দলে ত্রিশ জন। পুজোর ছুটিতে চললাম প্রতিবেশী দেশ নেপাল দেখতে। পর্যটকদের কাছে নেপাল খুবই আকর্ষণীয়। অজানা আনন্দে সবাই যেন ছটফট করছিল। বর্ধমান থেকে চেপে বসলাম মিথিলা এক্সপ্রেসে।
বিহারের রক্সৌলে নেমে টাঙ্গায় চেপে পৌঁছে গেলাম দু’দেশের সীমান্তে অবস্থিত সুদৃশ্য তোরণের কাছে। তোরণ পেরিয়ে বীরগঞ্জের নির্ধারিত হোটেলে পৌঁছলাম। আর যেন তর সইছিল না। স্নান খাওয়া সেরেই চললাম আশি কিলোমিটার দূরে চিতোয়ান জাতীয় পার্কের দিকে। প্রায় ন’শো পঞ্চাশ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের জঙ্গল। পথের দুপাশে ধানখেত আর সবুজ জঙ্গলে মাখামাখি। রাতটা লজে কাটিয়ে সকালে হুডখোলা জিপে জঙ্গল সাফারি। দেবদারু, পাইন, শাল, ফার ইত্যাদির বিচিত্র সমাবেশ জঙ্গলে। ভিতরের হ্রদ পরিবেশকে সুশোভিত করেছে।
পরের দিন চিতোয়ান থেকে একশো কুড়ি কিলোমিটার দূরে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দিকে রওনা হয়ে গেলাম। রাজবাড়ির সীমানা পাঁচিলের ঠিক পাশেই আমাদের হোটেল। সেখানেই বিশ্রাম। সীমানা পাঁচিলের উচ্চতাই জানান দেয় রাজবাড়ির পরিচিতি। রাজতন্ত্রের অবসানের সঙ্গে রাজবাড়ির জৌলুসও আজ অনেকটাই ফিকে। সন্ধ্যায় বেরিয়ে পড়লাম ক্যাসিনো দেখতে। নীচে জুয়ার আসর, আলো আঁধারি পরিবেশ, চলছে নাচ। |
সীমান্তে সেই তোরণ। ছবিটি লেখকের পাঠানো। |
পরের গন্তব্য পশুপতি মন্দির। সুদৃশ্য মন্দিরটির আকৃতি অনেকটা প্যাগোডার মতো। চূড়া সোনা, দেওয়াল রূপা, পিতলের পাত দিয়ে মোড়া। সুউচ্চ পর্বতে বুদ্ধ মন্দির থেকে পাহাড়ি কাঠমান্ডুকে কত সুন্দর আর মনোরম লাগে তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।
নেপালের অন্যতম সাজানো শহর পোখরা এ বার আমাদের গন্তব্য। পথে বিখ্যাত মনোকামনা মন্দির। তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রোপওয়ে ধরে দু’টি পাহাড় পেরিয়ে মন্দির চত্বরে প্রবেশ সত্যিই রোমাঞ্চকর। মন্দিরে পুণ্যার্থীদের দীর্ঘ সর্পিল লাইন। অনেক নীচে নদী, সবুজ গাছপালা-সব মিলিয়ে যেন মায়াময় এক পটে আঁকা ছবি। পোখরায় পৌঁছে বিশ্রাম নিয়ে গেলাম ডেভিড ফলস্-এ। পাহাড়ের গা বেয়ে দুর্বার গতিতে সংকীর্ণ পথ বেয়ে নেমে আসা বিস্তীর্ণ জলরাশি আছড়ে পড়ছে। সৌন্দর্য পিপাসুদের মনে এতে দাগ কাটতে বাধ্য। পাখড়া শহরটি বেশ সাজানো গোছানো। বিদেশি পর্যটকদের উপস্থিতি এখানে চোখে পড়ার মতো।
সব শেষে ঘরে ফেরার পালা। কিন্তু চোখে লেগে আছে নেপালের মায়াময় ছবি। আর মনে নানা মধুর স্মৃতি।
|
নিজেই লিখুন আনন্দবাজারে। অনধিক ৫০০ শব্দে। খামে ‘পুজো এক্সপ্রেস’ লিখে পাঠিয়ে দিন
আনন্দবাজার পত্রিকা,
এ ১০, ডক্টরস কলোনি, সিটি সেন্টার,
দুর্গাপুর - ৭১৩২১৬।
অবশ্যই সঙ্গে দেবেন ছবি (নিজেদের বাদে)। ছবি মেল করতে চাইলে: durgapuredit@abp.in
(লেখা নির্বাচনে সম্পাদকীয় বিভাগের বিবেচনাই চূড়ান্ত) |
|