আদিগঙ্গা সংস্কারে পরিকাঠামো নেই, কোর্টে বলল পর্ষদ
কালীঘাট সংলগ্ন আদিগঙ্গার হাল দেখে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে রিপোর্ট দিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। তাতে তারা সোজাসুজিই জানিয়ে দিল, যে সব কারণে নদীর এই হাল, তা শোধরানোর পরিকাঠামো তাদের নেই। নদী সংস্কারের জন্য রাজ্যের কিছু দফতর ও পুরসভাকে একযোগে কাজ করতে হবে। শুক্রবার আদালতে সেই রিপোর্ট পেশের পরে প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি জনস্বার্থের মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় আগামী ২০ জানুয়ারি রাজ্যের মুখ্যসচিব, সেচসচিব, নগরোন্নয়ন সচিব, কলকাতা পুরসভার কমিশনার ও ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটারি অথরিটি-র চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে হাইকোর্টে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ।
গত ১ জানুয়ারি কালীঘাটে পুজো দিতে গিয়ে আদিগঙ্গার হাল দেখে ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আইনজীবী নয়নচাঁদ বিয়ানির কাছে জানতে চান, আদিগঙ্গার এই অবস্থা দেখার পরে পর্ষদ কী করছে? এর প্রেক্ষিতে পর্ষদের এক প্রতিনিধিদল কালীঘাট মন্দির ও আদিগঙ্গা দেখতে যায়। তার পরেই এ দিন প্রধান বিচারপতির এজলাসে ওই রিপোর্ট দেন আইনজীবী পাপিয়া বিয়ানি।
রিপোর্টে পর্ষদ জানায়, আদিগঙ্গা সংস্কারে কেএমডিএ, সেচ দফতর, নগরোন্নয়ন দফতর এবং কলকাতা পুরসভা এই সব দফতরের সহায়তা প্রয়োজন। সংস্কারের ক্ষেত্রে কোথায় ত্রুটি এবং তা কী করে দূর করা যাবে, সেই পরিকল্পনা ছকে ফেলেছে পর্ষদ। ২০ জানুয়ারি হাইকোর্টের নির্দেশের পরেই দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু হবে বলে পর্ষদ জানায়। পাশাপাশি, সেবায়েতদের তরফে মন্দির কমিটির সম্পাদক গোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, আদিগঙ্গা সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে সেবায়েতেরা সাহায্য করবে।
এ দিন আদালতে পেশ করা ওই রিপোর্টে বলা হয় অপরিকল্পিত নগরায়ণ, দেখভালের অভাব, নিয়মিত বর্জ্য ফেলা এবং উদাসীনতার জেরে এককালে বিশাল নৌবহর চলাচলকারী আদিগঙ্গার হাল এখন নিম্ন মানের জলপ্রবাহের মতো। নদীর জলে অক্সিজেন দ্রবীভূত হওয়ার ক্ষমতা এতই কম যে, জলজ প্রাণী বা উদ্ভিদ বাঁচতে পারে না। মূলত তিনটি কারণ চিহ্নিত করেছে পর্ষদ অপরিশোধিত বর্জ্য ক্রমাগত আদিগঙ্গায় ফেলা, কঠিন বর্জ্য ও প্লাস্টিক ফেলা এবং পলি জমে যাওয়া। তাঁদের বক্তব্য, আদিগঙ্গার গভীরতা ফেরাতে অবিলম্বে ড্রেজিং শুরু করতে হবে। কঠোর ভাবে রুখতে হবে অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলা। স্থানীয় বাসিন্দা এবং কালীঘাট মন্দিরের ভক্তদেরও সচেতন করতে হবে, যাতে তাঁরা কোনও ভাবেই ফুল, আবর্জনা বা প্লাস্টিক আদিগঙ্গায় না ফেলেন। অন্য দিকে, এ দিন প্রধান বিচারপতির এজলাসে রাজ্যের তরফে সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায় জানান, কয়েক দিনের মধ্যেই গঙ্গাসাগর মেলার জন্য ভক্ত-সন্ন্যাসীরা কলকাতায় আসা শুরু করবেন। তাঁদের অনেকেই কালীঘাট মন্দির দর্শন করেন। কিন্তু পর্যাপ্ত শৌচালয়, জল ও পুলিশি ব্যবস্থা না-থাকায় তাঁরাও বিপদে পড়েন, শহরও অপরিচ্ছন্ন হয়। প্রধান বিচারপতি সরকারি আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান, রাজ্য কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? সরকারি আইনজীবী জানান, এ বার বাইরে থেকে আসা ওই ভক্ত-সন্ন্যাসীরা যাতে ভাল ভাবে মন্দির দর্শন করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করছে রাজ্য। জল ও শৌচালয়ের ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.