গত তিন মাসে আমি দিল্লিতে একটু বেশি সময় কাটিয়েছি। ছোটবেলায়, ক্লাস ফাইভ-সিক্সে পড়ার সময় বছর দুয়েক দিল্লিতে ছিলাম, সেই জন্যেই হয়তো কলকাতা বাদ দিলে দেশের এই শহরটাকেই আমি সবচেয়ে ভাল চিনি। দিল্লি নিঃসন্দেহে ভারতের সবচেয়ে দর্শনীয় শহর। ফ্লাইওভারের পর ফ্লাইওভার, ঝাঁ-চকচকে নতুন বিমানবন্দর, অগণিত পার্ক, আস্ত একটা নতুন পাতাল রেল, দারুণ ক্যাম্পাস সহ অনেক স্কুল, উন্নত শহরতলি, মিডিয়ার সদর দফতর, রাজনীতির কেন্দ্র, ফাটাফাটি কাবাব, অপূর্ব পাপড়ি চাট... রাজধানী বটে! |
এ সবই খুব ভাল কথা। কিন্তু দিল্লির আর একটা দিক আছে। যাঁরা এ শহরকে চেনেন, তাঁরা আমাকে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এখানে কেউ সহজে বন্ধু হয় না। আলাপ-পরিচয় অবধি ঠিক আছে, বন্ধুত্ব দুর্লভ। আমি বলতে পারব না, এটা ঠিক কি ভুল।
তবে একটা কথা অবশ্যই বলতে পারি। ১৯১১ সালে ঠিক এই দিনে, ১২ ডিসেম্বর, দেশের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে সরে গিয়েছিল। তবে আমি মোটেও কলকাতা থেকে আমার ঠিকানা দিল্লিতে নিয়ে যাচ্ছি না। কভী নহী। |
• জম্মু কাশ্মীরে ছ’মাস অন্তর রাজধানী এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করে। এই ঘটনাটি ইংরেজিতে ‘দরবার মুভ’ নামে অভিহিত। দরবার স্থানান্তরের এই শাসনতান্ত্রিক প্রক্রিয়াটি বহু বছর ধরে চলে আসছে। এখন সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্দেশ না দিলেও সবাই জানে যে, এপ্রিলের শেষ শুক্র-শনিবারের পরই জম্মুর সরকারি অফিস-কাছারিতে তালা ঝুলবে, আবার অক্টোবর শেষ হলেই সবাইকে শ্রীনগর থেকে জম্মু ফেরার জন্য ব্যাগ গুছোতে হবে। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের প্রথম মহারাজা গুলাব সিংহের আমলে রাজধানী ছিল জম্মুতেই। তাঁর মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসেছিলেন তাঁর পুত্র রণবীর সিংহ। নতুন মহারাজা ভেবেছিলেন, মুসলিম ধর্মাবলম্বী কাশ্মীরি প্রজাদের কাছের মানুষ হওয়ার জন্য বছরে ছ’মাস শ্রীনগরে রাজধানী নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাটি আবশ্যক। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের গ্রীষ্মকালে প্রথম বার তিনি পুরো রাজদরবার ছয় মাসের জন্য কাশ্মীরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।
• পোর্ট ব্লেয়ারের নাম হয়েছে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির লেফটেন্যান্ট আর্চিবল্ড ব্লেয়ারের নামে। তিনি ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে এই দ্বীপে উপনিবেশ স্থাপন করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে অঞ্চলটি ব্রিটিশ শাসনের আওতায় এলে, সেখানে বন্দিশিবির তৈরি করা হয়।
