মণিপুর নির্বাচন
বিরোধী জোটে সিপিএম, বাইরেই রইল বিজেপি
ণিপুরের বিরোধী দলগুলি জোটবদ্ধ হয়ে ‘পিপল্স ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (পিডিএফ)’ নাম নিয়ে ভোটযুদ্ধে নামল। তবে শেষ পর্যন্ত, ‘আদর্শগত’ ফারাকের কারণে বিরোধী জোটে নাম লিখিয়েও তুলে নিল বিজেপি। জোটে থাকল সিপিএম।
পাঁচ বিরোধী দল---মণিপুর পিপল্স পার্টি, এনসিপি, জনতা দল (ইউনাইটেড), আরজেডি ও সিপিএমের জোট পিডিএফ তাদের প্রথম তিরিশজন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল বুধবার। এমপিপির সভাপতি নিমাইচাঁদ লুয়াং জোটের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। জোটের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জেডিইউয়ের সইবাম ইন্দ্রকুমার সিংহ। নিমাইচাঁদ জানান, জোটের প্রথম নির্বাচনী বৈঠকের পরে দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঘোষণা করা হবে। আপাতত ঘোষণা করা ৩০টি আসনের মধ্যে এমপিপি ১৫টি, এনসিপি ১০, জেডিইউ চার ও সিপিএম-এর একজন প্রার্থী আছেন। নিমাইয়ের আশা, ষাটটি কেন্দ্রেই যোগ্য প্রার্থী তাঁরা দিতে পারবেন।
তবে কংগ্রেস-বিরোধী জোটের কাছে বড় ধাক্কা বিজেপি-র জোটে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত। জোটে বিজেপির যোগ দেওয়া নিশ্চিত ছিল। কিন্তু গত ক’দিন ধরে সিপিএম ও বিজেপি কাজিয়া চলার পরে ‘আদর্শগত বিরোধের’ কারণেই জোট থেকে সরে আসে বিজেপি। ইতিমধ্যেই বিজেপি সভাপতি, সহ-সভাপতিরা মণিপুরে নির্বাচনী সভা করেছেন। ফের আসবেন তাঁরা। চানু ও আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিকে হাতিয়ার করে বিজেপি সরাসরি লড়াইয়ে নামছে। পিডিএফ চেয়ারম্যান জানান, বিজেপি বিরোধী জোটে না এলেও এমপিপি ও বিজেপির মধ্যে আসন সমঝোতা হচ্ছে। পাশাপাশি, যেখানে পিডিএফ প্রার্থী দিতে পারবে না, সেখানে বিজেপি প্রার্থীকেই জোট সমর্থন করবে। মণিপুরের বাকি দলগুলিকেও পিডিএফ-এ যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তবে তৃণমূল এখনও জোট নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। সম্ভবত তারা প্রাক্-নির্বাচনী কোনও জোটে যোগ দেবে না। তৃণমূল নেতারা জানান, আগামী সপ্তাহেই দলনেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইম্ফলে এসে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে রাজি হয়েছেন। সঙ্গে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায় ও উত্তর-পূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কে ডি সিংহ। আপাতত মণিপুরের পাহাড় ও সমতল মিলিয়ে অন্তত ৩০টি আসনে প্রার্থী দিতে চাইছে তৃণমূল। উল্লেখ্য, গত বছর স্পিকার বুদ্ধিচন্দ্র মারা যাওয়ার পরে কোংথৌজাম বিধানসভা আসনের উপ-নির্বাচনে কংগ্রেসের হাত থেকে তা ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। এ বার নির্বাচনে আরও ভাল কিছু করে দেখাতে বদ্ধ পরিকর প্রদেশ তৃণমূল সভাপতি কিম গাংতে।
ভোটে এনপিএফ। সরকার ও মণিপুরের রাজনৈতিক সংগঠনগুলির বিস্তর আপত্তি সত্ত্বেও, মণিপুর নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে এনপিএফ। এনএসসিএন নেতা মুইভাকে উখরুল ঢুকতে না দেওয়া থেকেই মণিপুরি-নাগা বিভেদ চরমে ওঠে। এর উপর, সম্প্রতি নাগা অধ্যূষিত এলাকাগুলি নিয়ে ‘সুপ্রা স্টেট’ গঠন বিষয়ে যে রটনা দিল্লি থেকে ডিমাপুর অবধি ছড়িয়ে পড়ে, তার জেরে মণিপুরবাসী নাগাদের বিরুদ্ধে একজোট। তাই, বাকি মণিপুরের দিকে হাত না বাড়িয়ে, আপাতত, নাগাপ্রধান, ১২টি কেন্দ্রেই প্রার্থী দিচ্ছে তারা। ১২টি নাগা ও ২টি কুকি অধ্যুষিত কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার জন্য, ৫৬ জন নাগা প্রার্থী লাইন লাগিয়েছেন। এনপিএফ দলের বুধবার, মণিপুরের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার টি আর জেলিয়াং-এর সঙ্গে সন্ধা অবধি বৈঠক করেন এনপিএফ সভাপতি সুরহোজেলি লিয়েজিৎসু ও নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিও।
তবে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে জটিলতা থাকায় প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত হয়নি। জটিলতার কারণ, নাগা বনাম নাগা বিবাদ। পার্বত্য মণিপুরের তিনটি কেন্দ্রে ইউনাইটেড নাগা কাউন্সিলের তিন বর্তমান বিধায়ক এনপিএফ-এর টিকিটে লড়তে চান। কিন্তু গতবছর, মণিপুর সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে যখন নাগা বিধায়কদের পদত্যাগ করতে বলে ইউএনসি তখন তাঁরা রাজি হননি। তাই, মণিপুরের নাগা সংগঠনগুলি, বর্তমান নাগা বিধায়কদের বয়কট করেছে। তবে, নাগা রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই, নাগা জঙ্গিরাও মণিপুর নির্বাচনে দাপিয়ে বেড়াতে পারে বলে আশঙ্কা। পরিস্থিতি সামলাতে, নাগাদের সবচেয়ে শক্তিশালী গোষ্ঠী নাগা হো হো সব নাগা জঙ্গি সংগঠনকে মণিপুর নির্বাচন থেকে দূরে থাকার অনুরোধ জানিয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.