ্কার চা বাগান ভারতের মতো শ্রমিকদের সামাজিক খরচ বহন করতে হয় না। সে জন্য ওই দুই দেশের চায়ের উপাদন খরচ এ দেশের তুলনায় অনেক কম। ভারতের তুলনায় অনেক কম খরচে ওই দেশগুলি থেকে চা মেলায় সহজে বিদেশের বাজার তাদের দখলে চলে আসে। ২০০০ সাল থেকে ধুঁকতে শুরু করে ডুয়ার্স ও তরাইয়ের সিটিসি চা বাগানগুলি। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কেনিয়ার চা উপাদন মার খাওয়ায় ২ বছর ধরে ফের বিদেশে চাহিদা বাড়ে ভারতের। সিটিসি চায়ের ২০১১ আর্থিক বছরে ৯৯০ মিলিয়ন কেজি চা উপাদন হয়েছে। প্রায় ১৬০ মিলিয়ন কেজি চা বিদেশে রফতানি হয়েছে। বহু বছর বাদে এ বার বিশ্বের দ্বিতীয় সিটিসি চা আমদানীকারি দেশ পাকিস্তান ভারত থেকে চা কিনেছে। শ্রমিকদের রেশন দেওয়া নিয়েও অন্য রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্যে বৈষম্য রয়েছে বলে চা মালিকরা অভিযোগ করেছেন। অসমের শ্রমিকদের রেশনের পুরো খাদ্য সামগ্রী কম দরে মালিকরা খাদ্য দফতর থেকে কিনে বিলি করেন। পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য সামান্য চাল, গম বাগানের শ্রমিকদের জন্য মালিকদের সরবরাহ করে সরকার। একজন শ্রমিক ৪০ পয়সা কিলো দরে সপ্তাহে চাল-গম মিলিয়ে ৩ কেজি ২৬০ গ্রাম পরিমাণ পান। এর মধ্যে চালও গম মিলিয়ে ১৭৫০ গ্রাম ৮ টাকা দরে কিনতে হয় খাদ্য দফতর থেকে। বাকি আনাজ খোলাবাজারে ১১-১২ টাকা কিলো দরে কিনতে হয়। অন্য রাজ্যের তুলনায় এ বিষয়ে বৈষম্য থাকায় রেশন দিতে ব্যাপক খরচ বাড়ছে মালিকদের। আইটিপিএ’র সচিব অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, “সামাজিক খরচের কিছু অংশ বহণ করবে বলে এর আগে রাজ্য সরকার বৈঠকে মালিকদের জানিয়েছিল। এখনও তা চালু হয়নি।” এদিকে ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজের জন্য ১৩০ টাকা দৈনিক মজুরির লোভে বহু শ্রমিক বাগান ছেড়ে বাইরে পঞ্চায়েতের কাজে চলে যাওয়ায় শ্রমিক সংকট তৈরি হচ্ছে বাগানগুলিতে। মালিকদের এই শ্রমিক সঙ্কটের কথা শোনার পর সভায় আমন্ত্রিত আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক টি বোর্ডের সদস্য দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “বাগানের বাইরে নয়, বাগানের ভেতর নিকাশি তৈরি-সহ নানা কাজে শ্রমিকদের ১০০ দিনের কাজ করানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশের সঙ্গে আলোচনা করব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.