কোনও পুরুষ অভিভাবকের ‘অনুমতি’ ছাড়াই এ বার নির্বাচনে লড়তে বা ভোট দিতে পারবেন সৌদি মহিলারা। ২০১৫ সালের মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনের জন্য এই অনুমতি দিয়েছেন সৌদি রাজা আবদুল্লা। সে দেশে মেয়েদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিধি-নিষেধের বিরুদ্ধে সওয়াল করছেন যে সব মানবাধিকার কর্মী, তাঁরা রাজার এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে একই সঙ্গে তাঁরা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, মেয়েদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন আইনকানুনে বড় মাপের পরিবর্তন আনতে এখনও অনেকটা পথ চলা বাকি।
বিভিন্ন সামাজিক ক্ষেত্রে মেয়েদের অধিকার দেওয়ার লক্ষ্যে অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন পদক্ষেপ করতে চাইছেন রাজা আবদুল্লা। কিন্তু দেশের রক্ষণশীল মৌলবিদের চাপে অধিকাংশ সিদ্ধান্ত থেকেই তাঁকে সরে আসতে হচ্ছে। আজ সৌদি আরবের সর্বোচ্চ গোষ্ঠী ‘শুরা কাউন্সিল’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই মেয়েদের স্থানীয় মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনে দাঁড়ানোর ‘অনুমতি’ দিয়েছেন রাজা। এর আগেই অবশ্য মেয়েদের ভোট দেওয়ার ও ভোট লড়ার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। এ বার রাজার ‘অনুমতি’ সেই পথটিকে সহজ করে দিল। যে হেতু রাজাই দেশের প্রধান ইসলামি পবিত্রস্থানগুলির রক্ষাকর্তা, তাই তাঁর অনুমতিই চূড়ান্ত। তার পর আর বাড়ির পুরুষ অভিভাবকের ‘অনুমতি’র কোনও প্রয়োজন হবে না।
বর্তমান আইন অনুসারে, সৌদি মহিলাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষ অভিভাবকের ‘অনুমতি’ প্রয়োজন। কোথাও বেড়াতে যেতে, চাকরি করতে, বিয়ে করতে, বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জানাতে সব কিছুতেই পুরুষের অনুমতি লাগে। কোনও সৌদি মহিলা যদি বিদেশে পড়তে যেতে চান, তাঁর সঙ্গে কোনও পুরুষের যাওয়া, এবং সঙ্গে থাকা বাধ্যতামূলক। সে দেশের কোনও সরকারি হাসপাতালে আপৎকালীন পরিস্থিতি ছাড়া কোনও মহিলা নিজে থেকে ভর্তি হতে পারেন না। সব সময়েই তাঁর এক জন পুরুষ অভিভাবকের ‘অনুমতি’ লাগবে। কোনও পুরুষ যে কোনও সময়ে তার মেয়ে বা বোনের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে। বাবা, কাকা বা স্বামী অনুপস্থিত থাকলে চাকরি করতে যেতে নিদেনপক্ষে পুত্রসন্তানের অনুমতি প্রয়োজন। সৌদি আরব পৃথিবীর এক মাত্র দেশ, যেখানে মেয়েদের গাড়ি চালানো নিষেধ।
সৌদি মানবাধিকার কর্মী ওয়াজেহা আল-হাওয়িদারের কথায়, “এই ধরনের আইন মহিলাদের চিরকাল শিশু করে রাখে। বয়স বাড়ার সঙ্গে পুরুষের মতো তারও যে মস্তিষ্ক বিকাশ ঘটেছে, সেই বৈজ্ঞানিক সত্যটাই অস্বীকার করে এই সব আইন।” রিয়াধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক হাতুন আল-ফাসি বলেন, “বছরের পর বছর এ দেশের মেয়েরা এই আইনের অত্যাচার সহ্য করছে। মৌলবিরা বুঝতে নারাজ যে, এই ‘অভিভাবক আইন’ ইসলাম-বিরুদ্ধ। ইসলাম মেয়েদের বহু সামাজিক অধিকার দিয়েছে।”
রাজা আবদুল্লার এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে ওয়াজেহা ও হাতুন দু’জনেই বলেছেন, “সৌদি মেয়েদের সামনে থেকে অন্তত একটা প্রতিবন্ধকতা উঠল।” এই ‘বৈপ্লবিক’ সিদ্ধান্তের যে অনেকেই বিরোধিতা করবে, সে কথাও মেনে নিয়েছেন তাঁরা। আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, “সরকারে আমাদের কথা শোনার লোক রয়েছে। কিন্তু সমাজের চাঁইরা কানে আঙুল দিয়ে থাকবে। কোনও পরিবর্তনই তারা সহজে মানবে না।”
|
ঢাকায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় |
ঢাকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে বলে আজ জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই দিন ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনের রবীন্দ্র উৎসবের উদ্বোধন করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও। এই পদক্ষেপ রবীন্দ্র-চর্চাকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলে তাঁরা দ’জনেই আশা প্রকাশ করেছেন। |