বেড়েছে বাংলা ছবির সংখ্যা। বেড়েছে পুরস্কার। তবুও পরিকাঠামোর সমস্যা বাংলা চলচ্চিত্রশিল্পের পিছু ছাড়েনি। এই খামতির কথা স্বীকার করেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টলিউডকে আশ্বাস দিলেন, প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পরিকল্পনা তৈরি করেছে তাঁর সরকার। তাঁর দাবি, কলকাতা হয়ে উঠবে দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী।
বুধবার বণিকসভা ফিকি-র অনুষ্ঠান ‘ফিকি ফ্রেমস’ উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। বিনোদনশিল্প সংক্রান্ত এই সম্মেলন এই প্রথম কলকাতায় পা রাখল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক যশ চোপড়া, অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়-সহ বলিউড ও টলিউডের কলাকুশলীরা। মঞ্চে এঁদের পাশে রেখেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, হলিউড ও বলিউড স্বয়ংসম্পূর্ণ। এ বার টলিউডকেও সেই জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে। |
তিনি বলেন, “বিনোদনও একটি শিল্প। তাই আমাদের দেখতে হবে কী ধরনের পরিকাঠামো গড়ে তুললে এই শিল্প উপকৃত হয়।” পাশাপাশি তাঁর দাবি, এ রাজ্যে পরিকাঠামো তৈরি হলে তার সুবিধা পাবে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিও।
এ দিন প্রকাশিত হয় পূর্ব ভারতের বিনোদনশিল্প সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট। পরামর্শদাতা সংস্থা ডেলয়েট ও ফিকি-র তৈরি এই রিপোর্টে উঠে এসেছে পরিকাঠামোর প্রশ্ন। পরিসংখ্যান বলছে, গত ১৫ বছরে রাজ্যে সিনেমা হলের সংখ্যা ৮৯০ থেকে দাঁড়িয়েছে ৩৫০। এই ছবিটা বদলানোর চেষ্টা চলেছে বলে দাবি সরকারের।
রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী জানান, রাজ্য জুড়ে ৩৭টি রবীন্দ্র ভবন ঢেলে সাজা হয়েছে। নতুন সাজে সেজে উঠছে নন্দন চত্বরও। রাজ্যে একাধিক ‘ফিল্ম সিটি’ তৈরি করে পরিকাঠামো সমস্যা কিছুটা সামাল দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ইতিমধ্যেই উত্তরপাড়ায় গঙ্গার ধারে ১০০ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। মমতা জানান, এ ছাড়াও উত্তরবঙ্গ-সহ অন্যান্য জায়গায় পিপিপি মডেলে এই ধরনের প্রকল্প তৈরিতে উৎসাহ দেবে সরকার। উল্লেখ করেন টেকনিশিয়ানস স্টুডিওর পুনরুজ্জীবনের কথাও।
বিনোদন শিল্পের জন্য প্রত্যক্ষ পরিকাঠামোর পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা জোরদার করতে ছোট শহরে বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। মমতা জানান, দিঘা-সুন্দরবনের মতো পর্যটন কেন্দ্রে পরিকাঠামোগত সুবিধা দিতেও পরিকল্পনা নিয়েছে তাঁর সরকার। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে ইচ্ছাপত্র চাওয়া হয়েছে। শু্যটিং-এর জন্য এই সব কেন্দ্র ব্যবহার করা যেতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। |