ফের সনিয়াকে আক্রমণ শুরু করল বিজেপি
মাঝে মাস কয়েকের বিরতি। ফের কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করল বিজেপি। তবে এ নিয়ে কোনও তাড়াহুড়ো নয়, ধীরে ধীরে সরব হওয়ার কৌশল নিয়েছে কেন্দ্রের প্রধান বিরোধী দল।
আজ এক দিকে বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী তিহাড় জেলে বন্দি বিজেপি সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে সনিয়ার রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেল-সহ অন্য কংগ্রেস নেতাদের ভোট-ঘুষ কাণ্ডে দায়ী করেন। অন্য দিকে দলের সদর দফতরে বিজেপি মুখপাত্র প্রকাশ জাভড়েকরের অভিযোগ, টিম-অণ্ণার বিরুদ্ধে দিগ্বিজয় সিংহ যে ভাষা ব্যবহার করছেন, তা আসলে সনিয়ারই ভাষা। তাই তাঁর বিরুদ্ধে সনিয়া কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এখানেই থেমে না থেকে বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, টু-জি দুর্নীতিতে কংগ্রেস নেতৃত্বও লাভের টাকা পেয়েছে। এই অভিযোগ তুলে পরোক্ষে সনিয়া গাঁধীকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করাল কেন্দ্রের প্রধান বিরোধী দল।
কয়েক মাস আগে হরিয়ানায় রাজীব গাঁধী ট্রাস্টের জমি নিয়ে সরাসরি গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আক্রমণের সুযোগ পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ঠিক ওই সময়ই অসুস্থতার কারণে বিদেশের হাসপাতালে ভর্তি হন সনিয়া। অসুস্থতার কারণে সেই সময় সনিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের এক নেতার কথায়, “সনিয়া এখন সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক কাজে ফিরে এসেছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁকে সক্রিয় অংশ নিতেও দেখা যাচ্ছে। ফলে শুধু মনমোহন সিংহ নন, দল এ বারে ধীরে ধীরে সনিয়া গাঁধীর বিরুদ্ধেও আক্রমণ শুরু করবে।”
তবে সনিয়া গাঁধীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলে তা যে বুমেরাং হতে পারে, সেই আশঙ্কাও রয়েছে বিজেপি শিবিরে। চলতি বছরের গোড়ায় গুয়াহাটিতে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে একটি বিষয়ই আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল দল সনিয়া গাঁধীকে সরাসরি আক্রমণ করবে কি না। করলে আক্রমণের মাত্রা কতটা হবে। বৈঠকে অবশ্য দল স্থির করে, দুর্নীতির অভিযোগ যে সরাসরি দশ জনপথ পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে, তা প্রচারে তুলে ধরা হবে। তার পরে গুয়াহাটির জনসভাতেই সরাসরি সনিয়ার নাম করে আক্রমণ করেন লালকৃষ্ণ আডবাণী।
আজ সনিয়াকে নিশানা করলেও অনেকটাই সংযত ছিল বিজেপি। প্রকাশ জাভড়েকর দিগ্বিজয় প্রসঙ্গ তুলে সনিয়াকে দুষলেও করলেও সরাসরি আক্রমণ করেননি। তিনি বলেন, “অণ্ণা হজারে, বাবা রামদেব, শ্রী শ্রী রবিশঙ্করকে কটাক্ষ করে ‘এ-বি-সি’ অ্যাখ্যা দিচ্ছেন দিগ্বিজয় সিংহ। আসলে উনি হলেন কংগ্রেসের ‘ডি’ পরিকল্পনা! সনিয়ার সমর্থন না পেলে দিগ্বিজয়ের পক্ষে এ ধরনের মন্তব্য করা সম্ভব নয়।” এই সঙ্গেই প্রকাশের অভিযোগ, “নিজেদের ভোটব্যাঙ্কের জন্যই সনিয়া তাঁর বক্তব্য দিগ্বিজয়কে দিয়ে বলাচ্ছেন।” টু-জি কেলেঙ্কারি প্রশ্নেও চিদম্বরমের প্রসঙ্গ তুলে পরোক্ষে সনিয়াকে নিশানা করেছে বিজেপি। জাভড়েকরের অভিযোগ, “টু-জি-তে যে লুঠ হয়েছে, তাতে কংগ্রেস কত ভাগ পেয়েছে, তা খোলসা করুক। সে কারণেই চিদম্বরমকে বাঁচানোর জন্য এত তৎপর কংগ্রেস নেতৃত্ব।”
এ দিন তিহাড়ে বন্দি বিজেপির সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার পর গডকড়ী যে ভাবে সরাসরি সনিয়ার রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেলের প্রসঙ্গ টেনেছেন, সেটিও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এর আগে আডবাণী, অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজের মতো বিজেপির শীর্ষ নেতারা তিহাড়ে গেলেও কখনও আহমেদ পটেলের নাম নেননি। এই প্রথম বিজেপির শীর্ষ কোনও নেতা ভোট-ঘুষ কাণ্ডে সরাসরি সনিয়ার রাজনৈতিক সচিবের নাম তুললেন। গডকড়ী অভিযোগ করেন, “আহমেদ পটেল ও অন্য কংগ্রেস নেতারা এই দুর্নীতি অনুমোদন করেছেন। সৎ লোকেরা এখন জেলে রয়েছেন আর ষড়যন্ত্রকারীরা বহাল তবিয়তে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।” বিজেপির এক নেতার কথায়, “আপাতত এ ভাবেই সনিয়ার ঘনিষ্ঠ নেতাদের আক্রমণ করে জল মাপার চেষ্টা হচ্ছে। এতে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়, তা বুঝে ধীরে ধীরে আক্রমণের মাত্রা তীব্র করা হবে। লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, গাঁধী পরিবার নিয়ে বিজেপি আরও সরব হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.