নাতিকে প্রথম বার বড় পর্দায় দেখার উত্তেজনা। আর দাদাকে পর্দায় শেষ বার দেখার নস্টালজিয়া!
এই দুইয়ের টানেই ফের প্রেক্ষাগৃহে তিনি। দশ বছর পরে! ছবির নাম ‘রকস্টার’।
তিনি বলবীর রাজ পৃথ্বীরাজ কপূর ওরফে শশী কপূর এই মুহূর্তে কপূর পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ। শরীরটা আজকাল আর তেমন ভালো যায় না তাঁর। এক কালে পর্দায় দাপিয়ে বেড়ানো চেহারাটার চলাফেরার জন্য এখন ভরসা করতে হয় হুইলচেয়ারের উপরেই। বাড়ি থেকে বেরোনোটাও তাই প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে শশীর। কোনও ছবি দেখার ইচ্ছে হলে তা দেখে নেন বাড়িতে বসেই।
তবু এ ছবিটা দেখার জন্য না বেরিয়ে পারেননি শশী। এই ছবিটা তো তাঁকে দেখতে হবে প্রেক্ষাগৃহে বসেই! ছবির মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন নাতি রণবীর কপূর, যাঁকে এর আগে কখনও বড় পর্দায় অভিনয় করতে দেখেননি শশী। কিন্তু এটা তো রণবীরের প্রথম ছবি নয়। রণবীরের বড় পর্দায় অভিষেক তো হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। তা হলে বেছে বেছে ‘রকস্টার’ দেখতেই কেন ছুটে গেলেন তিনি? |
কারণটা সম্ভবত আরও অনেক গভীরে। এই ছবিতেই শেষ বার বড় পর্দায় দেখা গিয়েছে শাম্মি কপূরকে। শশী-ঘনিষ্ঠ এক জনের কথায়, “দাদার শেষ অভিনয় বড় পর্দাতেই দেখার ইচ্ছে ছিল ওঁর। তাই হাজারো শারীরিক অসুবিধা সত্ত্বেও প্রেক্ষাগৃহেই যেতে চেয়েছিলেন।” অগস্টে শাম্মি কপূর মারা যাওয়ার পর অসুস্থ শরীরেই শশী এসেছিলেন তাঁর শেষকৃত্যে, দাদাকে শেষ বার দেখতে। আর আজ সেই দাদারই আরও একটা শেষের সাক্ষী থাকতেই হুইল চেয়ারে ভর করেও হাজির হলেন তিনি। রকস্টারে শাম্মি কপূর ছিলেন প্রখ্যাত সানাইবাদকের ভূমিকায়। সানাই থেমে গিয়েছে। নেই সানাইবাদকও। তবু আজকের কয়েক ঘণ্টার হাজিরায় সেই স্তব্ধ সানাইয়ে জীবনের সুর বেঁধে দিয়ে গেলেন শশী।
এক দশক বাদে শশীর এই প্রেক্ষাগৃহে যাওয়ার ঘটনায় স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত রণবীরের বাবা ঋষি কপূর, সম্পর্কে যিনি শশীর ভাইপো। বললেন, “ভেবে ভাল লাগছে যে রণবীরের ছবি দেখার জন্য কাকা প্রায় দশ বছর পর প্রেক্ষাগৃহে গেলেন। রণবীরের কাজ ভাল লেগেছে বলে জানিয়েছেন।”
কিন্তু ছবি দেখে বেরোনোর পর ৭৩ বছরের বৃদ্ধের মন জুড়ে রয়ে গেলেন কোন জন, তা হয়তো থেকে যাবে অজানাই!
|
শিলিগুড়ি চলচ্চিত্র উৎসব
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
আগামী বছর থেকে শিলিগুড়িতেও এক সঙ্গে তিনটি জায়গায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার এমনই ঘোষণা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের। এ দিন সন্ধ্যায় দীনবন্ধু মঞ্চে দ্বাদশ শিলিগুড়ি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন করেন পরিচালক গৌতম ঘোষ। সেখানেই এ কথা জানান গৌতমবাবু। মন্ত্রী বলেন, “রাজ্য সরকার শুধুমাত্র পরিকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, মানব সম্পদ উন্নয়নের উপরও জোর দিয়েছে। নাটক, যাত্রা, খেলাধূলা, সিনেমা সবেই জোর দেওয়া হচ্ছে। কলকাতায় প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে উৎসবটি হয়েছে। তাই আগামীবার শিলিগুড়িতে শুধু দীনবন্ধু মঞ্চ নয়, শহরের তিনটি জায়গায় বড়মাপের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হবে।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবকে সাধারনের মধ্যে ছনিয়ে দিতে এ বারই নন্দনের গণ্ডি ছাড়িয়ে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে উৎসবের উদ্বোধন হয়। সেই ধাঁচেই উত্তরবঙ্গেও বেশ কয়েকটি জায়গায় উৎসব হবে। এ দিন উদ্বোধনী ছবি হিসাবে ইরানের পরিচালক আব্বাস কিয়েরোস্তমি ‘সাটির্ফায়েড কপি’ ছবিটি দেখানো হয়। রাশিয়ার পরিচালক সের্গেই আইজেনস্টাইনের ‘ব্যাটেলশিপ পাটমকিন’-এর ৭৫ বছর, ঋত্বিক ঘটরের কোমলগান্ধার এবং অজয় করের সপ্তপদী’র ৫০ বছর পূর্তির পাশাপাশি সদস্য প্রয়াত ভূপেন হাজারিকারকে গান নিয়ে ‘কোলাজ’ করে একটি সুন্দর নাচের অনুষ্ঠানও হয়। উৎসবে বিভিন্ন ভাষায় মোট ১৯টি ছবি দেখানো হবে। উৎসব চলবে আগামী ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত। |