মনোরঞ্জন ১...
রোমিও-র সঙ্গে

সকাল ৮টা থেকে ১১টা | জিম
ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই আমার যেটা চাই, সেটা হল এক কাপ চা। চা-এর ব্যাপারে আমি খুব খুঁতখুঁতে। চা খেয়েই ছুটি জিমে। এত সকালে ড্রাইভার আসতে পারে না বলে নিজেই ড্রাইভ করে যাই। কার্ডিও আর ওজনএই দু’টোই প্রধানত করি। তবে জিমে কোনও বাঁধা রুটিন মানি না। অনেকেই সপ্তাহে এক দিন হাত, এক দিন বুক, এক দিন পায়ের ব্যায়াম করেন। আমি সে ভাবে করি না। আমার মুডের ওপর নির্ভর করে সে দিন কী করব। জিম থেকে বাড়ি ফিরে কাগজগুলো পড়ে ফেলি। তার পরেই নিয়ম করে আমার চাই টাটকা ফলের রস। কখনও মৌসম্বি, কখনও গাজর। জিমের খাটুনির পর ফলের রসটা বেশ চাঙ্গা করে। সত্যি বলতে, কোনও দিন যদি জিমের পর ফলের রসটা মিস হয়ে যায়, মনে হয় একটা দরকারি জিনিস মিস হয়ে গেল।

দুপুর ১২.৩০ | পুজো করা
স্নানের পর প্রথমেই ধূপ জ্বালাই। আমার একটা ছোট্ট মন্দির আছে। মার্বেলের তৈরি। সেখানে প্রণাম করি। তার পর বাড়ির সামনের ঘরে তিরুপতি বালাজিকে ধূপ দিই। প্রযোজক নীতেশ (শর্মা) এই ফ্ল্যাটের গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠানে আমায় বিরাট একটা পাথরের গণপতি মূর্তি উপহার দিয়েছিল। সেই গণপতিকে প্রণাম না করে আমি বেরোই না।

দুপুর ১২.৪৫ | লাঞ্চ
পুজো শেষ হলেই আমার কেন জানি না ভীষণ খিদে পায়। কিন্তু আমার খাবারটা দেখলে অনেকেরই হয়তো খেতে ইচ্ছে করবে না। সপ্তাহে চার দিন আমার ডায়েট। সবজি আর মুরগি সেদ্ধ খাই। তাতে এক ফোঁটাও নুন থাকে না। তাই বলে ভাববেন না যে ভাল ভাল খাবার থেকে আমি সব সময় নিজেকে সরিয়ে রাখি। মাঝে মাঝে চলে যাই দ্য পার্ক-এ, স্টেক খেতে। অথবা বাড়িতেই পিৎজা আনিয়ে নিই। তবে সেটা ওই মাঝে মধ্যে। নিয়ম করে নয়।

দুপুর ১.১৫ | বাড়ি থেকে বেরোনো

শু্যটিং না থাকলে সাধারণত আমি দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাই। কিন্তু তার আগে আমায় একটা বিরাট ডিসিশন নিতে হয়। আমার কাছে অন্তত ৩০ জোড়া জুতো আছে। কোথায় যাচ্ছি, কেন যাচ্ছি, সে সব বুঝে আমি কোন জুতো পরে বেরোব সেটা ঠিক করি। আমার বাড়ির একটা কর্নার শুধু জুতোর জন্যই রাখা। আর যেই বেরোই, ফ্যানদের ফোন আসা শুরু হয়। অনেকেই ফোন করে দেখা করতে চায়, কেউ চায় তাদের মা-বাবার সঙ্গে কথা বলি। কেবল কেউ যখন ‘আই লাভ ইউ’ বলে আমি থতমত খেয়ে যাই। ‘আই লাভ ইউ’-এর উত্তর তো ‘সেম টু ইউ’ হতে পারে না। কোনও রকমে হেসে-টেসে ওই ধরনের কথোপকথন থেকে বেরোই।

দুপুর ২.৩০ | আরও কাজ

যে দিন এই ছবিগুলো তোলা হয়েছে, সে দিন সল্ট লেক সিটি সেন্টারে একটা গাড়ির কার্নিভালে যেতে হয়েছিল। দু’দিন আগে এখানেই দেখেছিলাম শাহরুখ খানকে নিয়ে কী মারামারি। এই না হলে স্টারডম! আমাকেও আমার প্রযোজকরা বলেন শাহরুখকে দেখে মিডিয়া কী করে সামলাতে হয় সেটা শেখো। বিশ্বাস করুন, সেটা শেখারই আপ্রাণ চেষ্টা করছি।

