|
|
|
|
|
ওষুধ বেচাই পেশা |
খুব ঝকঝকে পেশা। বিশ্বায়নের যুগে যার পরতে পরতে চ্যালেঞ্জ খুঁজে পান পেশাদারেরা। লিখছেন, কৌলিক ঘোষ |
চিকিৎসকদের নিজস্ব চেম্বার, ছোট-বড় হাসপাতালের আউটডোর, নার্সিংহোম, রোগনির্ণয় কেন্দ্রে ডাক্তারের ঘর সব জায়গাতেই হাজির এঁরা। ঝকঝকে, চনমনে, স্ফূর্তিতে ভরা চেহারা। হাতে মোটাসোটা ভারী ব্যাগ। ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার জন্য কখনও ছটফটানি। কখনও বা ঘন্টার পর ঘন্টা ঠায় অপেক্ষা করে বসে থাকা। মোটামুটি এমন কতগুলো ফ্রেমে ফেলেই আমরা চটপট তাঁদের চিনে নিই ‘ওঁরা নিশ্চয়ই মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ।’ তবে কিনা এটি আদ্যিকালের নাম। ইদানীং সংস্থাভেদে এ পেশার নামেও লেগেছে বিশ্বায়নের ছোঁয়া। সায়েন্টিফিক সেল্স এগ্জিকিউটিভ, প্রোডাক্ট এগ্জিকিউটিভ, প্রফেশন্যাল সার্ভিস এগ্জিকিউটিভ, মার্কেটিং এগ্জিকিউটিভ, ফিল্ড সেলস এগ্জিকিউটিভ এর মধ্যে অন্যতম। |
|
তাঁদের কাজ বাজার ধরা |
নামের রকমফের থাকলেও কাজের চরিত্রে কিন্তু কোনও ফারাক নেই। যেখানে মোদ্দা কথা হল, ওষুধ বেচতে হবে। মানে ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার হয়ে চিকিৎসকদের কাছে দরবার করেন এঁরা। ভোগ্যপণ্যের চাহিদা তৈরির জন্য যেমন সংবাদপত্র বা বৈদ্যুতিন মাধ্যম হাতিয়ার, ওষুধ সংস্থাগুলি জন্য তেমনই মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ। তাঁর কাজই হল নিজের সংস্থার ওষুধের গুনাগুণ সম্পর্কে ডাক্তারকে এমন ভাবে বোঝানো, যাতে তিনি সংশ্লিষ্ট রোগের ক্ষেত্রে রোগীর প্রেসক্রিপশনে সেই ওষুধটাই লিখে দেন। আর সেটা যদি একবার করে ফেলা যায় তো ওষুধের দোকানও সেই সমস্ত ওষুধ বেশি পরিমাণে রাখতে বাধ্য হবে। বিক্রি বাড়বে চড়চড় করে।
কাজেই মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের উপরই নির্ভর করে কোনও ওষুধের ব্যবহারের ব্যাপ্তি বা বিস্তৃতি। চিকিৎসকের কলমে নিজের সংস্থার ওষুধের নাম আনার জন্য তাঁদের শশব্যস্ত থাকতে হয় ৩৬৫ দিন। সে ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি ওষুধ সংস্থাগুলি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে নিজেদের উৎপাদিত ওষুধের চাহিদা তৈরির জন্য নিযুক্ত করে এক এক জন প্রতিনিধি বা রিপ্রেজেন্টেটিভ। সময়ে সময়ে ওই নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যেই বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সংস্থার পণ্যের ‘ডিটেলিং’ করতে হয়। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট ওষুধের গুণাগুণ বাতলাতে হয়। সংশ্লিষ্ট ওষুধ সংস্থার পণ্য যাতে নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকায় সহজলভ্য হয়, সে দিকে নজরদারিও করতে হয়। অর্থাৎ সংক্ষেপে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের কাজের পরিধি হল
(১) নিজের সংস্থার ওষুধ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া
(২) ওষুধের গুনাগুণ বিশদে ব্যাখ্যা করা
(৩) সেটির চাহিদা তৈরি করা ডাক্তারের মনে
(৪) ওষুধের দোকানে সংশ্লিষ্ট সংস্থার পণ্য সহজলভ্য করা
(৫) সংস্থার ঊর্ধ্বতন পদস্থ আধিকারিকদের কাছে নিয়মিত রিপোর্ট করা
(৬) বিক্রি বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া
যোগ দেওয়ার কথা ভাবতে পারেন যখন
