|
|
|
|
|
|
|
চলচ্চিত্র উৎসবের থিম |
পর্দায় কলকাতা |
এক গোয়ালঘর থেকে মৃণাল সেন উদ্ধার করেছিলেন সেই ছবি। আর কালীপদ দাস পরিচালিত সেই ‘জামাইবাবু’ থেকেই শুরু করা যায় বাংলা ছবির সঙ্গে এ শহরের সম্পর্কের চরিত্রের ইতিহাসটা। সে ছবিতে ছিল গ্রাম থেকে শহরে এসে নাস্তানাবুদ হওয়ার মজার গল্প। এ শহর, কলকাতা তখনই একটা চরিত্র হয়ে উঠেছে বাংলা ছবিতে। কিন্তু তিরিশের দশকের সেই কলকাতা আজ ২০১১-য় হয়তো বদলে গিয়েছে আমূল। ইতিমধ্যে কেবল ব্যঙ্গ বা ভাঁড়ামি নয়, এ মহানগরের জটিল বিস্ময়কর সঙ্গীতটি রচিত হয়ে উঠেছে বাংলা ছবির পর্দায়। এ শহর তার ভূগোল আর মানুষের ইতিহাস নিয়ে চরিত্র হয়ে উঠেছে নিজেই। কখনও শহরের নামেই নাম হয়েছে ছবিরও, যেমন মৃণাল সেনের ‘কলকাতা ৭১’। ক্যালকাটা থেকে কলকাতার সেই রূপান্তরের ইতিহাসই এ বার তুলে ধরবে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব। উৎসবের এ বারের থিম ক্যালকাটা/কলকাতা। |
|
কাহিনিচিত্রে কলকাতার বিবর্তনের একটা রূপরেখা তুলে ধরাই এর উদ্দেশ্য। সম্ভাব্য তালিকায় আছে সত্যজিৎ রায়ের ‘জনঅরণ্য’, মৃণাল সেনের ‘ইন্টারভিউ’, ঋত্বিক ঘটকের ‘যুক্তি তক্কো গপ্পো’, তপন সিংহের ‘আতঙ্ক’, অপর্ণা সেনের ‘৩৬ চৌরঙ্গি লেন’, ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘দহন’, গৌতম ঘোষের ‘কালবেলা’, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘গৃহযুদ্ধ’, সন্দীপ রায়ের ‘ফটিকচাঁদ’, বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘হাউসফুল’, বিরসা দাশগুপ্তের ‘০৩৩’। ‘‘ছবি নির্বাচনটা ভেবে দেখার মতো। প্রতিষ্ঠিত পরিচালকদের ছবি যেমন আছে, তেমনই আছে নবীন পরিচালকদের ছবিও। তথাকথিত আর্ট ফিল্ম যেমন আছে, আছে তথাকথিত কমার্শিয়াল ছবিও। আসলে আধুনিক মাধ্যম সিনেমার ভিতর দিয়ে গ্রাম-শহরের সম্পর্কের টানাপোড়েন, নগরজীবনের রূপান্তরটা এ ভাবেই ফুটে ওঠে’’ বলছিলেন চলচ্চিত্রবিদ্যার অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। নানা দৃষ্টিভঙ্গিতে, নানা মাত্রায় আট দশকের ছবির ইতিহাসে এ শহর কলকাতা এ ভাবেই ফুটে উঠবে। নিশ্চয় পর্দায় ধরা পড়বে সেই কলকাতাও যা নিয়তই বদলাচ্ছে। সঙ্গের ছবিতে ‘৩৬ চৌরঙ্গি লেন’-এর শুটিং-এর দৃশ্য।
|
রানওয়ে |
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে ছোট্ট ঝুপড়িতে অভাবগ্রস্ত এক মুসলিম পরিবার, জীবিকার তাগিদে হাড়ভাঙা খাটুনি পরিবারের মা ও মেয়ের, বাবা মধ্যপ্রাচ্যে, আর মাদ্রাসা-পালানো ছেলেটি ছুটে বেড়ায় সেই আকাশের তলায়... যেখান দিয়ে ছায়া ফেলে উড়ে যায় বিমানগুলি। রানওয়ে: মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় কিছুকাল আগে প্রয়াত তারেক মাসুদের শেষ ছবি (সঙ্গে স্থিরচিত্র)। তারেকের স্ত্রী ক্যাথরিন তাঁদের পুত্র আর ছবিটি সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় আসছেন, এ-ছবির চিত্রনাট্য থেকে প্রযোজনা পর্যন্ত তিনি সহকর্মী ছিলেন তারেকের। |
|
