সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুর কেন্দ্রে সরকারি ভবনের গেটে বিস্ফোরণ ঘটাল আল-শবাব নামে আল কায়দা ঘনিষ্ঠ এক জঙ্গি গোষ্ঠী। আত্মঘাতী ওই বিস্ফোরণে কম পক্ষে ৭০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতের সংখ্যা পঞ্চাশের কাছাকাছি। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই সরকারি কর্মচারী এবং ওই সরকারি ভবনে পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্র।
যে সরকারি ভবনের সামনে আজকের বিস্ফোরণটি ঘটেছে, সেখানে সোমালিয়ার শিক্ষা মন্ত্রক ছাড়াও আরও তিনটি মন্ত্রকের দফতর আছে। সরকারি ভবন থাকায় অঞ্চলটিতে নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকে সর্বক্ষণ। ভবনের সামনে নিরাপত্তারক্ষীদের যে চেকপোস্ট রয়েছে সামনে একটি ট্রাকে বিস্ফোরণটি ঘটে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ট্রাকটিতে বিস্ফোরক ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে পেট্রোল মজুত করা ছিল। ফলে বিস্ফোরণের পর পরই ওই অঞ্চলে আগুন লেগে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ায় উদ্ধারকাজেও সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রকের ভবনটিতে আজ বিদেশে পড়তে যাওয়ার স্কলারশিপের জন্য একটি পরীক্ষা চলছিল। ফলে বিস্ফোরণের মুহূর্তে ঠিক কত জন ওই এলাকায় উপস্থিত ছিল তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ফলে নিহতের সংখ্যাও শেষ পর্যন্ত বেড়ে কত হবে তা নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন।
বিস্ফোরণের কিছু ক্ষণের মধ্যেই নিজেদের ওয়েবসাইটে ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আল-শবাব গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠী সোমালিয়ার গোঁড়া ইসলামিকরণের পক্ষে। আফ্রিকান ইউনিয়নের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সাহায্যে সম্প্রতি সোমালিয়ার উদারনৈতিক সরকার ওই গোষ্ঠীকে কিছুটা পিছু হটাতে পারলেও, এখনও তারা সোমালিয়ার দক্ষিণ ও মধ্য অংশের অনেক এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। সোমালিয়ার সরকারি বাহিনী ও শান্তিরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াই প্রতিদিনের ঘটনা। কিছু দিন আগেই সোমালিয়ার বর্তমান সরকার এক বছরের একটি রাজনৈতিক পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ওই পরিকল্পনা অনুসারে আগামী বছরের অগস্টের মধ্যে পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার কথা বর্তমান সরকারের। সেই প্রচেষ্টাকে ধাক্কা দিতেই আজকের এই বিস্ফোরণ ঘটানো হল মনে করা হচ্ছে। এর আগেও সোমালিয়া ও প্রতিবেশী একাধিক দেশে নাশকতামূলক কাজ করার অভিযোগ রয়েছে আল-শবাব গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। |