|
|
|
|
থাকছেন না সদস্যও |
বিদ্যালয় পাঠ্যক্রম কমিটির শীর্ষ পদ ছাড়ছেন সুনন্দ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
উচ্চশিক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান পদ আগেই ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। এ বার রাজ্য সরকারের বিদ্যালয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গেও সব সম্পর্ক ছিন্ন করছেন সুনন্দ সান্যাল। ওই কমিটির চেয়ারম্যান এবং সদস্য দু’টি পদেই ইস্তফা দিচ্ছেন তিনি। আগামী মঙ্গলবার তিনি কমিটির সদস্য-সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেবেন।
|
সুনন্দ সান্যাল |
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল ব্যবস্থা তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সঙ্গে সুনন্দবাবুর মতপার্থক্য তো রয়েছেই। তাই কমিটির চেয়ারম্যান হয়েও অন্তর্বর্তী রিপোর্ট প্রকাশের আগে ‘নোট অফ ডিসেন্ট’ দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সুনন্দবাবুর ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, ওই প্রবীণ শিক্ষকের সব সংস্রব ছিন্ন করার অন্য কিছু কারণও রয়েছে। তিনি মনে করছেন, যা হচ্ছে, মোটেই ঠিক হচ্ছে না। ঘনিষ্ঠদের ধারণা, তাঁর এই উদ্বেগ শুধু শিক্ষার ব্যাপারেই সীমাবদ্ধ নয়। রাজ্যের অন্য অনেক সাম্প্রতিক ঘটনাতেও তিনি হতাশ।
পাঠ্যক্রম কমিটি কয়েক দিন আগেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট পেশ করেছে। সে-দিনই তাঁর ‘নোট অফ ডিসেন্ট’ কমিটির সচিবের কাছে পাঠিয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন সুনন্দবাবু। রাজ্য সরকার অবশ্য কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার আগেই অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল ব্যবস্থা রদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। সুনন্দবাবু জানান, এই সিদ্ধান্তের জেরে স্কুলশিক্ষা তো ক্ষতিগ্রস্ত হবেই, উচ্চশিক্ষাতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। সেই কারণেই এমন একটি সিদ্ধান্তের শরিক হতে রাজি নন তিনি।
সুনন্দবাবুর ঘনিষ্ঠ লোকজন জানান, তিনি যে নিজেকে সরিয়ে নিতে চান, শিক্ষামন্ত্রীকে ‘এসএমএস’ করে ইতিমধ্যেই তা জানিয়ে দিয়েছেন ওই শিক্ষাবিদ। যদিও শুক্রবার ব্রাত্যবাবু জানান, সুনন্দবাবুর কাছ থেকে তিনি কোনও চিঠি পাননি। সুনন্দবাবুর লিখে দেওয়া ‘মুখবন্ধ’-সহ কমিটির অন্তর্বর্তী রিপোর্টটি এ দিনই স্কুলশিক্ষা দফতরের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। মুখবন্ধে বলা হয়েছে, রিপোর্টটি ওয়েবসাইটে আগামী এক মাস থাকবে। এই ব্যাপারে যে-কেউ মতামত জানাতে পারেন। সুনন্দবাবু মতের সঙ্গে যাঁরা সহমত, তাঁরা মতামত পাঠাতে পারেন। সব মতামতের ভিত্তিতে রিপোর্ট চূড়ান্ত করবে ওই কমিটি।
রিপোর্ট চূড়ান্ত হওয়ার আগেই সুনন্দবাবু ইস্তফা দিচ্ছেন কেন?
ওই শিক্ষকের ঘনিষ্ঠজনেরা এর একটি ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তাঁদের কথায়, রাজ্যে রাজনৈতিক পরিবর্তন আনার ব্যাপারে যেসব বিশিষ্ট জন সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন, সুনন্দবাবু তাঁদের অন্যতম। নয়া সরকার তাঁকে স্কুলশিক্ষা ও উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত দু’টি কমিটিরই চেয়ারম্যান করে। কিন্তু অল্প কিছু দিনের মধ্যেই উচ্চশিক্ষা কমিটির চেয়ারম্যানের পদে ইস্তফা দেন তিনি। এ বার স্কুলশিক্ষা সংক্রান্ত কমিটি থেকেও নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিচ্ছেন।
সুনন্দবাবু ইস্তফা ‘ভুল বার্তা’ দিতে পারে, এই আশঙ্কায় কমিটির একাধিক সদস্য তাঁর সঙ্গে দেখা করে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু প্রবীণ ওই শিক্ষক এখনও নিজের সিদ্ধান্ত বদলাতে রাজি হননি। |
|
|
|
|
|