স্নাতক হলেই মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ হওয়া যায়। তবে ফার্মাসিতে ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা করা থাকলে এই পেশায় প্রবেশের সুযোগ খুলে যায় অনেকখানি। অনেক সময় স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন এমন ছাত্রছাত্রীদেরও নিয়োগ করা হয় শর্তসাপেক্ষে। তবে কেরিয়ারের লক্ষ্য হিসেবে যাঁরা মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ পেশাকে বেছে নিতেই আগ্রহী, তাঁদের মনে রাখতে হবে: অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ২৫ বছরের বেশি বয়স হয়ে গেলে আর এই পেশাতে প্রবেশ করা সম্ভব নয়।
|
তুঙ্গ প্রতিযোগিতায় সাফল্যের মন্ত্র |
কোটি কোটি মানুষ। জীবনযাপনের গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকা রোগের প্রকোপ। এর হাত ধরে তৈরি হওয়া বিশাল বাজার। যা হাতাতে পাল্লা দিয়ে ছুটে চলা অগুনতি সংস্থা। আর তাদের তৈরি অসংখ্য ওষুধ। স্বভাবতই এই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে টিকে থাকতে পেশাদার বেছে নেওয়ার কাজটাও করতে হয় খুব দেখেশুনে।
অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ধীমান কাহালির মতে, মেডিক্যাল জার্নাল বা ওয়েবসাইট কোনও রোগের নতুন ওষুধ সম্পর্কে জানানোর আগেই তার কার্যকারিতা সম্পর্কে চিকিৎসকদের ওয়াকিবহাল করেন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভরা। তাই নিজের সংস্থার ওষুধ সম্পর্কে ভাল জ্ঞান ও সেটা অত্যন্ত সহজ-সাবলীল ভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা থাকা এই কাজের জন্য খুব জরুরি। কারণ এক দিকে সংশ্লিষ্ট ওষুধ প্রস্তুতকারকের ব্যবসা বাড়াতে দায়বদ্ধ তাঁরা। অন্য দিকে তাঁদের মাধ্যমেই বাজারের হালফিল ওষুধের খুঁটিনাটি জেনে, সেই মাফিক রোগীকে ওষুধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসক।
তবে ধীমানবাবুর কথায়, “ঝকঝকে ব্যক্তিত্ব এবং কথোপকথনের দক্ষতা থাকলে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের পেশায় আসাটা খুব কঠিন নয়।” যদিও পরবর্তীকালে সাফল্য অর্জনের অন্যতম শর্ত হিসেবে ‘ফার্মাসি’ বিষয়টি সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান এবং মানুষের উপকার করার মানসিকতা থাকা আবশ্যিক বলে মনে করেন তিনি।
অন্য দিকে, এই বিপণনের যুগে যেখানে একই রোগের পাঁচ-দশটা ওষুধ বাজারে ছড়িয়ে, সেখানে একটি সংস্থাকে নিজের ওষুধের বাজার তৈরি করতে আলাদা কৌশল আঁকড়াতেই হয়। এর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও থাকতে হবে পেশাদার মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের, মনে করেন কেরিয়ার বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের মতে, সে ক্ষেত্রে বুদ্ধি, প্রত্যুৎপন্নমতি, যুক্তি দিয়ে বোঝানোর ক্ষমতা থাকলে এগোনোর পথ প্রশস্ত হয়।
|
উন্নতির ধাপগুলি |
কেরিয়ার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী করার জন্য কিংবা বলা যেতে পারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নেকনজরে আসার জন্য মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের মধ্যে কয়েকটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকা জরুরি, যেগুলির নিরিখে এই পেশায় পদোন্নতি নির্ভর করে। যার মধ্যে অন্যতম
১) নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা
২) বাঁধা গতের বাইরে কাজ করার মানসিকতা
৩) নির্দিষ্ট সময়ের বাইরেও কাজ করার আগ্রহ
(আগের পাতার পর)
৪) পরিশ্রম করার ক্ষমতা
৫) পরিস্থিতি বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পারদর্শীতা
