তিস্তা সেতু মেরামতির কাজ ঢিমেতালে চলছে, এই অভিযোগে সোমবার ঘণ্টা দেড়েক জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল যুব কংগ্রেস। ৩১ ডি জাতীয় সড়কের উপরে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া বেহাল তিস্তা সেতু দিয়ে যাতায়াতে প্রতিদিনই দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয় যাত্রীদের। সোমবারের ঘন্টা দেড়েকর অবরোধে জেরে ওই দুর্ভোগ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। অবরোধ সরে যাওয়ার পরেও যান চলাচল স্বাভাবিক হতে লেগে যায় আরো ঘন্টাখানেক। বেহাল তিস্তা সেতুর মেরামতির কাজ শুরু হলেও চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সেই কাজ থমকে গিয়েছে। কাজ শুরুর পরে তিস্তা সেতুর পিচের আস্তরণ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ভাঙা পিচের টুকরো, ইট, পাথর সেতুতেই লাইন দিয়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। তার ফলে প্রতিনিয়ত সেতুতে দুর্ঘটনাও লেগে রয়েছে। দ্রুত সেতু মেরামতির দাবিতে সোমবার অবরোধ করে যুব কংগ্রেস। সংগঠনের পক্ষ থেকে আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে সেতু যান চলাচলের উপযোগী না হলে বনধের হুমকি দেওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করার দাবি নিয়ে আগামী বুধবার জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার এবং শুক্রবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দফতরে বিক্ষোভ দেখানো হবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। যুব কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ। সাধারণ মানুষের নিত্যযন্ত্রণা সত্বেও সড়ক কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই। রাজ্য সরকারের এক মন্ত্রী ৯০ দিনে সেতু মেরামতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতিও রক্ষা হয়নি। সেতুর কাজের দায়িত্ব পাওয়া সংস্থা মাঝপথে কাজ বন্ধ করে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী ১০ জানুয়ারী পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে সদর্থক পদক্ষেপ করা না-হলে বনধের পথে যাওয়া হবে।” জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প আধিকারিক পঙ্কজ মিশ্র জানিয়েছেন, পদ্ধতিগত কারণে তিস্তা সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে। দ্রুত সেই কাজ ফের শুরু করা হবে। সোমবারের অবরোধে আটকে পড়া শিলিগুড়ির বাসিন্দা দ্বৈপায়ন সরকার বলেন, “কর্মসুত্রে প্রতিদিনই এই পথে যাতায়াত করতে হয়। দুর্ভোগের কথা বলে বোঝানো যাবে না। বেহাল সেতু মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন অন্তত একঘন্টারও বেশি সময় লেগে যায় যাতায়াত করতে। এদিনের অবরোধ দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।” জলপাইগুড়ির বাসিন্দা নিত্যযাত্রী তাপস মজুমদার বলেন, “সেতুতে অবরোধ করে কী হবে? তাতে আমাদের মতো যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। প্রতিদিনই সেতুতে দুর্ঘটনা ঘটছে। যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ছেন। তা সত্বেও কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী নন। তাই সেতুতে অবরোধ করে যাত্রীদের দুর্ভোগে না ফেলে তাঁদের টনক নড়ানোর জন্য বিকল্প কিছু চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন।” |