দুপুর ৩.৩০ | সল্ট লেকে চা

প্রত্যেক দিন এই সময়ে আমার একটা চা খাওয়ার ইচ্ছে হয়। স্টুডিওয় থাকলে, স্টুডিওর চা-ই খাই। কিন্তু আজ এখন রাস্তায়। সুতরাং রাস্তার চা-ই খাব। আমার রাস্তার দোকানে প্লাস্টিকের জাগের জল খেতেও আপত্তি নেই। ভাঁড়ের চা খেতেও নেই। আমি ভীষণ ভাবে শেকড়ের কাছাকাছি থাকি। এই জিনিসগুলো করতে খুব ভাল লাগে। এই তো, এএমআরআই, সল্ট লেকের বাইরে দাঁড়িয়ে টুক করে একটু চা খেয়ে নিলাম।

বিকেল ৪.৩০ | রিহার্সাল

‘রোমিও’ যখন মুক্তি পাবে আমি দেশে থাকব না। শু্যটিং করতে চলে যাব প্যারিসে। এ দিকে নভেম্বর মাস থেকেই সারা বাংলায় আমার শো থাকে। ‘দেব নাইট’। সেখানে আমায় গান গাইতে হয়, নাচতে হয়এক কথায় পুরো শো-টা ধরে থাকতে হয়। যেহেতু রিহার্সালের সময় আর পাব না, তাই আজই রিহার্সাল করতে হল। লাইভ অডিয়েন্সের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাকশনটা আমি সব সময়ই দারুণ এনজয় করি।

সন্ধে ৬ | ডাবিং
আমার দিনের রুটিন ভীষণ টাইট থাকে। সারা দিনে অনেকগুলো কাজ করতে হয়। আজ চলে এসেছি টালিগঞ্জে, ‘খোকাবাবু’র ডাবিং করতে। যে দিন ডাবিং থাকে, সে দিন আমি একটু নার্ভাস থাকি। কারণ ডাবিং-এ ভীষণ কনসেনট্রেশন দরকার। আর ডাবিং শেষ হওয়ার পর এতটাই ক্লান্ত হয়ে যাই যে, মনে হয় আর না। এ বার বাড়ি গিয়ে শুয়ে পড়ি।


সন্ধে ৭.৩০ | ভেঙ্কটেশের অফিস
কোনও ছবি মুক্তির আগে প্রায় প্রত্যেক দিনই আমার ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের লেক গার্ডেন্সের অফিসে মিটিং থাকে। আজকেও ছবির পাবলিসিটি নিয়ে রানেদা’র (নিসপাল সিংহ) সঙ্গে মিটিং আছে। মিটিংগুলো হয়ে গেলেই আমায় আপনারা এই এডিটিং রুমে দেখতে পাবেন। এই অফিসে এটাই আমার প্রিয়তম জায়গা। এখানে আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতে পারি। আজ এসেছি ‘রোমিও’র কয়েকটা দৃশ্য দেখতে।

রাত ৯ | বাড়ি ফিরে
কলকাতায় আমার তেমন বন্ধুবান্ধব নেই, দাদুলদা’ ছাড়া। কিন্তু রোজ দাদুলদা’র সঙ্গেও দেখা হয় না। আর এমনিতেও আমি খুব একটা আড্ডা মারি না। শু্যটিং না থাকলে ন’টার মধ্যে বাড়ি চলে আসি। ফিরে অবশ্য টিভি দেখি না। রিল্যাক্স করার জন্য আমার পছন্দ আইপডে গান শোনা। একা একা গান শুনি, ট্যুইটারে পোস্ট লিখি, নিজের পরের ‘লুক’টা কী হবে, সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করি। তার পর ডিনার করে রোমিও কখন ঘুমের দেশে চলে যায়, নিজেও জানতে পারে না।

খোকাবাবুর অন্তরমহল
লিভিং রুমে: লিভিং রুমটা এই ফ্ল্যাটে আমার খুব প্রিয় জায়গা। অনেকটা সময় এখানে রিল্যাক্স করি, আড্ডা মারি। কেউ এলে দেখাও করি এখানে। কিন্তু যে রকম কাজের চাপ বেড়ে যাচ্ছে, এ বার একটা আলাদা অফিস নিচ্ছি। লিভিং রুমের অন্য এক দিকে আছে সেলার। অতিথিদের জন্য দেশ বিদেশের সেরা ওয়াইন আছে সেখানে। আবার সেলারের সামনের টেবিলে হেলথ ড্রিংকের জারও পাবেন!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.