সিনে সেন্ট্রাল-এর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রোৎসব ‘ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম অব নিউ সিনেমা’-র উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন তাঁরা আর দেখানো হবে ছবিটি, ১১ নভেম্বর মেট্রো সিনেমা হলে। ভারত-বাংলাদেশের এমন মেলবন্ধনের উদ্বোধন করবেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, সঙ্গে থাকবেন মৃণাল সেন। ‘সত্যজিৎ রায় লাইফটাইম অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হবে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে। ২১টি দেশের ৪১টি ছবি দেখানো হচ্ছে উৎসবে, প্রতিদিন তিনটি শো মেট্রো-য়। চলবে ১৭ নভেম্বর অবধি।
|
অভিভূত |
প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টা টানা গান গেয়ে গিয়েছি, টেরই পাইনি কী ভাবে সময় গড়িয়ে যাচ্ছে, এত উদ্দীপনা শ্রোতা-দর্শকদের মধ্যে! প্রতীক চৌধুরীর গলার স্বরে বিস্ময়, সেই সুদূর লাগোস-এর বঙ্গীয় পরিষদ আয়োজিত শারদীয় দুর্গোৎসবে গান গেয়ে সদ্য ফিরেছেন কলকাতায়। ‘দেড় ঘণ্টা নিজের পছন্দমতো গাওয়ার পর থেকেই অনুরোধ আসতে শুরু করল। কয়েক বছর আগের অ্যালবামের পুরনো গান ‘লাফিং বুদ্ধ’ গাইতে হল। আমার সমস্ত গানের এত খুঁটিনাটি জানেন ওখানকার বাঙালি বাসিন্দারা, সংখ্যায় প্রায় হাজারের কাছাকাছি, সঙ্গে তাঁদের তুমুল আতিথেয়তা।’ মুগ্ধতা প্রতীকের গলায়। এই আফ্রিকা সফরের পরের সুখবরটি হল প্রতীকের নতুন গানের অ্যালবাম বেরোচ্ছে ডিসেম্বরে: মন বাওরা।
|
গান-গল্প |
‘সুরের পথে স্মৃতির সফর’। পুজোর গানের স্মৃতি উস্কে দিয়ে এমনই এক বৈঠকী আড্ডার আয়োজন করেছে বাসন্তী বিদ্যাবীথি। পুরনো দিনের পুজোর গান, গানের গল্প আর নানা ইতিহাস নিয়ে সেখানে স্মৃতির ডালি উজাড় করে দেবেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, হৈমন্তী শুক্ল, অনুপ ঘোষাল, পার্থ ঘোষ। থাকছেন অন্তরা চৌধুরী, কৌশিকী চক্রবর্তী দেশিকান, চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্ত, শমীক পালও। সূত্রধর দেবাশিস বসু। ৫ নভেম্বর এই অভিনব আসর বসছে বাসন্তী বিদ্যাবীথির কর্ণধার সুদীপ সেনের সোনারপুর মিশনপল্লির বাগানবাড়িতে।
|
শুধুই শিল্পী |
বাবা রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতেন। সেই শুনে গান শেখা। তখন খুবই ছোট। বাড়িতে অতিথিরা এসেছেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনানোর পর পছন্দমত গান গাইতে বলা হল। ভীষণ উৎসাহে ছেলেটি পাশের ছাইয়ের গাদায় উঠে দুম করে গড়িয়ে পড়ে। গায়, ‘ইয়াহু, চাহে কোহি মুঝে জঙ্গলি কহে’। সেই বয়েসেই মা’র উৎসাহে হিন্দি সিনেমার পোকা। বাবার ইচ্ছে, ছেলে খেয়াল শিখুক। বদলির চাকরি। যেখানেই যান, খোঁজেন খেয়াল শিক্ষক। ষাটের দশকে কাটোয়ায় সন্ধান পান স্বর্ণকার নিমাই পাত্রের। ঠুকঠুক কাজের মাঝে গলা সাধেন। সেই শুরু। শিখেছেন ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের ছাত্র কৃষ্ণচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। নাট্যদল ‘কুশীলব’-এর জন্মদিনে নিজের জীবনের নানা নাটকীয় বৃত্তান্ত শোনালেন সুগত মারজিৎ। তাঁর কথায়, জীবনটাই নাটক। তিনি শিক্ষক, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। কিন্তু এ দিন সন্ধ্যায় শিশির মঞ্চে ‘নকশী গাঁথা’য় ধরা পড়লেন অন্য সুগত। যিনি শুধুই উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিল্পী।
