|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু... |
কেন্দ্র-রাজ্য ভিন্ন বিধি ‘দত্তক’ মায়েরা সংকটে |
দত্তক শিশুর মায়েদের জন্য আলাদা ছুটির আর্জি’ (২৬-১০) রচনাটি পড়ে একজন কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মরতা এবং ‘অ্যাডপটিভ মা’ হিসেবে অত্যন্ত বিস্মিত হলাম। ২০১০ সালে এক পুত্রসন্তান দত্তক নিয়ে আমি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়মে ১৮০ দিন ‘অ্যাডপটিভ লিভ’ পেয়েছি। সাবেরী প্রামাণিকের রচনাটি না-পড়লে জানতাম না যে, সেই একই নিয়ম রাজ্য সরকারের চাকুরিরতা মায়েদের দত্তক নেওয়ার ব্যাপারে প্রযোজ্য নয়। কেন্দ্র ও রাজ্যের নিয়মে এই বৈষম্যের কারণ ঠিক কী, বুঝে উঠতে পারলাম না।
|
|
আমার সাত মাসের পুত্রসন্তান যখন প্রথম আমার কোলে আসে, তার মধ্যে অপুষ্টির লক্ষণ ছিল পর্যাপ্ত এবং শিশু-চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রাত দিন যত্ন ও পরিচর্যার মধ্য দিয়ে আমি তাকে সুস্থ করি। ‘আ্যাডপটিভ লিভ’ না-পেলে এটা আমার পক্ষে কতখানি সম্ভব হত, জানি না। এক দিকে যেমন ইনফার্টিলিটির হার বেড়ে চলেছে, অন্য দিকে, বিশ্ব জুড়ে স্বীকৃতি পাচ্ছে এবং প্রচলিত হচ্ছে দত্তক নেওয়ার প্রথা। সেখানে দাঁড়িয়ে দত্তক নেওয়া শিশুর মাকে আ্যাডপটিভ লিভ না-দেওয়াটা আমার মনে হয়, অত্যন্ত নিন্দনীয়। একজন অ্যাডপটিভ মা হয়ে আমি তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্দেশে বলব, এক স্বাভাবিক মায়ের মতো অ্যাডপটিভ মায়েরও ছুটি প্রয়োজন। তাই রাজ্য সরকার বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিচার করুক। |
সুস্মিতা রায়। কলকাতা-৫
|
২ |
রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী মাতৃকালীন ছুটি দত্তক নেওয়া শিশুর মা পেতে পারেন না। কারণ, মাতৃকালীন ছুটি স্বাভাবিক মায়ের সুস্থ হয়ে ওঠা এবং সন্তান প্রসবের প্রভাব কাটিয়ে ওঠার জন্য নির্দিষ্ট। অবাক লাগে এই ভেবে যে, মাতৃকালীন ছুটি ১২০ দিন থেকে ১৩৫ দিন এবং এখন ১৮০ দিন ক্রমবর্ধিত হয়েছে শুধুই কি স্বাভাবিক মায়ের সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য? নর্মাল বা সিজারিয়ান ডেলিভারির প্রভাব কাটাতে কি ১৮০ দিনের সুদীর্ঘ সময়সীমার প্রয়োজন? তাই যদি হয়, তা হলে কি পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসা পদ্ধতিকে অগ্রগামী না পশ্চদগামী বলব?
মাতৃকালীন ছুটির প্রয়োজন সদ্যোজাত শিশুর পরিচর্যার জন্য। শিশুর শারীরিক ও মানসিক ক্রমবিকাশ সুনিশ্চিত করতে আবশ্যিক মাতৃস্নেহের উষ্ণতা। আমার প্রশ্ন, দত্তক নেওয়া শিশুর ক্ষেত্রে কি এই শারীরিক ও মানসিক ক্রমবিকাশ প্রযোজ্য নয়? মাতৃস্নেহ, যত্ন ও পরিচর্যা কোনওটারই কি প্রয়োজন নেই দত্তক শিশুর? যদি প্রয়োজন থাকে, তা হলে রাজ্য সরকার দত্তক নেওয়া মায়ের জন্য পৃথক ছুটি অগ্রাহ্য করে কোন ভিত্তিতে? ‘চাইল্ড অ্যাডাপশন লিভ’-এর মোড়কে শিক্ষিকার ‘স্বাভাবিক নিয়ম মেনে প্রাপ্য ছুটি’ অর্থাৎ আর্নড লিভ বা মেডিক্যাল লিভ কেটে নেওয়ার যে প্রথা পশ্চিমবঙ্গে চলে আসছে, তার অপর নাম কি বঞ্চনা ও প্রতারণা নয়? একজন শিক্ষিকার প্রমোশন, ইনক্রিমেন্ট এবং অবসরকালীন সুযোগ সুবিধার সঙ্গে দত্তক নেওয়ার মতো ব্যক্তিগত অধিকারকে জড়িয়ে ফেলে সরকার কি শিক্ষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রভেদ সৃষ্টি করছে না? অথচ একই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দত্তক নেওয়া শিক্ষিকাকে মাতৃকালীন ছুটি মঞ্জুর করে!
যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ‘আত্মজা’-র আর্জি মেনে অ্যাডপটিভ লিভ-এর প্রয়োজন অনুভব করেছে, সেখানে আমাদের রাজ্যে পূর্বতন সরকার দত্তক নেওয়া মায়ের জন্য শাস্তি নির্ধারণ করছে আর্নড লিভ ও মেডিক্যাল লিভ কেটে নিয়ে। ভরসা রাখি, আজকের পরিবর্তনশীল আবহাওয়ায় এমন একটি বিষয় উত্থাপন করার মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাজগৎ সংকীর্ণতা ও কুসংস্কারমুক্ত হবে। দত্তক শিশু ও দত্তক নেওয়া সরকারি চাকুরিরতা মায়েরা সুবিচার পাবেন। |
অর্চনা সরকার। আলিপুর, কলকাতা-২৭
|
শব্দাসুর |
‘সশব্দ’ শিরোনামে সম্পাদকীয়টি (২৮-১০) পড়লাম। লেখাটির সূত্র ধরে বলি, অনেক বছর ধরেই শব্দবাজি না-ফাটানোর আবেদন জানানো হয়ে আসছে সরকার এবং সচেতন জনসাধারণের কাছ থেকে। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেননি শব্দবাজি যাঁরা তৈরি করেন, যাঁরা বিক্রি করেন, যাঁরা কেনেন এবং যাঁরা ফাটান। বরং বছর বছর শব্দবাজির তাণ্ডব বেড়েই চলেছে। শব্দবাজির ভয়ঙ্কর শব্দ পরিবেশ, মানুষের শরীর আর মনের কী পরিমাণ ক্ষতি করে, তা কারও অজানা থাকার কথা নয়। শব্দবাজি সম্পর্কিত আইন, আবেদন সবই অর্থহীন হয়ে গেছে। সে জন্য শব্দবাজি ফাটানো বন্ধ করতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন। ১) শব্দবাজি তৈরি নিষিদ্ধ করা। ২) শব্দবাজি বিক্রি বন্ধ করা। ৩) জনসাধারণকে সচেতন করা। ৪) প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ভূমিকা থাকা। ৫) শব্দবাজি তৈরি, বিক্রি বা ফাটালে শাস্তির ব্যবস্থা। শব্দবাজি তৈরি হবে, বিক্রি হবে, আবার শব্দবাজি না-ফাটানোর আবেদন করা হবে, কারও কারও শব্দবাজি ফাটানোর নীরব প্রশ্রয় থাকবে, ফাটালে শাস্তিও হবে না এ রকম চললে কোনও দিন সমস্যার সমাধান হবে না। শব্দের যন্ত্রণা বাড়তেই থাকবে।
|
স্বপনকুমার দে। কল্যাণী, নদিয়া
|
সংবাদে বিভ্রান্তি |
আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘বাড়িতে বোমার মশলা, ধৃত তৃণমূল নেতা’ (১৯-১০) শিরোনামে যে খবর ছাপা হয়েছে, তাতে বোলপুর পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্সের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সংবাদ অনুযায়ী সেই অ্যাম্বুল্যান্সটি ১৭ অক্টোবর ২০১১ সন্ধেবেলায় পুলিশের হাতে নাকি ধরা পড়েছে। এই প্রসঙ্গে জানাতে চাই যে, বোলপুর পুরসভার দুটি অ্যাম্বুল্যান্স আছে। সেই দুটি অ্যাম্বুল্যান্স ১৭ অক্টোবর ২০১১ সারা দিন-রাত পুরসভার গ্যারেজে মজুত ছিল। তাই বোলপুর পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স পুলিশের হাতে ধরা পড়ার যে খবর ছাপা হয়েছে, তা সর্বৈব মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিজনক। |
সুশান্ত ভকত। চেয়ারম্যান, বোলপুর পুরসভা |
প্রতিবেদকের উত্তর: অ্যাম্বুল্যান্সটি বস্তুত বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের। ভুলবশত বোলপুর পুরসভা লেখা হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। |
|
|
|
|
|