৬) ইংরেজি, হিন্দি-সহ স্থানীয় ভাষায় কথা বলার দক্ষতা
এই সমস্ত যোগ্যতা অর্জন করেই একজন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ ধাপে ধাপে সংস্থার চিফ এগ্জিকিউটিফ অফিসার পদে উন্নীত হয়েছেন এমন নমুনাও রয়েছে, জানালেন গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালস-এর সিনিয়র জোনাল ম্যানেজার রঞ্জিত গোস্বামী। অন্য দিকে, টরেন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস-এর রিজিওন্যাল বিজনেস ম্যানেজার তীর্থঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে ২ থেকে ৫ বছরের মধ্যে কোনও মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ ফার্স্ট লাইন ম্যানেজার (এরিয়া বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার) এবং এর পর ধাপে ধাপে রিজিওন্যাল ম্যানেজার, জোনাল ম্যানেজারের পদে উন্নীত হতে পারেন। তবে এঁদের প্রত্যেকেরই মত, বড় ওষুধ সংস্থায় কাজ করতে হলে প্রথমে ছোট সংস্থায় কাজ করে হাত পাকিয়ে নেওয়া উচিত।
আবার ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে ব্যবসার নিরিখে যদি তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়, তা হলে প্রথম সারির সংস্থায় সদ্য নিযুক্তরা কেরিয়ার শুরু করেন ১২-২০ হাজার টাকা বেতন দিয়ে। দ্বিতীয় ধরনের সংস্থায় ৬-১২ হাজার টাকা মাস-বেতনে আর তৃতীয় ধরনের তথা ছোটখাটো সংস্থায় প্রায় ৬ হাজার দিয়ে। তবে ব্যতিক্রম সব ক্ষেত্রেই আছে। বিশেষত যেখানে বহু বিদেশি ওষুধ সংস্থাই পা রাখছে ভারতে। বহুজাতিক এবং দেশের সংগঠিত ওষুধ শিল্পের ক্ষেত্রে কর্মীদের জন্য পিএফ, গ্র্যাচুয়িটি-সহ আকর্ষণীয় ভাতারই ব্যবস্থা থাকে আজকাল।
|
চাহিদা কমার কোনও কারণ নেই |
পেশাদারদের চাহিদার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে দেশের ওষুধ শিল্পের বাড়বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। পূর্বাঞ্চলের সব থেকে পুরনো মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ গড়ার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মেসমি-র কর্ণধার দিবাকর দে জানালেন, গত ২০১০ এপ্রিল থেকে ২০১১ মার্চ পর্যন্ত দেশের ওষুধ শিল্পে বার্ষিক বৃদ্ধির হার ছিল শতকরা ১৫ শতাংশের বেশি। ওষুধ উৎপাদনের দিক দিয়ে ভারত এখন বিশ্বে চতুর্থ। ভারতে ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার সংখ্যা বর্তমানে ২৩ হাজারে ঠেকেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, ওষুধ সংস্থাগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা তীব্র হওয়ার জন্য নতুন নতুন গবেষণালব্ধ ওষুধ আনার প্রবণতাও বেড়ে চলেছে। ফলে ‘মাল্টি স্পেশালিটি’ বিভাগ খুলছে ওষুধ সংস্থাগুলি। যেখানে ব্যবসা ছড়াতে অঞ্চল অনুযায়ী আগের পুরনো ভাগগুলিকে আরও ছোট করে নতুন নতুন এলাকা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের জন্য, যাতে তাঁরা ডাক্তারদের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন। দিবাকরবাবুর হিসাবে, এ দেশে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের সংখ্যা ২ লক্ষের উপর। এর মধ্যে ৩০ হাজারের মতো পশ্চিমবঙ্গেই। আগামী বছরগুলিতে এই চাহিদা কমা দূর অস্ৎ, আরও যে বাড়বে তা চোখ বন্ধ করে বলা যায়।
প্রসঙ্গত, আগে এই পেশায় মেয়েদের প্রায় ব্রাত্যই করে রাখা হত। কিন্তু এখন অসংখ্য মহিলা যে শুধু এ পেশাতে আসছেন তা-ই নয়, কাজও করছেন যথেষ্ট সাফল্যের সঙ্গে।