|
ট্রেকিং-বন্ধু |
নতুন প্রজন্মকে পাহাড়-বনে টেনে আনার কাজটা অনেক দিন ধরেই চুপচাপ করে আসছিলেন ইউব্যাকের রানা রায়। ওঁর খ্যাপা বাহিনীর সৌজন্যে অনেকেই ছকবন্দি জীবনের খাঁচা থেকে বেরিয়ে জীবনকে দেখতে শিখেছে অন্য চোখে। জঙ্গল-পাহাড়ে ক্যাম্পিং, ট্রেকিং যে আসলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আজীবন শৃঙ্খলাবদ্ধ, নিয়মানুবর্তী হওয়ার শিক্ষা জোগায় এ অভিজ্ঞতাটা কিন্তু প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে না এলে অর্জিত হয় না। এ বার প্রায় নিঃশব্দে আরও একটা জরুরি কাজ সেরে ফেললেন তাঁরা। প্রথম বার যারা ট্রেকিং বা ক্যাম্পিংয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য প্রকাশ করলেন ‘ট্রেকবই’। স্যাক গোছানো থেকে পাহাড়ি পথের নিয়ম নীতি, ম্যাপ-কম্পাস-ওষুধ, দড়ি-গেরো-ফাঁস জরুরি প্রতিটি বিষয়ের তালিকা ও নির্দেশিকা মিলবে এই বইয়ে। লিখেছেন অভিজ্ঞরাই। রয়েছে অজস্র রেখাচিত্র। পাহাড়ি পথে এ বার পকেটে করেই নিয়ে যাওয়া যাবে নির্ভরযোগ্য এই নতুন বন্ধুকে।
|
কুশলী |
জন্ম ১৯৭১, জল-জঙ্গলের দেশ কাকদ্বীপ-এ। বর্তমানে কলকাতায় সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক। এই দুয়ের মাঝে যে বিচিত্র যাত্রাপথ, মৃণালকান্তি গায়েনের সাম্প্রতিক প্রদর্শনীতে তারই নির্ভুল ছায়া। অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এ চলছে তাঁর ভাস্কর্যের একক প্রদর্শনী ‘ভয়েজ’। ব্রোঞ্জ এবং সিরামিকসের কাজে নৌকার আদল, সঙ্গে জল-মাটি-উদ্ভিদ। ফর্ম-এর জ্যামিতির নিপুণ ব্যবহারে ব্রোঞ্জ দিয়ে এমনকী জলে বিম্বিত ছায়াও গড়েছেন মৃণাল। শূন্যতার কুশলী প্রয়োগে তৈরি করেছেন বাতাসের অনুভব। স্বল্পভাষী ভাস্করটি চেনা আকারে এনেছেন অচেনা অনুষঙ্গ, নৌকার শরীরে দেখা দিয়েছেন দশভুজা। কী ভাবে, তা দেখা যাবে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত, নিউ সাউথ ‘এ’ গ্যালারিতে। |
|
যুগলবন্দি |
বিখ্যাত জ্যাজ সংগীতশিল্পী পল বড্রি ঘুরে গেলেন দীপাবলির কলকাতায়। সঙ্গে ছিলেন তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল পাথওয়েজ-এর সদস্য টিম আর্মাকস্ট, টনি জেফারসন এবং বেনেট পাস্টার। আমেরিকান সেন্টার, কলকাতার উদ্যোগে সে দিন তাজ বেঙ্গলের খোলা ছাদে শোনা গেল পাথওয়েজ-এর জ্যাজ এবং ব্লুজ। ওদের সঙ্গে অতিথিশিল্পী ছিলেন এ শহরের সহজিয়া গায়ক দেব চৌধুরি। মিশে গেল জ্যাজের সঙ্গে ভবাপাগলার বাউল ‘পরমে পরম জানিয়া’ অথবা ‘রাই জাগো’-র মতো ভোরাই। যুগলবন্দি হল দেব চৌধুরির বাংলার লোকবাদ্যের সঙ্গে টিম আর্মাকস্টের স্যাক্সোফোন। জ্যাজ সংগীতে ভালবাসার সুর নিয়ে ওঁরা বিশ্বময় ঘুরছেন ‘দ্য রিদম রোড ট্যুর’ শীর্ষকে। অনুষ্ঠানটি নিবেদিত হল উগ্রপন্থীদের হাতে নিহত সাংবাদিক ও শিল্পী ড্যানিয়েল পার্ল-এর স্মৃতিতে।