• ১৫ অগস্ট গোটা ভারতে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপিত হয়। আর ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অগস্ট পুদুচ্চেরিকে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
• ‘জয়পুর’ শব্দের অর্থ বিজয়নগরী। ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় সওয়াই মান সিংহ শহরটি তৈরি করেন। নগরটির পরিকল্পনা করেছিলেন বাঙালি স্থপতি বিদ্যাধর ভট্টাচার্য। এই শহরের আর এক নাম ‘পিঙ্ক সিটি’। ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন প্রিন্স অব ওয়েলস শহরটিতে ঘুরতে আসেন। তাঁর সম্মানে গোটা শহরটিকে গোলাপি রঙে রাঙানো হয়। তাই এই নাম।
• কিংবদন্তি অনুসারে রামায়ণের নায়ক ও অযোধ্যার রাজা শ্রীরামচন্দ্র লঙ্কাবিজয় ও বনবাস থেকে ফিরে অনুগত অনুজ লক্ষ্মণকে লখনউ প্রদেশটি উপহার দেন। তাই লোকে বলে, লখনউয়ের প্রকৃত নাম ছিল লক্ষ্মণপুর। এই শহরটি নাকি লখনপুর বা লছমনপুর নামেও জনপ্রিয় ছিল।
• বেঙ্গালুরু শহরটির বয়স প্রায় ৫০০ বছর। আদতে এটি ছিল একটি ছোট্ট নগরী। স্থপতি ছিলেন কেম্পে গৌড়া। তিনি ১৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে একটি মাটির দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। তাঁর পুত্র চারটি ওয়াচ-টাওয়ার তৈরি করে শহরটির সীমানা নির্ধারণ করেছিলেন। আজ গোটা ভারতের সফটওয়্যার শিল্পের ৩৫% রফতানি হয় বেঙ্গালুরু থেকে।
• মহামতি অশোক পটনা শহর থেকে তাঁর বিশাল সাম্রাজ্যটি শাসন করতেন। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের শাসনকালে গ্রিক রাষ্ট্রদূত মেগাস্থিনিস এই শহরেই বাস করতেন। তৃতীয় ও সপ্তম শতাব্দীতে এই শহরে এসেছিলেন যথাক্রমে ফা হিয়েন ও হিউয়েন সাং। কৌটিল্য প্রভৃতি অনেক খ্যাতনামা পণ্ডিতের আবাসস্থল এই শহর। এখানেই লেখা হয় ‘অর্থশাস্ত্র’-র মতো বিভিন্ন কালজয়ী গ্রন্থ।
• ১৫৯০ খ্রিস্টাব্দে হায়দরাবাদ শহরটি প্রতিষ্ঠা করেন কুতুব শাহ রাজবংশের পঞ্চম সুলতান মহম্মদ কুলি কুতুব শাহ। তার আগে হায়দরাবাদ ভাগ্যনগর নামে পরিচিত ছিল। সুলতানের প্রেয়সী ভাগমতীর স্মরণে এই নাম। তাঁর মৃত্যুর পর ভাগ্যনগর নামটি দু-তিন বার পাল্টানো হয়। শেষে এর নাম হয় হায়দরাবাদ। |
১ অরুণাচল প্রদেশের রাজধানী ইটানগরের নাম কোথা থেকে এসেছে?
২ এটিএম-এর উদ্ভাবক জন আদ্রিয়ান শেফার্ড-ব্যারন ভারতের কোন রাজ্য-রাজধানীতে জন্মেছিলেন?
৩ হিন্দু দেবী কালীর অবতার শ্যামলা দেবীর নামানুসারে কোন রাজ্য-রাজধানীর নামকরণ করা হয়েছে?
৪ ভারত স্বাধীন হওয়ার পর, জার্মান স্থাপত্যশিল্পী ওটো এইচ কোইনসবার্জেস কোন রাজধানীর নগর পরিকল্পনা করেন?
৫ ব্রিটিশরা শহরের আসল নাম ‘কেওহিরা’ বলতে পারত না। তাদের বিকৃত উচ্চারণ থেকে কোন ভারতীয় রাজধানীর নাম এসেছে? |
১) ইটাফোর্ট নামের দুর্গ ২) শিলং ৩) শিমলা
৪) ভুবনেশ্বর ৫) কোহিমা। |