|
কদর তাঁদের, যাঁরা তৈরি আছেন |
শিল্পের চাহিদা মাফিক যাঁরা প্রথম থেকেই তৈরি হয়ে আছেন, শিল্প তাঁদেরই খোঁজে। প্রতিযোগিতার দুনিয়ায় এটাই দস্তুর। ‘আজ’ চাকরিতে যোগ দিয়ে ‘কাল’ই থেকে যাতে সংস্থার হয়ে কাজে নেমে পড়া যায়, বহু ক্ষেত্রেই সেটা নিশ্চিত করে নিতে চায় ওষুধ সংস্থাগুলি। আর চাহিদার এই জায়গা থেকেই মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের প্রশিক্ষণ দিতে এ রাজ্যে এগিয়ে এসেছে মেসমি, কেরিওগ্রাফ-এর মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এই প্রসঙ্গে মেসমি-র কর্তা দিবাকর দে জানালেন, বছর দশেক আগেও ওষুধ সংস্থাগুলি প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রার্থী নিয়োগ করত। কিন্তু এখন বহু ক্ষেত্রেই তা হয় না। ফলে এই পেশায় আসবে মনস্থির করলে আগেভাগেই প্রশিক্ষণ নিয়ে তৈরি হয়ে থাকার প্রবণতা বাড়ছে। সে ক্ষেত্রে কী কী বিষয় জানতে হয়, কী ভাবে ইন্টারভিউ দিতে হয়, কী ভাবে আত্মবিশ্বাসী হতে হয় সেই সমস্তই শেখায় এই সব প্রতিষ্ঠান।
|
যা শেখা যায় আগে থেকেই |
মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ হওয়ার প্রশিক্ষণ মোটামুটি ২-৩ মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ হয়। কোনও ফার্মা সংস্থায় নিয়োগের সময় যে ধরনের প্রশ্ন করতে পারে, সেই বিষয়গুলির উপরে নজর দেওয়া হয় প্রশিক্ষণের সময়। দিবাকরবাবু জানালেন, অ্যানাটমি সম্পর্কে যেমন একজন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ পদপ্রার্থীর ধারণা থাকা দরকার, তেমনই ফার্মাকোলজি, বিভিন্ন ওষুধ সংস্থা এবং তাদের উৎপাদিত পণ্য, বিক্রয় এবং বিপণন, পণ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরি। প্রশিক্ষণ পর্বে এই সমস্ত বিষয় জানানো হয়। এ ছাড়া গ্রুপ ডিসকাশন এবং ইন্টারভিউয়ের সামনাসামনি হওয়ার জন্য তৈরি করা হয় প্রার্থীদের। আর যাঁরা সচরাচর ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকেন, তাঁদের দিয়েই নিয়মিত ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা রাখার দরুন আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন পড়ুয়ারা। অন্য দিকে, রাজ্যের আর এক মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কেরিওগ্রাফের পাঠ্যক্রমের বিশেষত্ব হল, ২ মাসের পাঠ্যক্রমে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কিছু তথ্য, বিপণনের খুঁটিনাটি শিক্ষা, মক ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা।
|
সাফল্যের চাবিকাঠি |
• অ্যানাটমি, ফার্মাসি, ফার্মাকোলজির জ্ঞান
• পরিশ্রম করার ক্ষমতা
• আকর্ষণীয়, নম্র কিন্তু দৃঢ় ও নাছোড় ব্যক্তিত্ব
• ইংরেজি, হিন্দি-সহ স্থানীয় ভাষায় দক্ষতা
• পণ্য বেচার ধৈর্য
• বাজারের বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সম্পর্কেই জ্ঞান
• বাঁধা গতের বাইরে কাজ করার মানসিকতা
• দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা |
|
|
|
খেয়াল রাখুন তথ্য সংকলন: কৌলিক ঘোষ |
|
|
