কুলিক ছেড়ে লোকালয়ে পরিযায়ী
কুলিক পক্ষি নিবাস থেকে মুখ ফিরিয়ে পরিযায়ী পাখিদের একাংশ শহরের বিভিন্ন পাড়ার গাছে আশ্রয় নিচ্ছে। ৫ মাস ধরে লোকালয়ের গাছপালায় বাড়ছে পরিযায়ীর ভিড়। পাখির মলমূত্রে ভরছে চারদিক। পরিযায়ীদের আস্তানা বদলের ওই ঘটনায় শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশ পাখি তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। তাতে পাখি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন বন দফতর। কেন কুলিকের নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে পাখিরা লোকালয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। বনমন্ত্রী বলেন, “কেন পরিযায়ীরা পক্ষিনিবাস ছেড়ে শহরের লোকালয়ে আশ্রয় নিচ্ছে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছি। পরিযায়ীদের মল-মূত্রে লোকালয়ে দূষণ ছড়াচ্ছে এটা সত্যি। কিন্তু পাখিদের বিরক্ত করা ঠিক হচ্ছে না। সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য দফতরের কর্তাদের বলেছি। পরিযায়ীদের পক্ষিনিবাসে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। বাসিন্দাদের প্রতি আমাদের অনুরোধ এমন কিছু করবেন না যাতে পাখিরা ভবিষ্যতে পক্ষিনিবাস বিমুখ হয়।”
নিজস্ব চিত্র
কুলিকে পাখিদের খাদ্য-পানীয়ের রয়েছে কি না তা নিয়ে বিশদে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। রাত-বিরেতে কুলিকে শিকারিরা চোরাগোপ্তা হানা দেয় কি না সেটাও খতিয়ে দেখবেন বন বিভাগের অফিসাররা। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবছর জুন-জুলাই মাস নাগাদ ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য সহ বিভিন্ন দেশ থেকে ওপেন বিল স্টক, করমোন্যান্ট, নাইট হেরেন সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি কুলিক পক্ষিনিবাসে আসে। প্রজননের পর জানুয়ারি-ফ্রেব্রুয়ারি মাস নাগাদ ওরা ফিরে যায়। পরিযায়ী পাখিদের দেখতে প্রতিবছর রাজ্যের বিভিন্ন জেলা সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রচুর পর্যটক পক্ষিনিবাসে ভিড় করেন। পরিযায়ীরা পক্ষিনিবাসের বড় বড় গাছে বাসা বেঁধে প্রজননের কাজ করে। গত কয়েকমাস থেকে ওই পাখিদের একাংশ পক্ষিনিবাস ছেড়ে শহরের মিলনপাড়া, তুলসিপাড়া, তুলসিতলা, সুদর্শনপুর, আবদুলঘাটা, কর্ণজোড়া সহ বিভিন্ন পাড়ার বড় বড় গাছের ডগায় বাসা বেঁধে আশ্রয় নিয়েছে। এলাকায় দুষণ ও দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় বাসিন্দাদের একাংশ পরিযায়ী পাখিদের তাড়াতে নানা ভাবে হামলা চালাচ্ছে। ইট, পাটকেল ছুড়ে পাখিদের জখম করা হচ্ছে। এমনটা চললে ভবিষ্যতে পরিযায়ীরা কুলিক পক্ষিনিবাসে আসবে কি না তা নিয়ে বনকর্তারা সংশয় প্রকাশ করেন। রায়গঞ্জের বিভাগীয় বনাধিকারিক অপূর্ব সেন বলেন, “হামলা চালালে ভয়ে পরিযায়ীরা আর এখানে আসবে না। আমরা বাসিন্দাদের সহযোগিতা চেয়েছি। কি কারণে ওই পাখিরা পক্ষিনিবাস ছেড়ে লোকালয়ের আশ্রয় নিচ্ছে তা জানার চেষ্টা চলছে। পক্ষিনিবাসে পাখিদের বাসস্থান, প্রজনন ও পর্যাপ্ত খাদ্যের উপযুক্ত পরিকাঠামো রয়েছে। সেখানে কোনও সমস্যা হয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এদিকে রায়গঞ্জ কালচারাল ফোরামের তরফে পরিযায়ীদের দ্রুত কুলিকে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করার আর্জি জানানো হয়েছে। সংস্থার সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “পরিযায়ী পাখিরা লোকালয়ে বসবাস শুরু করায় দূষণ বেড়ে চলেছে। দুর্গন্ধের ফলে খুব সমস্যা হচ্ছে। ওই সমস্যা সমাধানের জন্য বনদফতরের কর্তাদের কাছে পরিযায়ী পাখিদের পক্ষিনিবাসে ফিরিয়ে নিতে উদ্যোগ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি। সেই সঙ্গে বাসিন্দাদের কাছেও অনুরোধ করেছি তাঁরা যেন পাখিদের উপরে হামলা না চালিয়ে বন দফতরকে সহযোগিতা করে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.