|
অগ্নিপুরুষ |
‘সময়ের ছাই সরে গেলে দেখা যায় ইতিহাসে দাঁড়িয়ে আছেন এক অগ্নিপুরুষ: তাঁর নাম ঋত্বিককুমার ঘটক।’ তাঁর লেখা চলচ্চিত্র মানুষ এবং আরো কিছু বইটির ভূমিকায় লিখেছেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। এ বারে বলবেন তিনি কী ভাবে ঋত্বিকের ছবি জল দেয় আমাদের শিকড়ে, আসন্ন ৪ নভেম্বর ঋত্বিকের জন্মদিনে, নন্দন-২-এ সন্ধে ছ’টায়। জন্মদিন পালনের আয়োজন করছে নন্দন, জানালেন অধিকর্তা যাদব মণ্ডল। সহায়তায় ঋত্বিক মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। আসবেন সুরমা ঘটক। থাকবেন রঞ্জিত মল্লিক হরনাথ চক্রবর্তী এবং সন্দীপ রায়। এঁরা বলার পর দেখানো হবে ঋত্বিকের ‘অযান্ত্রিক’ সত্যজিতের প্রিয় ছবি। অন্য দিকে আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাব-এর উদ্যোগে ‘মুখোমুখি’তে রাজা সেনের সঙ্গে কথা বলবেন সৌরভ ষড়ঙ্গী অনিন্দ্য ঘোষ তথাগত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুশল চক্রবর্তী।
|
প্রাগৈতিহাসিক |
দুরূহ কাজেই তাঁদের আগ্রহ, তাই গোত্রহীন-এর (দমদম) সাম্প্রতিক প্রযোজনার বিষয় ‘প্রাগৈতিহাসিক’। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অবিস্মরণীয় কাহিনি অবলম্বনে প্রযোজনাটি প্রথম মঞ্চে আসছে ৬ নভেম্বর, সুজাতা সদনে। নাট্যরূপ এবং নির্দেশনায় যিনি, সেই সুপ্রতিম রায় উত্তেজিত, কারণ শুধু বিষয়ে নয়, আঙ্গিকেও অন্য পথে হাঁটছে এই মঞ্চায়ন। কয়েকটি ব্লক এবং ঝুলন্ত দড়ি দিয়েই মঞ্চসজ্জা। মুখ্য চরিত্র ভিখুর ভূমিকায় যিনি, সেই জয় মোদক পেশায় অটোচালক, পেশার দাবি সরিয়ে নেমেছেন মঞ্চে। ‘আমরা মূল গল্পের রুক্ষ্মতাটা বজায় রাখতে চেয়েছি, আর যৌনতা এসেছে কাহিনিরই দাবি মেনে’, জানালেন সুপ্রতিম। কাহিনিটি কিংবদন্তি। তার মঞ্চায়ন কী রকম হয়, দেখতে আগ্রহী বঙ্গীয় নাট্যমোদীরা।
|
আবার লিয়র |
রাজ-কাহিনি চলেছে। সাময়িক অদর্শনের পরে মঞ্চে ফিরছেন রাজা লিয়র। সুমন মুখোপাধ্যায়ের কুশলী নির্দেশনায় নাম-ভূমিকায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়, সঙ্গে নবীন ও অনতিপ্রবীণ একঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রীর আশ্চর্য উপস্থিতি বঙ্গীয় নাট্যামোদীদের স্মৃতিতে এখনও টাটকা। স্মৃতি-ই, কারণ কিছু অভিনয়ের পরেই নাটকটি বন্ধ হয়ে যায়। পুনরাগমন এই সপ্তাহে, রবীন্দ্র সদনে। শনি এবং রবিবার। নট-নির্দেশক উভয়েই খুশি, মহানগরও সেই আনন্দের শরিক। স্থির হয়েছে মাসে দু’টি অভিনয় হবে। মিনার্ভা-য় নয়, রবীন্দ্র সদন, গিরিশ এবং মধুসূদন, এই তিনটি সরকারি প্রেক্ষাগৃহে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চলবে অভিনয়।
|
পাগলা ফাইল |