হায়দরাবাদের ‘মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট’ (এমএসএমই-ডিআই) সোনার মূল্যায়ন (গোল্ড অ্যাপ্রেইজাল) নিয়ে একটি স্বল্প মেয়াদি প্রশিক্ষণ দেবে। পাঁচ দিনের পূর্ণ সময়ের প্রশিক্ষণটি চলবে আগামী ১৩ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত। চাইলে ১০ দিন ধরে তা আংশিক সময়ের জন্যও করা যাবে। খরচ ৬,০০০ টাকা। সাধারণত ৬ মাসে এক বার এই ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন এই প্রতিষ্ঠান। এমএসএমই-ডিআই কর্তৃপক্ষের দাবি, ৪০% পুঁথিগত ও বাকি ৬০% হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিষয় হিসেবে আছে, খাঁটি সোনা ও গয়নার সোনার মূল্য বিচারের পদ্ধতি, সোনা সংগ্রহের প্রক্রিয়া, সোনা-ঋণ গ্রহণ এবং হলমার্ক ব্যবস্থা ইত্যাদি। অংশ নিতে পারেন সোনা সংক্রান্ত যে কোনও কাজে বা ব্যবসায় নিযুক্ত বা আগ্রহীরা কিংবা সোনা-ঋণ বিষয়ক ব্যবসা বা কাজে নিযুক্তরা। বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৮ বছর। অন্য রাজ্যের কেউ আগ্রহী হলে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা নিজেকেই করতে হবে। ফোন: ০৯৮৬৬০১৮৭৭৬।
|
|
আজ, মঙ্গলবার কলকাতায় শিক্ষা সংক্রান্ত এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে আজিম প্রেমজি ইউনিভার্সিটি। যেখানে মূল বিষয়বস্তু হিসেবে ‘ট্রেনিং প্রফেশনালস অর সার্ভিং দ্য সোসাইটি?’ শীর্ষক আলোচনায় কথা হবে শিক্ষার লক্ষ্য নিয়ে। যোগ দেবেন আজিম প্রেমজি ইউনিভার্সিটির প্রশিক্ষক আমন মদন, সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর অর্থনীতির অধ্যাপক জ্যোৎস্না জালান প্রমুখ। মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে আড়াইটে পর্যন্ত লোরেটো কলেজের অডিটোরিয়ামেই বসবে সভাটি। ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে যে কোনও শিল্প এবং শিক্ষা ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত পেশাদারেরাই যোগ দিতে পারেন। আরও বিশদে জানতে দেখে নিতে পারেন তাদের http://azimpremjiuniversity.edu.in/ ওয়েবসাইটটি।
|
ফুড প্রসেসিং-এর উপর একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রম আনল পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা কলেজ। কলেজটি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত। কর্তৃপক্ষের দাবি, মূলত বেকার ছেলেমেয়েদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। পাঠ্যক্রমটি পড়ে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ব্যবসায় নামতে পারবেন পড়ুয়ারা। যে কারণে বিষয়টির উপর কারিগরি প্রশিক্ষণের পাশাপাশি নিজস্ব ব্যবসা খুলে তাকে বাণিজ্যিক ভাবে সফল করে তোলার দিশাও দেওয়া হবে। বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে এবং ন্যূনতম উচ্চ মাধ্যমিক পাশ হলে ভর্তি হওয়া যাবে। অন্য কোনও স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত পড়ুয়ারা অবশ্য এই সুযোগ নিতে পারবেন না। ভর্তির আবেদনপত্র দেওয়া শুরু হয়েছে। চলবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আরও জানতে ফোন করুন ৯৪৩৪৬৫২৪০৬/ ৯৪৩৪৫২৭৩৪৪ নম্বরে। দেখে নিন কলেজের www.garhbetacollege.org ওয়েবসাইটটি।
|
চোখের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রের উপর (আই-কেয়ার/অপটিক্যাল/প্যারামেডিক্যাল) ছ’মাসের অনলাইন সার্টিফিকেট পাঠ্যক্রমে ভর্তি চলছে ইগনু-তে। তাদের দাবি, প্রাথমিক চক্ষু চিকিৎসা পরিষেবা দিতে জরুরি ওই ক্ষেত্রগুলির জন্য দক্ষ কর্মী তৈরিই লক্ষ্য। আবেদনপত্র জমার শেষ দিন ১৫ ডিসেম্বর। |
|
আপনার প্রশ্ন
বিশেষজ্ঞের উত্তর |
|
|
প্রশ্ন: কলা বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ছি। সংবাদ সঞ্চালক হতে চাই। কলকাতায় এই ধরনের পেশা গ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণ দেয় কোন প্রতিষ্ঠান?
