দল ছাড়ার হুমকি ‘ক্ষুব্ধ’ কর্মীদের
‘মূল ষড়যন্ত্রী’র পাশেই দাঁড়ালেন সৌগত-কাকলি
বিবৃতি দিয়ে পার্থ সরকারের গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন আগেই। শনিবার সরাসরি ধৃতের স্ত্রী-পরিবারের কাছে গিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন এলাকার তৃণমূলের দুই সাংসদ, সৌগত রায় এবং
কাকলি ঘোষদস্তিদার।
গত রবিবার কেষ্টপুরে খুন হন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী স্বপন মণ্ডল। ওই খুনের মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে তৃণমূলেরই স্থানীয় যুবনেতা পার্থ সরকারকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের দাবি, এই ঘটনায় ধৃত টুলকোকে গ্রেফতার করেই পার্থবাবুর কথা জানা গিয়েছিল। কিন্তু শুক্রবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা সাংসদ সৌগত রায় জানান, পার্থবাবুকে চক্রান্ত করে ওই খুনের ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে। গ্রেফতারের প্রতিবাদে সরব হন কাকলিদেবীও।
স্বপন খুনের পর শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূলকর্মীদের একাংশ। উঠে এসেছিল ওই এলাকায় সিন্ডিকেট ব্যবসা নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথাও। খুনের মূল ষড়যন্ত্রী হিসেবে পার্থকে গ্রেফতারের পরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একটি বড় অংশ। শুক্রবার স্বপন মণ্ডলের পরিবারও আদালতে দাঁড়িয়েই সরাসরি অভিযোগ করেছিল, পূর্ণেন্দুবাবু ‘ষড়যন্ত্র’ করে পার্থকে ফাঁসিয়েছেন। এ দিনও সে কথাই শোনা গিয়েছে এলাকার তৃণমূল কর্মীদের একাংশের মুখে।
বাগুইহাটিতে সিন্ডিকেট সংক্রান্ত এক বৈঠকে
সৌগত রায় ও কাকলি ঘোষদস্তিদার। ছবি: সুমন বল্লভ
দুই সাংসদের কাছে তাঁরা অভিযোগ করেছেন, পার্থবাবুর গ্রেফতারের পরে শ্রমমন্ত্রী-ঘনিষ্ঠরা বাজি ফাটিয়ে আনন্দ করেছে। তৃণমূলকর্মীদের একটি বড় অংশ এ দিন হুমকি দিয়েছেন, পার্থবাবুর উপরে এ ধরনের ‘অবিচার’ হলে তাঁরা আনুষ্ঠানিক ভাবে দল ছাড়বেন। দুই সাংসদের সামনে প্রকাশ্যেই দলবিরোধী কথা বলতে থাকেন ক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীরা।
সৌগতবাবু অবশ্য কর্মী-সমর্থকদের দলবিরোধী কথা বলতে নিষেধ করেন। একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন বলেও আশ্বাস দেন তিনি। সৌগতবাবু দলীয় সমর্থকদের বলেন, “সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। দলবিরোধী কথা বলবেন না।”
জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, পার্থ এবং স্বপন দলের একই গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতাও ছিল। সেই পার্থকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে স্বপন-খুনের ঘটনায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সমর্থকদের একাংশ মনে করছেন। পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছে, শ্রমমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক কাউন্সিলরের ছেলের নাম ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
পার্থ-গ্রেফতারের ঘটনায় ‘ক্ষুব্ধ’ বাগুইহাটির তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে এ দিন ফয়রা ভবন এলাকার দলীয় অফিসে বৈঠক করেন সৌগত ও কাকলি। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পার্থর বাবা রবীন্দ্রনাথ সরকার, মা বাণী সরকার এবং স্ত্রী পিয়ালি। তবে এ দিন এলাকায় দেখা মেলেনি স্থানীয় বিধায়ক তথা শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর। কেন এলাকায় যাচ্ছেন না, জানতে চাইলে পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, “এ ধরনের কোনও বৈঠকের খবর আমার কাছে ছিল না। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।”
এ দিনের বৈঠকে কাকলিদেবীর কাছে কান্নায় ভেঙে পড়েন পার্থবাবুর স্ত্রী পিয়ালি। তিনি বলেন, “ও (পার্থ) দিনের বেশির ভাগ সময়ই দল ও রাজনীতি নিয়েই থাকত। পরিবারের থেকেও দলকে বেশি গুরুত্ব দিত। অথচ ওঁকেই মিথ্যা অভিযোগে জেলে যেতে হল কেন?” পার্থবাবুর স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে সমবেদনা জানিয়ে কাকলিদেবী আশ্বাস দেন, বিষয়টি তিনি দেখবেন। এ দিন নিহত স্বপন মণ্ডলের বাড়িতেও যান দুই সাংসদ। স্বপনের পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন তাঁরা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.