পঁচিশ বছর আগে, অক্টোবরেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। কিন্তু গানের ইতিহাস জানে, মৃত্যু নেই সেই জীবনমুখর কণ্ঠের। ও পি নাইয়ার তাঁর সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘এ নটি অ্যাক্টর উইথ এ রেয়ার কোয়ালিটি অব মাল্টিপল এক্সপ্রেশনস’। খেমচাঁদ প্রকাশ প্রকাশিত করেছিলেন সেই আশ্চর্য প্রতিভাটিকে। এখনও তিনি হিন্দি গানে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। ‘জিদ্দি’ ছবিতে দেব আনন্দের লিপে প্রকাশিত হল সেই নতুন কণ্ঠ, কিশোরকুমার। হিন্দি সিনেমার গানে মুকেশ তখন মধ্যগগনে, আর কিছু দিন পরেই উঠে আসবেন তালাত মেহমুদ। সেই সময় এক অন্য মেজাজের সরল আবেদনময় কণ্ঠ নিয়ে হাজির হলেন কিশোরকুমার। তার পরে প্রায় চার দশক এবং এখনও তাঁর গান নিয়ে বহু আলোচনা। কিন্তু তার চেয়েও বেশি তাঁর সৃষ্টিমুখর পাগলামি নিয়ে। তাঁর জীবন আর জীবন-ঘেরা ছেলেমানুষি নিয়েও নানা গল্প হলেও সত্যি চালু আছে। সেই জীবনময় কিশোরকুমার এ বার ‘লাইভ’। তাঁর লাইভ অনুষ্ঠান থেকে বাংলা গানের একটি অ্যালবাম প্রকাশ করেছে পেরেনিয়াল রেকর্ডস। পাশাপাশি জীবন্ত হয়ে উঠেছেন সেই ‘নটি অ্যাক্টর’, অতনু চক্রবর্তীর কলমে। প্রতিভাস থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বই কিশোরকুমার: পাগলা ফাইল। বই কিনলে অ্যালবাম ফ্রি, এও জবরখবর। |
|
|
|
প্রগতিবাদী |
নবান্ন নাটকের সাদাকালো ছবিতে আজও অম্লান তিনি। দীর্ঘদেহী মানুষটি বছর পনেরো আগেও ছিলেন কর্মোদ্যোগী। ১৯৯৭-এ প্রয়াণের পর জন্মশতবর্ষে তাঁর নানা স্মৃতির সেতুবন্ধন। সুধী প্রধান ছিলেন বাংলার সাংস্কৃতিক চেতনার বড় মাপের প্রতিনিধি। পোশাকি নাম সুধীরঞ্জন প্রধান। জীবিকার বৈচিত্রের সঙ্গে গণনাট্য সংঘের সংগঠক, ফ্যাসিবাদ-বিরোধী আন্দোলনেও সোচ্চার ছিলেন তিনি। গ্রামগঞ্জে ঘুরেছেন লোকশিল্পীদের কল্যাণকামী হিসেবে। জন্ম উত্তর ২৪ পরগনার সগুনা গ্রামে। ডাক্তারিও পড়েছেন কিছু দিন। পেশাদার থিয়েটারের মালিক মনোমোহন পাঁড়ে ছিলেন তাঁর বাবার মামা। কিশোর বয়সেই প্রয়াত হন মা রতনমণি দেবী ও বাবা প্রকাশচন্দ্র। এর পর গণ-আন্দোলনের সঙ্গে সংযোগ গড়ে ওঠে, এমনকি জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে সুভাষচন্দ্র বসুর সাহায্যকারীও নিযুক্ত হন। টেগার্টকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হতে হয়। পরে মুজফ্ফর আহমেদের ব্যক্তিগত সহায়িকা শান্তি রায়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। কয়েকজন লোককবি, সংস্কৃতির প্রগতি, নবান্ন: প্রযোজনা ও প্রভাব, বঙ্গসংস্কৃতি সুভাষচন্দ্র ও তেভাগা সংগ্রাম ইত্যাদি তাঁর লেখা বই। তাঁর সম্পাদনায় তিন খণ্ডে মার্ক্সসিস্ট কালচারাল মুভমেন্ট ইন ইন্ডিয়া এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল। সাম্মানিক ডিলিট ছাড়াও পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার। জীবনের শেষ দু’দশক লোকসংস্কৃতি পুনরুজ্জীবনের প্রয়াসে উদ্যোগী হন। রাজ্য সরকারের লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের আজীবন সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে কলকাতার ছিটকালিকাপুরে প্রতিষ্ঠিত ‘লোকগ্রাম’ ছিল তাঁর স্বপ্ন-প্রকল্প। জন্মশতবর্ষের সময়কালেই সেটির বাস্তবায়ন ঘটেছে। লোকগ্রাম সংলগ্ন সংগ্রহালয়টির নামকরণ করা হয়েছে তাঁরই স্মৃতিতে। |
|
|
|
|
|
|