বন রক্ষীদের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য আগামী বাজেটে অর্থ দফতরের কাছে প্রস্তাব পেশ করবে বন দফতর। রবিবার শিলিগুড়ির কাছে সুকনায় বন্যপ্রাণ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। তিনি বলেন, “বন রক্ষীদের অভাবে রাজ্যের জঙ্গলগুলিতে নজরদারির কাজে সমস্যা হচ্ছে। যা পরিস্থিতি তাতে বন্যপ্রাণি জঙ্গলেই সুরক্ষিত নয়। এই পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটে যাতে রন রক্ষীদের সমস্ত শূন্য পদে নিয়োগ করা যায় সেই পরিকল্পনা হয়েছে।” রাজ্য জুড়ে ৮০০ বনরক্ষী পদ শূন্য পড়ে রয়েছে। অথচ বনাঞ্চলগুলিতে নজরদারির কাজ করেন এই বন রক্ষীরাই। বুনো হাতির পাল এক জঙ্গল থেকে অন্য জঙ্গলে যাওয়ার সময়ে যাতে লোকায়লে ঢুকে না-পড়ে সেদিকে তাঁরাই লক্ষ্য রাখেন। এমনকী, জঙ্গলে কাঠ চুরি বন্ধ করা থেকে বন্য জন্তু শিকার বন্ধ করতেই বন দফতরের ভরসা রক্ষীরাই। সেই পদে লোক না-থাকায় রাজ্য জুড়েই বন দফতরকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। রক্ষীর অভাবে মহানন্দা, কার্শিয়াং বন বিভাগ-সহ একাধিক জঙ্গল রক্ষা করতে গিয়ে আধিকারিকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার বন রক্ষী পদে নিয়োগের পরিকল্পনা নিলেও শেষ পর্যন্ত তা বেশি দূর এগোয়নি। |
এ বার নতুন করে সেই প্রক্রিয়া শুরু হলে বন দফতরের বিভিন্ন বিভাগে অস্থায়ী ভাবে কর্মরত কর্মীরাও সুবিধে পাবেন। বনমন্ত্রী জানান, দশ বছরের বেশি দিন কাজ করেছেন এমন কর্মীদের মাসিক ৬ হাজার ৬০০ টাকা এবং তার চেয়ে কম দিন কাজ করছেন এমন কর্মীদের ৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে বন দফতরের সবচেয়ে মাথাব্যাথা বুনো হাতির পাল নিয়ে। বিশেষ করে রেল লাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পরে প্রতি বছর বেশ কিছু বুনো হাতি মারা পড়ছে। এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হলেও এ বার কার্যকরী পদক্ষেপ করতে চলেছে বন দফতর। শিলিগুড়ি জংশন থেকে মালবাজার হয়ে আলিপুরদুয়ার রুটের রেলপথে ওয়াচ টাওয়ার ও সার্চলাইটের ব্যবস্থা করার জন্য উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষকে ২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। বনকর্মী বলেন, “সম্প্রতি রেল কর্তৃপক্ষ ওই টাকা হাতে পেয়েছেন। আশা করছি, তাঁরা দ্রুত কাজে নামবেন।” অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, তাঁর দফতরের সঙ্গে বন ও পর্যটন দফতর মিলে যৌথ উদ্যোগে কাজে নামবে। এই ব্যাপারে দ্রুত ডুয়ার্সে বৈঠক করা হবে। অনুষ্ঠানে রাজ্য বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়, বন দফতরের সচিব সুবেশ দাস, উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল রাজকুমার মাহাতোলিয়া, রবীন্দ্র কৃষ্ণমূর্তি-সহ বেশ কিছু বনাধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। বনমন্ত্রী সুকনায় টুরিস্ট ইনফরমেশন সেন্টার উদ্বোধন করেন। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এদিন গরুমারা ও জলদাপাড়া জঙ্গলের মাছ নিয়ে তৈরি সমীক্ষাপত্র বনমন্ত্রী হাতে দেওয়া হয়। অ্যানিমাল লিঙ্ক সংস্থার পক্ষ থেকে সুকনা এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের হাতে স্নেক ক্যাচার যন্ত্র তুলে দেওয়া হয়। |