সিরাজি, মালদহ
উত্তর: এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য যোগাযোগ করে নিতে পারেন নিট্স-এ। এখানে এই ধরনের পেশার জন্য প্রার্থীদের প্রস্তুতি দেওয়া হয়। ফোন নম্বর: ৯৮৩১০-২৪৩০৯।
প্রশ্ন: আমার পুত্র এখন একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। গণিতে বরাবরই ভাল নম্বর পায়। ছোট থেকে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার আগ্রহ। আমার ইচ্ছে দ্বাদশ পেরিয়ে ওর পছন্দমতো পাঠ্যক্রমে ভর্তি করা। এই বিষয়ে দিশা দেখালে বড়ই উপকৃত হব।
শান্তিনাথ গঙ্গোপাধ্যায়, বধর্মান
উত্তর: দ্বাদশে যাঁরা বিজ্ঞান নিয়ে পড়ছেন, তাঁদের মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার জন্য রয়েছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। এটি তিরুবনন্তপুরমে অবস্থিত। ১০+২ পেরিয়ে এই কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য যে প্রবেশিকা পরীক্ষাটি নেওয়া হয়, সেটিকে বলা হয় ‘আইস্যাট’। প্রত্যেক বছর এপ্রিল নাগাদ হয় পরীক্ষা। আবেদনপত্র মেলে নভেম্বর মাস থেকেই।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে যে যে পাঠ্যক্রমে ভর্তি হওয়া যায় সেগুলি হল বি-টেক ইন এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং (আসন সংখ্যা ৬০টি), বি-টেক ইন অ্যাভিওনিক্স (আসন সংখ্যা ৬০টি), বি-টেক ইন ফিজিক্যাল সায়েন্স (আসন ৩৬টি)।
প্রবেশিকা পরীক্ষাটি একমাত্র তাঁরাই দিতে পারেন, যাঁরা পরীক্ষাটি যে বছর হচ্ছে তার ঠিক আগের বছর ১০+২ দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ১০+২-এ রসায়ন, গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞান-এ ৭০% নম্বরও প্রয়োজন। তফসিলি জাতি এবং উপজাতিদের ক্ষেত্রে ৬০% পেলেই চলবে। শুধু দ্বাদশে নয়, মাধ্যমিক বা অন্যান্য বোর্ডের পরীক্ষাতেও কমপক্ষে ৭০% নম্বর থাকা প্রয়োজন।
প্রবেশিকা পরীক্ষাটি হয় তিন ঘণ্টার। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং অঙ্কের উপর প্রশ্ন থাকে। পাঠ্যসূচি দ্বাদশ স্তরের। এই বছর অর্থাৎ ২০১১-তে ১৫৬টি আসনের জন্য আবেদন করেছিল ৯৫ হাজার ছাত্রছাত্রী। মূলত মেধাবী ছাত্রছাত্রী বাছাই করার কথা মাথায় রেখেই পরীক্ষায় প্রশ্নের মান যথেষ্ট কঠিন রাখা হয়। প্রসঙ্গত, এই পরীক্ষাটির কেন্দ্র কলকাতাতেও হয়।
প্রশ্ন: জীববিদ্যা নিয়ে সাম্মানিক স্নাতক স্তরে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। এর পর আমি ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে এম বি এ পড়তে আগ্রহী। কোথায় কোথায় বিষয়টি পড়ানো হয়?
তাপস রায়, খড়দহ
উত্তর: ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স করতে হলে প্রথমেই যে প্রতিষ্ঠানটির নাম উল্লেখ করতে হয় সেটি হল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফার্মাসিউটিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ। চণ্ডীগড়ের কাছে মোহালিতে অবস্থিত এই কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
এখানে এম বি এ ইন ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কোর্স করার জন্য বি ফার্ম, বি-টেক ইন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বা জীববিজ্ঞানে এম এসসি এর মধ্যে একটি যোগ্যতা থাকতে হবে। আপনি যেহেতু এখন সাম্মানিক স্নাতক স্তরের তাই এম এসসি করেই পড়ার সুযোগ পাবেন। সর্বভারতীয় লিখিত প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হওয়া যায়।
আর কলকাতার ইস্টার্ন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টিগ্রেটেড লানির্ং ইন ম্যানেজমেন্টে-এ আছে মাস্টার ইন ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কোর্স। এই পাঠ্যক্রমটিতে অবশ্য বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক হলেই প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানের এই কোর্সটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য মিলবে www.eiilm.edu.in ওয়েবসাইটটিতে। |
|
|
|
|
|