‘নির্বাচনী বিধি’র কথা মাথায় না রাখায় সুর কেটে গেল পূর্ব রেলের দু’-দু’টি অনুষ্ঠানের।
রবিবার ঘড়ির কাঁটা সকাল ৯টা পার হতেই পূর্ব রেলের বি আর সিংহ হাসপাতালের তৃতীয় তলে নবনির্মিত বার্ন ইউনিটে হাজির হয়েছিলেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। আমন্ত্রণ পেয়ে হাজির ছিলেন সাংবাদিকেরাও। কিন্তু, ফিতে কাটার পরেই থমকে যায় ওই অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে আসার কথা ছিল তৃণমূল সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়েরও। কিন্তু, তাঁরা না আসায় রেলমন্ত্রী খোঁজ শুরু করেন। ছোটাছুটি শুরু করেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান থেকে পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব ও মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার-সহ রেলের পদস্থ কর্তারাও। এর পরেই রেলমন্ত্রী বাইরে এসে সাংবাদিকদের বলেন, “এটা রেলের নিজস্ব অনুষ্ঠান। এখানে কিছুই বলা হবে না।” উল্লেখ্য, আগামী ৩০ নভেম্বর দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। তা নিয়ে বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। ফলে, কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় এখন নির্বাচনী আচরণবিধি জারি রয়েছে। |
বি আর সিংহ হাসপাতালের নবনির্মিত বার্ন ইউনিট ঘুরে
দেখছেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। রবিবার। নিজস্ব চিত্র |
বি আর সিংহ থেকে রেলমন্ত্রী যান পূর্ব রেলের সদর দফতর ফেয়ারলি প্লেসে। সেখানে দ্বিতীয় অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, রেলমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন, তিনি পতাকা নেড়ে কবিগুরু এক্সপ্রেসের আনুষ্ঠানিক যাত্রার সূচনাও করবেন না। ফলে, সেখান থেকে আবার অনুষ্ঠানটি পরিবর্তন করে নিয়ে যাওয়া হয় হাওড়া স্টেশনে। শেষে হাওড়ায় তৃণমূল সাংসদ অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ট্রেনটির উদ্বোধন করেন।
ফেয়ারলি প্লেসে অবশ্য মন্ত্রী রয়ে যান। সেখানে তিনি রেলের কর্তাদের সঙ্গে এক দফা বৈঠক করেন। বি আর সিংহ হাসপাতালে না গেলেও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ফেয়ারলি প্লেসে এসেছিলেন। সেখানে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে মেট্রোর সম্প্রসারণ নিয়ে বৈঠক হয় তাঁর। পরে সেখান থেকে তাঁরা যান হুগলির ফুরফুরা শরিফে। ডানকুনি থেকে ফুরফুরা শরিফ পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেলপথের শিলান্যাস করতেই রেলমন্ত্রী এ দিন সেখানে গিয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায়, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি প্রমুখ। অনুষ্ঠান চলাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্দিকির মোবাইলে ফোন করে এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরুর জন্য শুভেচ্ছা জানান। মোবাইল ফোন মাইকের কাছে ধরে তা শোনানো হয় উপস্থিত শ্রোতাদেরও। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি চাই, তারকেশ্বর এবং ফুরফুরা শরিফের মধ্যেও দ্রুত রেল সংযোগ স্থাপন করা হোক। সারা রাজ্যে যে ভাবে উন্নয়নের কাজ হচ্ছে, তাতে সামিল হোক রেল। তা হলেই সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব।”
এ দিকে, হাওড়ার বঙ্কিম সেতু থেকে উচ্ছেদ হওয়া হকারদের একাংশ এ দিন ওই অনুষ্ঠানে মুকুলবাবু এবং কল্যাণবাবুর কাছে গিয়ে তাঁদের ফের সেতুতে বসতে চেয়ে আবেদন জানান। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন ওই তৃণমূল নেতারা। রাজ্য অবশ্য আগেই জানিয়েছে, ওই সেতুতে বসতে দেওয়া হবে না।
বি আর সিংহ হাসপাতালে যে বার্ন ইউনিটটি এ দিন উদ্বোধন করা হয়, তেমন বার্ন ইউনিট পূর্ব ভারতে এই প্রথম বলে দাবি করেছেন রেলকর্তারা। এই ইউনিটটি চার শয্যা বিশিষ্ট। অত্যাধুনিক ব্যবস্থায় সজ্জিত এই ইউনিটে ভবিষ্যতে আরও শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে রেলের। |
সহায়ক মূল্যে শস্য না কিনলে আন্দোলন, জানাল কংগ্রেস
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
|
চাষির কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে রাজ্য সরকারকে ধান-পাট কিনতে হবে, এই দাবিতে আগামী ২৩ নভেম্বর রাজ্যের সমস্ত বিডিও-দফতরের সামনে বিক্ষোভ-অবস্থান করবে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “কেন্দ্রীয় সরকার ধান-পাটের সহায়ক মূল্য ধার্য করেছে। কিন্তু তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারি দফতর উদ্যোগী হয়নি। এর ফলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।” তবে পাটের সহায়ক মূল্য কার্যকর করতে ইতিমধ্যেই জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলোচনা করেছেন। পাটের জন্য কেন্দ্র যে সহায়ক মূল্য ধার্য করেছে, তার উপরে রাজ্যের তরফে ক্যুইন্টাল প্রতি ১০০ টাকা করে অতিরিক্ত মূল্য ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি বলে কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামীণ কৃষিজীবী মানুষকে কাছে পেতে ‘মরিয়া’ কংগ্রেস। দলীয় সংগঠন ‘মজবুত’ ও ‘চাঙ্গা’ রাখতে কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন ব্যাপারেই পথে নামার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে কংগ্রেসে। দমদমে দলীয় সভায় এ দিন প্রদীপবাবু ও মানস ভুঁইয়াও কংগ্রেসকে ‘শক্তিশালী’ করতে দলীয় কর্মীদের কাছে আবেদন জানান। |