|
|
|
|
|
স্বাস্থ্য ঘিরে পেশা |
পরিচিতি কম কিন্তু চাহিদা আছে, এমন বেশ কিছু পাঠ্যক্রম চলে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি নিয়ে।
গত সপ্তাহের পর, এ বার থাকল তেমনই আরও কয়েকটির হাল-হদিস। লিখছেন কৌলিক ঘোষ। |
আগের সপ্তাহে আলোচনা হয়েছিল প্রধানত ডিপ্লোমা ইন হেল্থ এডুকেশন, ডিপ্লোমা ইন ডায়েটেটিক্স এবং ব্যাচেলর ইন অডিওলজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথোলজি নিয়ে। এ বার জানানো হল ব্যাচেলর ইন ফিজিওথেরাপি, ব্যাচেলর ইন প্রোসথেটিক্স অ্যান্ড অরথোটিক্স, এম এসসি ইন মেডিক্যাল বায়োটেকনোলজির মতো কয়েকটি পাঠ্যক্রমের কথা।
ব্যাচেলর ইন ফিজিওথেরাপি (বি পি টি): রাজ্যে ব্যাচেলর ইন ফিজিওথেরাপি (বি পি টি) পাঠ্যক্রমটি অবশ্য হালে বেশ কিছুটা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। আগে মুষ্টিমেয় কিছু প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা পড়া যেত। কিন্তু এখন রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি নিয়ে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বি পি টি পড়ায়।
কলকাতার বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স (রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান)-এর ফিজিওথেরাপি বিভাগের প্রধান অলক রায়চৌধুরীর মতে, স্নাতক পাঠ্যক্রম শুরু হওয়ায় ‘ডিপ্লোমা ইন ফিজিওথেরাপি’-র চাহিদা কমে যাচ্ছে। তাঁর কথায়, “ফিজিওথেরাপি নিয়ে পড়াশোনা করা ছেলেমেয়ের চাহিদা খুব বেশি। অনেক আগেই স্নাতক স্তরে বিষয়টি চালু হওয়া উচিত ছিল। যাই হোক, এখন স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বেশ কিছু কলেজ পাঠ্যক্রমটি পড়ানোয় চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্য বজায় রাখা যাচ্ছে।” স্নাতকোত্তর স্তরে খানতিনেক প্রতিষ্ঠানে ফিজিওথেরাপি পড়ানো হচ্ছে। এই সংখ্যাও আরও বাড়া উচিত বলে মনে করেন অলকবাবু।
এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন রাজ্যের একাধিক কলেজ বি পি টি পড়ালেও, ভর্তির দায়িত্ব সামলায় ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। তারাই নেয় ভর্তির প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘জেনপার’। যেখানে চার ঘন্টায় ১০০ নম্বর করে জীববিজ্ঞান, রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানের পরীক্ষা দিতে হয়। সাধারণত মে মাস নাগাদ হয় ওই প্রবেশিকা। ১৭ বছরের উপর বয়স হলে বসা যায়। পরীক্ষায় বসার আবেদন করতে ১০+২-এ বিষয় হিসাবে ইংরেজি, পদার্থ- বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান থাকতে হবে।
ব্যাচেলর ইন প্রোসথেটিক্স অ্যান্ড অরথোটিক্স (বি পি ও): রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া পরিকল্পিত এবং স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত ব্যাচেলর ইন প্রোসথেটিক্স অ্যান্ড অরথোটিক্স (বি পি ও) পাঠ্যক্রমটি চালু রয়েছে কলকাতায় বনহুগলির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর দ্য অরথোপেডিক্যালি হ্যান্ডিক্যাপ্ড-এ। ১০+২ স্তরে বিষয় হিসেবে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং অঙ্ক বা জীববিজ্ঞান থাকলে ভর্তি হওয়া যাবে। চার বছরের পাঠ্যক্রম। শেষে ছ’মাসের ইন্টার্নশিপ করতে হয়। |
|
রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিদ্যাসাগর ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ, বর্ধমান ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল লাইফ সায়েন্সেস, নোপানি ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ কেয়ার স্টাডিজ এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অরথোপেডিক্যালি হ্যান্ডিক্যাপ্ড (এনআইওএইচ)-এ বিভিন্ন বিষয়ের স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম চালু রয়েছে। প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হতে হয়। যেমন, এনআইওএইচ-এর মাস্টার ইন ফিজিওথেরাপি, মাস্টার ইন অক্যুপেশনাল থেরাপি, মাস্টার ইন প্রোসথেটিক্স অ্যান্ড অরথোটিক্স। প্রতিটিরই মেয়াদ ২ বছর। স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক হওয়া জরুরি। নোপানি ইনস্টিটিউট অফ হেলথকেয়ার স্টাডিজ-এ আছে মাস্টার ইন ফিজিওথেরাপি, বর্ধমান ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল লাইফসায়েন্সেস-এ তিনটি বিষয়ে মাস্টার ইন ফিজিওথেরাপি এবং বিদ্যাসাগর ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ-এ দুটি বিষয়ে মাস্টার ইন ফিজিওথেরাপি।
হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট-এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি: রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত তিনটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, জেনেসিস ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি, ডি এস এম এস কলেজ এবং চার্ণক হসপিটালে মাস্টার ইন হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট পড়ানো হয়। যে কোনও বিষয়ে স্নাতক হলেই ভর্তির জন্য আয়োজিত ওয়েস্ট বেঙ্গল ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট-এ বসা যায়। এতে অঙ্ক, লজিক্যাল রিজনিং, জেনারেল নলেজ, জেনারেল সায়েন্স ও ইংরেজি এই পাঁচটি বিষয় মিলিয়ে ১০০টি প্রশ্ন থাকে। প্রশ্ন এম সি কিউ ধরনের। সময় বরাদ্দ ৮০ মিনিট। ন্যূনতম ৪০ নম্বর না পেলে কাউন্সেলিং-এ ডাকে না।
মেডিক্যাল বায়োটেকনোলজিতে এমএসসি: স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত এমএসসি ইন মেডিক্যাল বায়োটেকনোলজি পাঠ্যক্রমটি করায় ইনস্টিটিউট অফ জেনেটিক মেডিসিন অ্যান্ড জেনোমিক সায়েন্স। জীববিজ্ঞানে ৫৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে স্নাতক হলে কিংবা বায়োটেকনোলজিতে ৫৫ শতাংশ নিয়ে বি টেক হলে প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসা যায়। ৮০ মিনিটের মধ্যে ১০০টি এম সি কিউ ধরনের প্রশ্নের উত্তর করতে হয়।
|
আরও কিছু চেনা-অচেনা পাঠ্যক্রম |
রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত অন্যান্য পাঠ্যক্রমগুলির মধ্যে আছে স্নাতকোত্তর স্তরে এম ডি বা এম এস (অ্যালোপ্যাথি), আয়ুর্বেদ-এ স্নাতকোত্তর কোর্স, পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি অ্যান্ড ডিপ্লোমা কোর্সেস ইন মর্ডান মেডিসিন, পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট কোর্স ইন ডেন্টাল সায়েন্সেস, পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট হোমিওপ্যাথি কোর্স, পোস্ট-ডক্টরাল মেডিক্যাল ডিগ্রি কোর্স, এম এসসি ইন অ্যাপ্লায়েড নিউট্রিশন, মাস্টার অফ ফিজিওথেরাপি, মাস্টার অফ সায়েন্স (প্রোসথেটিক্স), এম এসসি (অক্যুপেশন্যাল থেরাপি), মাস্টার অফ অডিওলজি অ্যান্ড স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথোলজি, ডিপ্লোমা ইন হেল্থ এডুকেশন অ্যান্ড ডিপ্লোমা ইন ডায়েটেটিক্স কোর্স ইত্যাদি। এগুলির প্রবেশিকা পরীক্ষাও নেয় বিশ্ববিদ্যালয়।
|
এই মুহূর্তে রাজ্যে ১৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত এবং যেখানে এমবিবিএস পাঠ্যক্রম পড়ানো হয়। রাজ্যে এমবিবিএস পড়ার জন্য রয়েছে ১৭৫৫টি আসন। নার্সিং পড়ার জন্য স্নাতকোত্তর স্তরে রয়েছে ১৩টি কলেজ। বি ডি এস পড়ার জন্য চারটি কলেজ, বি এইচ এম এস অর্থাৎ হোমিওপ্যাথিতে স্নাতক পড়ার জন্য ১২টি কলেজ, ফিজিওথেরাপিতে স্নাতক পড়ার জন্য ১৬টি কলেজ। মোটের উপর ৮১টি কলেজ আছে যেগুলি রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত। |
|
আপনার প্রশ্ন
বিশেষজ্ঞের উত্তর |
|
|
|
প্রশ্ন: পরের বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেব। দ্বাদশ পেরিয়ে স্পেস সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই। কী ভাবে আমার এই স্বপ্নপূরণ হতে পারে জানালে বড়ই উপকৃত হব।
অলক দাশগুপ্ত, শিলিগুড়ি
উত্তর: এত আগে থেকেই যে তুমি নিজের স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য ভাবনা-চিন্তা শুরু করে দিয়েছ, সেটা সত্যি তারিফ করার মতো। স্পেস সায়েন্স নিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে প্রথমেই এ দেশের যে প্রতিষ্ঠানটির নাম উল্লেখ করতে হয়, সেটি হল কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।
প্রতিষ্ঠানটিতে চার বছরের বি টেক ইন এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং, বি টেক ইন অ্যাভিওনিক্স এবং বি টেক ইন ফিজিক্যাল সায়েন্স পড়ার সুযোগ আছে। প্রথম দুটি পাঠ্যক্রমে আসন সংখ্যা ৬০টি করে। বি টেক ইন ফিজিক্যাল সায়েন্সে ৩৬টি আসন।
ভর্তির জন্য একটি সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং গণিতের উপর প্রশ্ন করা হয় পরীক্ষাটিতে। কী ধরনের প্রশ্ন আসে, পরীক্ষা কখন হয় ইত্যাদি ভর্তি সম্পর্কে সমস্ত তথ্য পাবে www.iist.ac.in ওয়েবসাইটে। এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে পার। |
|
|
|
|
|